খবর৭১ঃ ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকলে মুখের বিভিন্ন অংশ যেমন- দাঁত, মাড়ি, জিহ্বা, তালু, চোয়ালের ভেতরের অংশ, ঠোঁট, লালা ও লালা গ্রন্থি, চোয়ালের হাড় রোগাক্রান্ত হয়।
মুখের মধ্যে যে পরিবর্তনগুলো আসতে পারে-
* মুখের লালা নিঃসরণ কমে গিয়ে মুখ শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। লালার স্বাভাবিক কাজ যেমন মুখ ও দাঁত কে ধৌত করা, জীবাণুর বৃদ্ধি রোধ করা, খাবার খেতে ও স্বাদ গ্রহণে সাহায্য করা, মুখে ঘর্ষণজনিত ক্ষুদ্র আলসার প্রতিরোধ করা প্রভৃতি ব্যাহত হয়। ফলে মাড়ি রোগ, দাঁতে গর্ত বা ক্যারিজ, মুখে জ্বালাপোড়া, খাদ্য গ্রহণে সমস্যা, মুখে দুর্গন্ধসহ নানা সমস্যা তৈরি হতে পারে।
* রক্তনালির স্থিতিস্থাপকতা কমে যাওয়ায় ও রক্তে শ্বেত কণিকার কার্যকারিতা হ্রাস পাওয়ায় সংক্রমণ বা ইনফেকশন শরীরে দ্রুত ছড়িয়ে যায়। ফলে ডায়াবেটিক রোগীদের মুখে ছত্রাক সংক্রমণসহ নানা ধরনের সংক্রমণ অন্যদের চেয়ে বেশি দেখা যায়, এমনকি ওষুধেও সহজে ভালো হয় না।
* ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি থেকে মুখের মধ্যে অনেক সময় জ্বালাপোড়া হতে পারে।
* মুখের নিঃসৃত তরলের সঙ্গে সুগার থাকাতে দাঁতে ক্যারিজ হওয়ার আশংকা থাকে।
* ডেন্টাল চেকআপে অনেক রোগীর প্রথম ডায়াবেটিস শনাক্ত হয়। মাড়ির সংক্রমণ থেকে মাড়ি ফুলে যায়, রক্ত পড়ে, দাঁত নড়ে যায় এমনকি পড়েও যেতে পারে। প্রতি পাঁচজন ডায়াবেটিক রোগীর মধ্যে একজনের দাঁত হারানোর ভয় থাকে।
হার্টের রোগ তৈরির অন্যতম কারণ মাড়ির দীর্ঘমেয়াদি রোগ। স্টোক, অগ্নাশয়, অপরিণত শিশু জন্ম, কিডনি, হাড় ক্ষয়সহ ফুসফুসের কিছু রোগের সঙ্গে মাড়ি রোগের সম্পর্ক রয়েছে।
কোনো কোনো রোগীর ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে ডায়াবেটিস থাকলে ডেন্টাল চিকিৎসা নেওয়া যাবে না। ফলে তারা রোগকে পুষে রেখে মুখ ও শরীরকে চরম হুমকির দিকে নিয়ে যায়। ডেন্টাল চিকিৎসক রক্তে সুগারের মাত্রা নির্ণয়ের মাধ্যমে চিকিৎসা প্রদান করেন। অনিয়ন্ত্রিত সুগার থাকলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে ডেন্টালের সব ধরনের চিকিৎসা নিরাপদে দেওয়া সম্ভব। চিকিৎসা নিতে আসার আগে মনগড়া নিয়মে ইনসুলিনের মাত্রা বা ওষুধ বাড়িয়ে অথবা দীর্ঘ সময় অভুক্ত থেকে সুগার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে আসলে অনেক সময় হাইপোগ্লাইসেমিয়ার মতো জটিলতার আশঙ্কা থাকে।