‘নির্যাতনে নয়, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে জেসমিনের মৃত্য‘

0
131

খবর ৭১: র‍্যাব হেফাজতে নির্যাতনে নয়, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ফলে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার মরদেহের ময়নাতদন্ত টিমের প্রধান ডা. কফিল উদ্দিন।

সোমবার (৩ এপ্রিল) সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের এ অধ্যাপক বিষয়টি জানান।

এর আগে রোববার বিকেলে জেসমিনের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন ডা. কফিল।

তিনি বলেন, আটকের পর মানসিক চাপ থেকেই তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়। আর এই কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। তবে আমরা তার শরীরে দুটো জখম পেয়েছি। একটা কপালের বাম পাশে। যেটা ছোট। এটার সাইজ ২ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার। এক ইঞ্চিরও কম। এটা ঘসা লাগলে যেমন হয় সেরকম। আর একটা ছোট জখম পেয়েছি ডান হাতের কনুইয়ের ভেতর দিকে। এখানে একটা ফোলা জখম আছে। যেটার সাইজ ২ সেন্টিমিটার। আমার বলেছি, ক্যানুলা দিতে ভেন (নালী) খুঁজতে গিয়ে এটা হয়েছে।

ডা. কফিল উদ্দিন বলেন, আমরা চূড়ান্ত মতামতে উল্লেখ করেছি, যে জখমগুলো আছে সেগুলো মৃত্যুর জন্য যথেষ্ট নয়। রোগীর মৃত্যু হয়েছে শকে। আর শক হয়েছে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে।

রামেক ফরেনসিক বিভাগের প্রধান এই চিকিৎসক বলেন, মানসিক চাপ যদি কেউ কন্ট্রোল করতে না পারে তবে চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে রক্তনালী ফেটে যায়। নালী ফেটে গিয়েই এই রক্তক্ষরণটা হয়েছে। এ কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।

এর আগে র‍্যাব-৫ এর জয়পুরহাট ক্যাম্পের একটি দল গত ২২ মার্চ সকালে জেসমিনকে আটক করে। অফিসে যাওয়ার পথে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। ওইদিন দুপুর ১২টার পর পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন জেসমিন নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পরে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ২৪ মার্চ সকালে তিনি মারা যান।

জেসমিনের মৃত্যুর পরদিন ২৫ মার্চ রামেক মর্গে মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। ওইদিন বিকেলে নওগাঁ সরকারি কবরস্থানে র‍্যাবের উপস্থিতিতেই মরদেহ দাফন করেন স্বজনরা।

সরকারের যুগ্ম-সচিব বর্তমানে স্থানীয় সরকারের রাজশাহী বিভাগের পরিচালক মো. এনামুল হকের মৌখিক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে নিয়েই র‍্যাব একটি অভিযান চালায়। এনামুল হকের অভিযোগ, তার ফেসবুক আইডি হ্যাক করে জেসমিন ও আল-আমিন নামে এক ব্যক্তি চাকরি দেওয়ার প্রলোভনে বিভিন্নজনের সঙ্গে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন।

এমন অভিযোগের ভিত্তিতে জেসমিনকে আটক করে র‌্যাব। আর র‍্যাব হেফাজতে এ নারীর অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটে। এরপর এ ঘটনা উচ্চ আদালতের নজরে আসে। তার মৃত্যুর কারণ জানতে আদালতে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here