খবর৭১ঃ ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ফ্যামিলি কার্ড যারা পাননি তাদের ৮০.৪ শতাংশই অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে বাদ পড়েছেন। তাদের মধ্যে ৩৪.৪ শতাংশ নারী ও ৩১.৪ শতাংশ পুরুষ। এছাড়া যারা এরই মধ্যে দুই হাজার ৫০০ টাকা নগদ সহায়তা পেয়েছিলেন তাদের ৩৯.৫ শতাংশ ফ্যামিলি কার্ড পাননি।
বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) বেলা ১১টায় প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন সংস্থার গবেষক মোহাম্মদ নূরে আলম মিন্টু। এ সময় টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে ঢাকা ও বরিশালকে বাদ দিয়ে ৩৫টি জেলায় চালানো গবেষণার ভিত্তিতে। পাঁচ সদস্যের গবেষক দলসহ সংগঠনটির অন্য সদস্যরা এ গবেষণায় অংশ নেন।
প্রতিবেদন উপস্থাপনের সময় নূরে আলম মিন্টু বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, করোনাকালে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে নগদ অর্থসহায়তা দেওয়ার জন্য ৫০ লাখ পরিবারের একটি তালিকা করা হয়েছিল। প্রাথমিক তালিকায় পেনশনার, সরকারি চাকরিজীবী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নাম থাকায় তা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিলে যাচাই-বাছাই শেষে ৩৫ লাখ পরিবারকে নগদ সহায়তা দেওয়া হয়। পরে সড়ক পরিবহন, নৌ-পরিবহন শ্রমিক, নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আরও সাড়ে তিন লাখ মানুষকে নগদ সহায়তা দেয় সরকার।
রমজানে যে এক কোটি পরিবারকে ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে খাদ্যসহায়তা দেওয়ার কথা ছিল, তাদের মধ্যে নতুন সাড়ে ৩৮ লাখ পরিবারকে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে এ গবেষণার জরিপে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, জরিপে অংশগ্রহণকারী উত্তরদাতাদের মধ্যে যারা এরই মধ্যে দুই হাজার ৫০০ টাকা নগদ সহায়তা পেয়েছিলেন তাদের ৩৯.৫ শতাংশ ফ্যামিলি কার্ড পাননি।
যারা কার্ড পাননি তাদের ৮০.৪ শতাংশকে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে বাদ দেওয়া হয়েছে। ৫.৫ শতাংশ স্বেচ্ছায় কার্ড নেননি। জরিপে দেখা যায়, নারী উত্তরদাতাদের ৩৪.৪ শতাংশ ও পুরুষ উত্তরদাতাদের ৩১.৪ শতাংশ অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে ফ্যামিলি কার্ড এর তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন।
তিনি বলেন, জরিপে ফ্যামিলি কার্ড না পাওয়া উত্তরদাতাদের মতে কার্ড না পাওয়ার উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে স্বচ্ছতার ঘাটতি বা তথ্য প্রচারে ঘাটতি। নগদ সহায়তাপ্রাপ্ত সব উপকারভোগীকে যে এ কার্ড পাওয়ার কথা ছিল, এ বিষয়ে তাদের কোনো ধারণা ছিল না। এমনকি ফ্যামিলি কার্ড কার্যক্রম সম্পর্কেও তাদের কোনো ধারণা ছিল না। এছাড়া তালিকা থেকে বাদ পড়ার অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে- কারও সুপারিশ বা তদবির জোগাড় করতে না পারা, রাজনৈতিক বিবেচনায় স্বচ্ছল ব্যক্তিদের তালিকাভুক্তি, একই পরিবারে একাধিক কার্ড দেওয়া, ছবি পরিবর্তন করে তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের কার্ড অন্যদের দিয়ে দেওয়া, ঘুষ দিতে না পারা ইত্যাদি।