মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুর :
কোন আলোচনা নয়, যেখানে ভোট দেওয়ার স্বাধীনতা নাই,সেখানে ভোটে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠেনা। তত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবেনা বিএনপি। দেশে আওয়ামীলীগের নানা অন্যায় অত্যাচারে নিষ্পেষিত সর্বস্তরের মানুষ। কোথাও শান্তি নেই। প্রশাসন থেকে শুরু করে সব জায়গায় আওয়ামী আতঙ্ক। কথাগুলো বলেছেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সহ মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দা আশিফা আশরাফী পাপিয়া। তিনি আরও বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে এখন মূর্তিমান আতঙ্কের নাম আওয়ামীলীগ। কারণ ওই দলটির প্রতিহিংসা পরায়ণ কর্মকাণ্ডের জন্য দেশের পনের কোটি মানুষ আজ দিশেহারা।
নীলফামারীর সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপি’র উদ্যোগে কেন্দ্রীয় ঘোষণা অনুযায়ী অবস্থান কর্মসূচী পালনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তিনি। শনিবার (১ এপ্রিল) বেলা ২ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত সৈয়দপুর শহরের শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এই কর্মসূচী পালন করা হয়।
এসময় সাবেক এমপি পাপিয়া আরও বলেন, ভোট চুরির মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে পূঁজি করে ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে মানবাধিকার কেড়ে নিয়ে একদলীয় বাকশালী শাসন কায়েম করেছে। সংবিধানের দোহাই দিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রের সকল ব্যবস্থাকে কুক্ষিগত ও লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে দেশ ও জনবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে। একের পর এক অন্যায় অবিচার অব্যাহত রেখে মানুষকে কোণঠাসা করে রেখেছে। তাদের এসব কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করলেই জনগনের চালানো হচ্ছে হামলা মামলা।
সাংবাদিকরাও এখন চরম নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। তিনি বলেন, তবে জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকেছে। তাই তারা মুখ খুলতে শুরু করেছে। এজন্য প্রথম আলোর মত সরকারের তোষামোদকারী পত্রিকায়ও দ্রব্য মূল্য নিয়ে সত্য সংবাদ প্রকাশ করতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনার নীতি হলো তার সকল কাজের সমর্থন করলে দেশপ্রেমিক আর বিরোধিতা করলে দেশদ্রোহী। তাই ওই সাংবাদিককে কালা কানুনে গ্রেফতার করেছে।
সরকার প্রধান শেখ হাসিনার প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে পাপিয়া আরও বলেন সাহস থাকলে নির্দলীয় তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। তত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বিএনপি কোন নির্বাচনে যাবেনা, করতেও দেয়া হবেনা। রমজানের পরই চুড়ান্ত যুদ্ধ শুরু হবে। তখন আওয়ামীলীগ নেতারা পালানোর পথ খুঁজে পাবেনা। যার যা গোছানো দরকার গুছিয়ে নেন।
তিনঘন্টা ব্যাপী অনুষ্ঠিত কর্মসূচীতে সভাপতিত্ব করেন সৈয়দপুর জেলা বিএনপি’র সভাপতি অধ্যক্ষ আলহাজ্ব আব্দুল গফুর সরকার। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পৌর কাউন্সিলর শাহিন আক্তার শাহিনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপি নেতা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট এস এম ওবায়দুর রহমান, প্রভাষক শওকত হায়াত শাহ, সাবেক প্যানেল মেয়র জিয়াউল হক, শামসুল আলম, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন প্রামানিক,এম এ পারভেজ লিটন ও মনোয়ার হোসেন, সৈয়দপুর উপজেলা বিএনপি সভাপতি রেজাউল করিম লোকমান, সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান কার্জন,পৌর বিএনপি সভাপতি শেখ বাবলু, পৌর বিএনপি সভাপতি রশিদুল হক সরকার, কিশোরগঞ্জ উপজেলা সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম ডালিম, মহিলা দলনেত্রী রওনক জাহান রেনু, জেলা যুবদলের সাধারন সম্পাদক তারিক আজিজ, জেলা ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বাবু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি পৌর কাউন্সিলর এরশাদ হোসেন পাপ্পু প্রমুখ।
গ্যাস, বিদ্যুৎ, চাল, ডাল, আটাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ও সার, ডিজেলসহ কৃষি উপকরণের লাগামহীনy মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং গণতন্ত্র পুনঃরুদ্ধার, ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগ, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও নেতাকর্মী মুক্তিসহ ১০ দফা দাবী আদায়ে এই অবস্থান কর্মসূচী পালন করা হয়।