ঈমান যাদের আছে, তাদের মুমিন বলে। মুমিনের পরিচয় বর্ণনা করে মহান আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘মুমিন তো তারাই, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করেছে। অতঃপর তাতে কোনো ধরনের সন্দেহ পোষণ করেনি…।’ (সুরা হুজরাত: ১৫)
আবার আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের ওপর বিশ্বাসী সবার ঈমান সমান নয়। কেউ পূর্ণ ঈমানদার বা প্রকৃত ঈমানদার আর কারো ঈমান অপরিপূর্ণ। কিছু স্বভাব ও আচরণের কারণে মানুষ প্রকৃত ঈমানদার হতে পারে না। নবীজির হাদিসে এমন কিছু স্বভাব ও আচরণের কথা বর্ণিত হয়েছে। প্রকৃত ঈমানদার হতে বাধা এমন ৬টি স্বভাব এখানে হাদিসের আলোকে তুলে ধরা হলো।
১. হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (স.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ ততক্ষণ প্রকৃত মুমিন হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত সে নিজের জন্য যা পছন্দ করে তার ভাইয়ের জন্য তাই পছন্দ না করে।’ (বুখারি: ১৩)
২. হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘সে তো মুমিন নয়, যে নিজে তৃপ্তিভরে আহার করে, আর তার প্রতিবেশী থাকে অনাহারে, অর্ধাহারে।’ (আল আদাবুল মুফরাদ: ১১২)
৩. হজরত আনাস (রা.) বলেন, আল্লাহর নবী (স.) খুতবা দিলেই বলতেন ‘তার ঈমান নেই, যার আমানতদারি নেই আর যার প্রতিশ্রুতিশীলতা নেই তার দ্বীনদারি নেই।’ (মুসনাদে আহমদ: ১২৩৮৩)
৪. হজরত আবু শুরাইহ খুজায়ি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘আল্লাহর কসম, সে মুমিন নয়, আল্লাহর কসম সে মুমিন নয়, আল্লাহর কসম, সে মুমিন নয়।’ জানতে চাওয়া হলো- ‘কে ইয়া রাসুলুল্লাহ!’ তিনি বললেন, ‘যার অনিষ্ট ও উৎপীড়ন থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ থাকে না।’ (বুখারি: ৬০১৬)
৫. হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘মুমিন কখনো দোষারোপকারী ও নিন্দাকারী হতে পারে না, অভিসম্পাতকারী হতে পারে না, অশ্লীল কাজ করে না এবং কটুভাষীও হয় না।’ (তিরমিজি: ১৯৭৭)
৬. হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘সেই প্রভুর কসম, যার হাতে আমার জীবন, তোমরা কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ মুমিন নও, যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তার নিকটে তার পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততির চেয়ে অধিক প্রিয় না হই।’ (বুখারি: ১৪)
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে উল্লেখিত ত্রুটি থেকে হেফাজত করুন। প্রকৃত ঈমান হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।