খবর ৭১: চকবাজারে আগুনের ঘটনায় ছয়জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের সবাই আগুনের সূত্রপাত যেখান থেকে হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে সেই বরিশাল হোটেলের কর্মী বলে জানা গেছে।
সোমবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা সদরের জোন-১ এর উপ-সহকারী পরিচালক মো. বজলুর রশিদ বলেন, ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনের শরীর এমনভাবে পুড়ে গেছে যে তাদের চেহারা দেখে চেনার উপায় নেই। আগুনে পুড়ে ওই পাঁচ মরদেহের হাড় বেড়িয়ে গেছে।
তিনি বলেন, আরেকজনের চেহারা দেখলে কিছুটা বুঝা যায়। মরদেহগুলো দেখে প্রাথমিকভাবে আমাদের ধারণা, তারা ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন। অগ্নিকাণ্ডের শুরুর দিকে হয়তো তারা মারা গেছেন।
মরদেহগুলো মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভবনের ভেতরে এখনো অভিযান চলছে।
এদিকে নিহত ছয়জনের মধ্যে চারজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- মো. শরিফ (১৫), মো. বিল্লাল (৩৫), মো. স্বপন (২২), মো. ওসমান (২৫)। অপর দুজনের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে ডিএমপির লালবাগ বিভাগের ডিসি মো. জাফর হোসেন বলেন, উদ্ধার মরদেহগুলো মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষা করে পরিচয় শনাক্ত হওয়ার পর মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এর আগে, হোটেলকর্মী মো. ওসমান ও মো. বিল্লাল নামে দুজন নিখোঁজের কথা জানিয়েছিলেন তাদের স্বজনরা। এখন তাদের লাশ পাওয়া গেল।
নিহত ওসামানের খালাতো ভাই মো. রুবেল জানান, যে ভবনে আগুন লেগেছে সেটির নিচ তলায় বরিশাল হোটেলে কাজ করতেন ওসমান। রাতে কাজ করে ওই ভবনের দোতলায় ঘুমিয়ে ছিলেন তিনি।
নিহত মো. বিল্লালের (৩৩) শ্যালক আব্দুল্লাহ জানিয়েছেন তার দুলাভাইও বরিশাল হোটেলে কাজ করতেন। রাতে নাইট ডিউটি শেষে ভবনের দ্বিতীয় তলায় ঘুমাচ্ছিলেন তিনি। আগুন লাগার পর থেকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে লাগা আগুন লাগে। প্রায় ২ ঘণ্টা পর দুপুর ২টা ২০ মিনিটে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট। আগুন লাগার ৯ মিনিটের মধ্যে ফায়ার সার্ভিস কাজ শুরু করে। প্রথমে ৬টি ও পরবর্তীতে আরও ৪টি ইউনিট যোগ দেয়।
বরিশাল হোটেলের সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে দাবি করেছেন কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী। তারা বলছেন, সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর আগুন শুরুতে বিদ্যুতের ট্রান্সফরমারে যায়। সেখানে আরেক দফা বিস্ফোরণের পর প্লাস্টিকের খেলনা তৈরির কারখানায় আগুন লাগে।