রাব্বুল ইসলাম, ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি:
গত প্রায় ৫-৬ মাস পূর্বে ভুক্তভোগী মোঃ নাসির উদ্দিনের সাথে প্রতারক মাজেদুল ইসলাম (জিনের বাদশা) এর পরিচয় হয়। জিনের বাদশা মাজেদুল ভুক্তভোগী নাসিরের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করে তার বাড়িতে যাতায়াত শুরু করে। একপর্যায়ে নাসিরের বাড়ির পুকুরে একটি পিতলের কলসির ভিতরে কোটি টাকার মূল্যের সম্পদ আছে বলে জিনের বাদশা ভুক্তভোগী নাসির ও তার স্ত্রীকে জানায় এবং জিনের মাধ্যমে উক্ত সম্পদ তুলে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিনিময়ে ৭ লক্ষ টাকা দাবি করে। ভুক্তভোগী লোভে পড়েও জিনের বাদশার কথায় বিশ্বাস করে টাকার বিনিময়ে কলসটি উদ্ধার করাতে রাজি হয়। গত ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখ রাতে প্রতারক মাজেদুল তার সহযোগীদের নিয়ে অভিনব কৌশলে নাসিরের পুকুর থেকে একটি পিতলের কলস তুলে তার স্ত্রীর হাতে দেয় এবং ৪১ দিনের মধ্যে কলসের মুখ খোলা যাবেনা বলে জানায় এবং এর মধ্যে কলসের মুখ খুললে তাদের সন্তান মারা যাওয়াসহ বিভিন্ন ভয়ভীতি প্রদান করে। পরবর্তীতে প্রতারক চক্র ভুক্তভোগী নাসিরের নিকট হতে পর্যায়ক্রমে ৭,০০০০০/- (সাত লক্ষ) টাকা হাতিয়ে নেয়। ভুক্তভোগী ৪১ দিন পরে কলসির মুখ খুলে দেখে ভিতরে শুধু পাথর আছে। ভুক্তভোগী প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে প্রতারকচক্রের সাথে যোগাযোগ করে এবং টাকা ফেরত চাইলে প্রতারক চক্র তাকে বিভিন্ন প্রকার হুমকি দেয়। একপর্যায়ে প্রতারক চক্র যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়ে আত্নগোপনে চলে যায়। বিষয়টি বিভিন্ন মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয় এবং জনমনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। এ বিষয়ে ভোক্তভোগী নাসির বাদী হয়ে প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে ঝিনাইদহ জেলার সদর থানায় একটি প্রতারণা মামলা দায়ের করেন। মামলা হওয়ার পর থেকেই র্যাব-৬ ঝিনাইদহ ক্যাম্পের একটি আভিযানিক
দল জিনের বাদশা খ্যাত প্রতারক চক্র গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করে এবং অভিযান অব্যাহত রাখে।
অদ্য ১৪ মার্চ ২০২৩ তারিখ র্যাব-৬, ঝিনাইদহ ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল গোপন তথ্যের মাধ্যমে জানতে পারে যে, ঝিনাইদহ জেলার সদর থানা এলাকায় জিনের বাদশা খ্যাত মাজেদুল অবস্থান করছে। প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্দেশ্যে আভিযানিক দলটি একই তারিখ রাতে ঝিনাইদহ জেলার সদর থানাধীন আরাপপুর এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে জিনের বাদশা খ্যাত প্রতারনা চক্রের মূলহোতা-১। মোঃ মাজেদুল ইসলাম (জিনের বাদশা) (৩২), থানা-ঝিনাইদহ সদর, জেলা-ঝিনাইদহকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উক্ত ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে। এই জিনের বাদশা চক্রটি বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জেলায় গভীর রাতে অসহায় সহজ সরল দরিদ্র লোকদের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জিনের বাদশা পরিচয় দিয়ে প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার হাতিয়ে নিচ্ছে। উক্ত প্রতারণা মামলার বাকী আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাবের অভিযান অব্যাহত আছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে ঝিনাইদহ জেলার সদর থানায় হস্তান্তর করার কাজ প্রক্রিয়াধীন।