মাঝ দরিয়ায় জাহাজ ডুবলে বাঁচার সম্ভাবনা থাকে ক্ষীণ। মৃত্যু অনিবার্য জেনেও নাবিকরা যতটুকু সম্ভব সাঁতরে বাঁচার চেষ্টা করেন। সিলেট টেস্টে বাংলাদেশ দলের ওই দশা হয়েছে। শ্রীলঙ্কার রান সমুদ্রে হাবুডুবু খেয়েছে। খানিকটা সাঁতরে মুমিনুল হক ৮৭ রানের ইনিংস খেলেছেন। তাতে বাঁচেনি দল। চতুর্থ দিন দ্বিতীয় সেশনেই হেরেছে ৩২৮ রানের বিশাল ব্যবধানে।
বাংলাদেশের উইকেটে টস জিতলে ব্যাটিং অনিবার্য সিদ্ধান্ত। সিলেটে বৃষ্টি আর উইকেটে ঘাস দেখে ওই সিদ্ধান্ত বদলান নাজমুল শান্ত। বোলিং নেন তিনি। উইকেটের সুবিধা শুরুতে ঘরেও তোলে তার দল। ৫৭ রানে তুলে নেয় লঙ্কানদের ৫ উইকেট। ঠিক পরের বলেই শূন্য রানে জীবন পান কামিন্দু মেন্ডিস। ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার সঙ্গে ওই কামিন্দু ২০২ রানের জুটি গড়েন। কামিন্দু ও ধনাঞ্জয়া ১০২ রান করে যোগ করেন। শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংসে ২৮০ রানে অলআউট হয়।
শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংসের রানটা তবু নাগালে ছিল। কিন্তু প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ম্যাচ শ্রীলঙ্কার হাতে তুলে দেয় বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ১৮৮ রানে অলআউট হয় স্বাগতিকরা। শ্রীলঙ্কা পায় ৯২ রানের লিড। দলের হয়ে নাইটওয়াচম্যান তাইজুল ইসলাম সর্বোচ্চ ৪৭ রান করেন। লিটন দাস ২৫ ও খালেদ আহমেদ ২২ রানের ইনিংস খেলেন।
দ্বিতীয় ইনিংসেও লঙ্কানদের চেপে ধরে বাংলাদেশ। ১২৬ রানে তাদের ৬ উইকেট তুলে নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করে বাংলাদেশ। সংবাদ সম্মেলনে ব্যাটিং কোচ ডেভিড হেম্প লিডসহ ২৫০ রানের মধ্যে শ্রীলঙ্কাকে বেধে ফেলার আশার কথা বলেন। কিন্তু ওই ইনিংসেও কামিন্দু ও ধনাঞ্জয়ার ব্যাটিংয়ের জবাব পায়নি বাংলাদেশ। ধনাঞ্জয়ার ক্যাচ তালুবন্দি করেও লিটন দাস আউটের আবেদন করেননি। সুযোগ নিয়ে তিনি ১০৮ রান করেন। আর কামিন্দু খেলেন ১৬৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। দুই ইনিংসেই দুই ব্যাটার সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েন।
দ্বিতীয় ইনিংসে শ্রীলঙ্কা ৪১৮ রান তুলে অলআউট হয়। প্রথম ইনিংসের ৯২ রানের লিড যোগ করে জয়ের জন্য বাংলাদেশকে ৫১১ রানের অসম্ভব লক্ষ্য দেয়। রানের ওই অতল সমুদ্রে পড়ে শুরুতেই দিগ্বিদিক হয়ে ৩৭ রানে ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ওপেনার মাহমুদুল জয়, মিডলের শাহাদাত হোসেন ও লিটন দাস শূন্য করে ফিরে যান। জাকির ১৯ ও শান্ত ৬ রান করেন। সেখান থেকে কতটুকুই আর যাওয়া যায়! বাংলাদেশ যেতে পেরেছে ১৮২ রান পর্যন্ত!
সিলেট টেস্টে বাংলাদেশ দলের হয়ে প্রথম ইনিংসে তিনটি করে উইকেট নেন খালেদ আহমেদ ও নাহিদ রানা। দ্বিতীয় ইনিংসে মিরাজ চার উইকেট নেন। রানা ও তাইজুল নেন দুটি করে উইকেট। শ্রীলঙ্কার হয়ে প্রথম ইনিংসে চার উইকেট নেওয়া বিশ্ব ফার্নান্দো দ্বিতীয় ইনিংসে তিন উইকেট নিয়েছেন। কাসুন রাজিথা দ্বিতীয় ইনিংসে ফাইফারসহ আট উইকেট দখল করেছেন।