বিদ্যুৎ গ্যাস তেলের দাম বাড়ানোর ইঙ্গিত

0
400

খবর৭১ঃ
বিদ্যুৎ, গ্যাস ও জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া শেষ হয়ে এসেছে। চলতি বা আগামী মাসেই এই ঘোষণা হতে পারে। চলমান লোডশেডিং পরিস্থিতি থেকে উত্তরণও আগামী মাস থেকেই হবে বলে জানান তিনি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে ডিজেল, পেট্রল, অকটেন, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে ‘যৌক্তিক’ পর্যায়ে নিয়ে আসার সময় এসেছে।

শুক্রবার রাজধানীর বারিধারায় গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ ইঙ্গিত দেন।

গত সপ্তাহ থেকেই ডিজেলসহ অন্যান্য জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পরিকল্পনার কথা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মুখে শোনা যাচ্ছিল। বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ-জ্বালানি বিষয়ে এফবিসিসিআইয়ের আলোচনায় ‘প্রয়োজনে দাম বাড়িয়ে হলেও’ নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুৎ সরবরাহের জানান কয়েকজন ব্যবসায়ী।এক দিন পরেই বিষয়টি আরও স্পষ্ট হলো প্রতিমন্ত্রীর কথায়।

গত বছরের নভেম্বরে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়েছিল সরকার। চলতি বছরের গত ৫ জুন মাসের শুরুতে গ্যাসের দাম এক দফায় ২২ দশমিক ৭৮ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। আর বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়ানো হয়েছিল সর্বশেষ ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। তখন খুচরায়ও দাম বেড়েছিল।

এক প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘বিদ্যুতের প্রাইসের অ্যাডজাস্টমেন্টের ব্যাপারে আমরা অপেক্ষায় আছি। গ্যাসের ব্যাপারে আমরা আরেকটা অ্যাডজাস্টমেন্টে যেতে চাচ্ছি। তেলেও একটা অ্যাডজাস্টমেন্টে যেতে হবে।’

জ্বালানি তেলের প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম ঊর্ধমুখী, সেই জায়গায় আমাদের খুব চিন্তাভাবনা করতে হবে। এটার সরাসরি প্রভাব পড়ে জনগণের ওপর। ডিজেল, পেট্রল, অকটেন- এগুলো যেন একটা সহনীয় পর্যায়ে থাকে। দেশ ও দশের কথা চিন্তা করে আমরা একটা অ্যাডজাস্টমেন্টে যাব।’

এ সময় তিনি বিশ্ব বাজারের সঙ্গে মিল রেখে প্রয়োজন অনুযায়ী নিয়মিতভাবে জ্বালানির দাম সমন্বয় করার পক্ষে মত দিয়ে বলেন, ‘যদি বাড়তির দিকে থাকে, তবে বাড়তি, যদি কমতির দিকে থাকে তাহলে কমতির দিকে। এখন যেহেতু বাড়তির দিকে, তাই পার্শ্ববর্তী দেশ ও বিশ্বের অবস্থা বিবেচনায় একটা অ্যাডজাস্টমেন্ট হওয়া উচিত। যদি বিশ্ববাজারে দাম কমে আসে, আমরাও চেষ্টা করব সেই অনুযায়ী দাম কমাতে।’

প্রতিমন্ত্রীর কাছে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, কিছুদিন আগে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে? জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা যে দামটা বাড়িয়েছি সেটা গত বছরের ডিসেম্বরের পরিস্থিতি বিবেচনায়। সে কারণে আমি মনে করি, গ্যাসে আমাদের আরেকটা অ্যাডজাস্টমেন্ট হওয়া উচিত।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্ববাজারে তেলের দাম ৭০ ডলারের ওপরে উঠে গেলেই আমরা লোকসানের মধ্যে পড়ে যাই। ইতোমধ্যে বিপিসি নিজের থেকে ৮ হাজার কোটি টাকার মতো লোকসান দিয়েছে। তাই আমি মনে করি, বিশ্ব বাজারের সঙ্গে একটা অ্যাডজাস্টমেন্ট থাকা উচিত। না হলে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।’
নসরুল হামিদ বলেন, ‘উন্নত বিশ্বের সব দেশেই এভাবে সমন্বয় করতে হচ্ছে। আমরাই কেবল বসে আছি।… তেলের মার্কেটে এখন পুরোপুরি লস দেওয়া হচ্ছে। পাশের দেশে তেলের দাম বাড়ছে, সঙ্গে সঙ্গে অ্যাডজাস্ট করতেছে। পৃথিবীর অনেক দেশেই এমন হচ্ছে।’

ডিজেলসহ অন্যান্য জ্বালানি তেলের দাম বাড়ালে জনজীবনে যে প্রভাব পড়বে- তা নিয়েও সরকার চিন্তাভাবনা করছে বলেও জানান নসরুল হামিদ। তিনি কৃষি খাতে দাম অপরিবর্তিত রাখার ইঙ্গিত দেন।

গ্যাসের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গ্যাস আমদানির ক্ষেত্রে আমরা দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিতে যাব। যারা আমাদের কাছে প্রস্তাব করেছে, তাদের সঙ্গে আলোচনা হবে। যারা এখনো প্রস্তাব করেনি, তাদের সঙ্গেও আলোচনা হবে। বিশেষ করে কাতার এখনো প্রস্তাব পাঠায়নি। তাদের সঙ্গেও এ বিষয়ে আমাদের আলোচনা এবং চুক্তিতে যেতে হবে।এর বাইরে গ্যাস কূপ খননে বাপেক্সসহ বিদেশি কোম্পানিগুলোকে কাজে লাগাবো। এজন্য আমরা টেন্ডার করব।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here