রাজশাহী বাঘায় পাল্টাপাল্টি কর্মসূচী কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুগ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় বোমা বিস্ফোরণও করা হয়। এতে পৌর মেয়রসহ উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।
শনিবার (২২ জুন) বেলা ১১টার দিকে বাঘা উপজেলা পরিষদের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন—বাঘা পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আক্কাছ আলী, বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবলু, আড়ানি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শফিউর রহমান শফি। এদের মধ্যে আশরাফুল ইসলাম বাবলুসহ দুজনকে রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের তাৎক্ষণিক নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার সকালে সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলমের গ্রুপের নেতাকর্মীরা মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে। বাঘা পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আক্কাছ আলীর অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির প্রতিবাদে এ মানববন্ধনের ডাক দেন তারা। উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটকে আয়োজিত মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন সদ্য সমাপ্ত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ১০৬ ভোটে পরাজিত রোকনুজ্জামান রিন্টু ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবলু। উপজেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
অন্যদিকে, সচেতন নাগরিকবৃন্দের ব্যানারে বাঘা সাব রেজিস্টার অফিসের দলিক লেখক সমিতির নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ডাক দেয় উপজেলা চেয়ারম্যান লায়েভ উদ্দিন লাভলু সমর্থিত স্থানীয় আওয়ামী লীগের আরেক গ্রুপ। মেয়র আক্কাছ আলীর নেতৃত্বে পৌরসভার সামনে থেকে এ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি অপর গ্রুপের মানববন্ধন অতিক্রমের সময় উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
তবে এ সংঘর্ষ নিয়ে পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ করেছেন উভয়পক্ষের নেতাকর্মীরা। উপজেলা চেয়ারম্যান লাভলু গ্রুপের সমর্থকদের দাবি, মানববন্ধন থেকে তাদের বিক্ষোভ মিছিলে হামলা করা হয়েছে। আর এমপি শাহরিয়ার গ্রুপের সমর্থকরা দাবি করেছেন, মিছিল নিয়ে এসে তাদের মানববন্ধনে হামলা করা হয়েছে।
রোকনুজ্জামান রিন্টু বলেন, পৌরসভার মেয়র আক্কাছ আলীর নেতৃত্বে মিছিল নিয়ে এসে তাদের শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে হামলা চালানো হয়েছে। এতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবলুসহ তাদের পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে বাবলুসহ দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আর মেয়র আক্কাছ আলী বলেন, তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে মানববন্ধন থেকে হামলা করা হয়েছে। এতে আমিসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের বাঘা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা নেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বাঘা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, দুটি কর্মসূচিতে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য ও শ্লোগান দেয়ার ফলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এ সময় পুলিশ লাঠিচার্জ ও টিয়ার সেল ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সংঘর্ষের ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।