জবি প্রতিনিধি: ‘জাগো তারুণ্য, রুখো জঙ্গীবাদ’ স্লোগানকে সামনে রেখে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) জঙ্গীবাদ বিরোধী সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার দুপুর ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারটি আয়োজন করেছে ‘সুচিন্তা’ ফাউন্ডেশন। ফাউন্ডেশনটির চেয়ারম্যান কর্তৃক কেন্দ্রীয় পর্যায়ে অনুমোদিত বছরব্যাপী কার্যক্রমের সুচিন্তার জঙ্গিবাদ বিরোধী সেমিনারটির আয়োজন করা হয়েছে।
এসময় বক্তারা জঙ্গীবাদ কি এবং কিভাবে তৈরি হয় তার ব্যাখা দিয়ে শিক্ষার্থীদের সচেতন করেন। সেমিনারটির সমন্বয়ক হিসেবে ছিলেন সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের ডিরেক্টর কানতারা খান। এছাড়াও সঞ্চালক হিসেবে ছিলেন ‘আজ সারাবেলা’র সম্পাদক জব্বার হোসেন।
সেমিনারে আলোচকগণ বর্তমান সরকারের জঙ্গিবাদ বিরোধী বিভিন্ন কার্যক্রমের দিক তুলে ধরেন। সেই সাথে শুধুমাত্র জঙ্গিদের শাস্তির আওতায় আনলেই জঙ্গিবাদ নির্মূল করা সম্ভব নয় বলে মতামত ব্যক্ত করেন। এর সাথে সাথে জঙ্গিবাদের উসকানিদাতা ও পৃষ্ঠপোষকদের শাস্তির আওতায় আনার জোড় দাবি জানান।
এসময় বাংলাদেশ ব্লু ইকোনমি ক্যাম্পেইন এর নির্বাহী পরিচালক প্রকৌলশী মাহবুবুর রহমান হেলাল বলেন, জঙ্গীবাদ বর্তমান সময়ে বৈশ্বিক সমস্যা ও সামাজিক ব্যাধি। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও জঙ্গীদের শিকার হয়েছে। বর্তমান সরকারের জিরো টলারেন্সের কারণে আমরা জঙ্গীবাদকে নির্মূল করতে পেরেছি। তরুণ সমাজ যদি জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে রুখে না দাঁড়ায় তাহলে সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করা সম্ভব না।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য এড. নাসরিন সিদ্দিকা লিনা বলেন, জঙ্গীরা ধর্মকে মিথ্যা ব্যাখা দিয়ে ধর্মভীরু মানুষদের দিয়ে হত্যা ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালায়। বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু, দেশপ্রেম এই তিনটি মূলমন্ত্র বা বীজ যদি ছাত্রদের মনে গেঁধে দেয়া যায় তাহলে এদেশে জঙ্গী তৈরি হবে না। জঙ্গীবাদ নির্মুলের প্রথম পদক্ষেপ পরিবার থেকেই নিতে হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন বলেন, জঙ্গীদের টার্গেট থাকে তরুণদের প্রতি তাই তরুণদের সচেতন থাকতে হবে। আর এই তরুণদের সচেতন করতে ভূমিকা রাখছে সুচিন্তা ফাউন্ডেশন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজী বলেন, আমরা দেখেছি ২০০১ সালের পরে বিএনপি সরকার এদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে এবং জঙ্গীবাদ মাথা চারা দিয়ে উঠেছে। কিন্তু আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর সেই জঙ্গীবাদ বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, জঙ্গিবাদ একটি নেতিবাচক মতাদর্শ। এই আদর্শে যেন কেউ জড়িয়ে না পড়ে সেদিকে ছাত্রলীগকে নজর রাখতে হবে।
বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ-এর সভাপতি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. কামরুল হাসান রিপন বলেন, তরুণরা এগিয়ে যাবে, জঙ্গীরা ধ্বংস হবে। এখনও জঙ্গীবাদ যায়নি। জঙ্গীরা বিভিন্ন ছত্রছায়ায় রয়েছে। তাই আমাদের তরুণদের সবসময় সচেতন থাকতে হবে।
প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ২০০১ এর নির্বাচনের পরে জঙ্গীবাদ মাথা চারা দিয়ে উঠেছিলো। সেই সময়ে জঙ্গীবাদ সুসংগঠিত হয়েছে। কিন্তু বর্তমান সরকারের পদক্ষেপে জঙ্গীবাদ নির্মূল হয়েছে এবং আমাদের সকল তরুণদের সচেতন থাকতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার যে আদর্শ সেই আদর্শকে সঠিকভাবে ধারণ করতে হবে। আমরা দেখেছি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ যখনই জিততে আসে তখনই একটি চক্র ষড়যন্ত্র করে এবং নানাপ্রকার অপপ্রচার চালায়। সেটি যেন চালাতে না পারে সেটি আমাদের কর্মকান্ডের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, সহকারী প্রক্টর, শিক্ষার্থী ও ছাত্রনেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত শিক্ষার্থীসহ সবাই এসময় জঙ্গিবাদ বিরোধী শপথ গ্রহণ করেন।
অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে তরুণদের জাগ্রতকরণ ও জঙ্গিবাদবিরোধী কার্যক্রম হিসেবে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে প্রায় দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সেমিনার করে আসছে সুচিন্তা ফাউন্ডেশন।