আগামী ২৯ শে এপ্রিল বাংলাদেশের খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছাতে পারে বলে জানিয়েছেন কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল। তিনি বলেন, ‘আগামী রবি, সোম ও মঙ্গলবার ঢাকা শহরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত চলমান এই তাপপ্রবাহ বিরাজ করবে। তারপর দুই দিনে এ তাপপ্রবাহ কমে গিয়ে ৩ মে থেকে দেশে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, একটি শক্তিশালী পশ্চিমা লঘু চাপের প্রভাবে মে মাসের ৩ তারিখ থেকে ৮ তারিখ পর্যন্ত বাংলাদেশের বেশিরভাগ জেলার ওপর দিয়ে শক্তিশালী কালবৈশাখী ঝড়, তীব্র বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টি হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে লঘুচাপটি ইরানের উপর অবস্থান করছে। আগামী ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত তাপপ্রবাহ ( ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামবে না) বিরাজ করবে। ২৯ তারিখের পর থেকে তাপমাত্রা কমে ৩ মে পশ্চিমা লঘুচাপটি বাংলাদেশ প্রবেশ করবে ভারত হয়ে।
মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, পশ্চিমা লঘু চাপের প্রভাবে মে মাসের ৩ তারিখ থেকে ৮ তারিখ পর্যন্ত সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী জেলাগুলো, মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জি ও আসাম রাজ্যের করিমগঞ্জ জেলার ওপর দিয়ে ৩০০ থেকে ৪০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। ফলে মে মাসের ৫ তারিখের পর থেকে পাহাড়ি ঢলে সিলেট বিভাগ ও কিশোরগঞ্জের জেলার হাওর এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, একই সময়ে চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর ওপর দিয়ে ১০০- ১৫০ মিলিমিটার এবং বরিশাল, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের জেলাগুলোর উপরে ৫০ -১০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে। মে মাসের ৩ তারিখ থেকে ৮ তারিখ পর্যন্ত খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের জেলাগুলোতে সবচেয়ে কম পরিমাণে বৃষ্টি হবে।
এদিকে, বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর নতুন করে তাপ প্রবাহের সতর্কবার্তা বা ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি করে বলেছে, দেশের উপর দিয়ে চলমান তাপ প্রবাহ বৃহস্পতিবার থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে।
বাংলাদেশে চলতি মৌসুমে গত কয়েকদিন ধরে টানা তীব্র গরমের মধ্যে আজ চতুর্থ দফায় হিট অ্যালার্ট জারি করা হলো।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বর্তমানে প্রায় ৪৫টির মতো জেলার ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সবচেয়ে বেশী তাপমাত্রায় রেকর্ড হয়েছে মোংলায়, ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, রেকর্ড তাপমাত্রার কারণে গত ছয় দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে হিটস্ট্রোকে অন্তত ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ বলেছেন, ২৯ তারিখ থেকেই সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। তবে আগামী মাসের শুরুতে মোটামুটি ভালো বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।