বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) জুনিয়র কর্মীদের দ্বারা মারধরের শিকার হয়েছেন সিনিয়র এক কর্মী। পরে তাদের ঠেকাতে যেয়ে আরো দুই সিনিয়র কর্মী আহত হয়েছেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের কর্মী বলে জানা যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের মারুফ হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী ও একই বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের আরিফ হোসেন এর মধ্যকার বিভাগীয় সমস্যা কে কেন্দ্র করে বিবাদের সূত্রপাত হয়।
সূত্র জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সমাজ কর্ম বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ও লালন শাহ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আরিফ, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের মারুফ ও তার বন্ধু প্রিন্সসহ বসে ছিলেন। কথা বলার এক পর্যায়ে মারুফ অন্যমনস্ক হলে আরিফ তার গালে-মুখে হাত দিয়ে আরিফের কথার দিকে দৃষ্টি আকর্শন করার চেষ্টা করেন। এতে মারুফ ক্ষিপ্ত হয়ে আরিফকে মারতে উদ্যত হন। পরে প্রিন্স তাকে আটকান এবং দূরে নিয়ে যান।
পরে রাত ১১ টার দিকে মারুফ ও প্রিন্স লালন শাহ হলে আরিফের সাথে সাক্ষাৎ করেন ও ক্ষমা চান। পরে শুক্রবার বেলা ১১ টার দিকে আরিফের বন্ধুরা মারুফকে ডাকেন। এসময় আরিফের বিভাগের বন্ধু আবদুল্লাহ, আবু তালেব, আলম, আবুজার, অনুপম ও আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের হানিফসহ ৭/৮ জন উপস্থিত ছিলেন। একপর্যায়ে মারুফের একরোখা ব্যবহারে হানিফ তাকে চড় মারেন।
এসময় উপস্থিত ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিমুল, ২০১৮-১৯ শিক্ষবর্ষের হলের মাসুদ, রিয়ন, মারুফের বন্ধু প্রিন্স, ফয়সাল, ধ্রুবসহ ২০ থেকে ২৫ জন ঘটনাস্থলে দৌড়ে আসেন। একপর্যায়ে মাসুদ, ধ্রুব সহ আরো কয়েকজন এলোপাতাড়ি আরিফকে আঘাত করেন। এসময় মারামারি ঠেকাতে এগিয়ে আসলে ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী শাহীন ফিরোজও মারধরের শিকার হন। এরপর মারুফ বাঁশ দিয়ে আঘাত করতে উদ্যত হলে ছাত্রলীগ নেতা হোসাইন মজুমদার ঠেকাতে গিয়ে আহত হন। পরে উভয়কে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এরপর বেলা ১২ টার দিকে উভয়ের মাঝে মিমাংসার উদ্যেশ্যে বঙ্গবন্ধু হলের সামনে ছাত্রলীগ নেতারা ডাকেন। এসময় ছাত্রলীগ নেতা আল-আমিন জোয়ার্দার, ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত, বিপুল হোসেন খান, হোসাইন মজুমদারসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এসময় ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত ও বিপুল খান মারুফকে চড় থাপ্পড় মারেন।
এ বিষয়ে আরিফ হোসেন বলেন, ‘গত রাতে (বৃহস্পতিবার) মারুফের সাথে কথা বলার সময় বারবার অন্যদিকে তাকাচ্ছিল। তখন মারুফের মুখে হাত দিয়ে আমার দিকে সরিয়ে দৃষ্টি আকর্শনের চেষ্টা করি। তৎক্ষণাৎ ক্ষিপ্ত হয়ে সে আমাকে মারতে উদ্যত হয়। আজ (শুক্রবার) সকালে আমার বন্ধুরা মারুফকে বোঝানো জন্য ডাকে। পরে মারুফ তার বন্ধু ও সিনিয়রদের ডেকে আমাকে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে।’
এ বিষয়ে মারুফ বলেন, গতকাল আরিফ ভায়ের সাথে যে বিষয়টি মিটমাট হয়ে যায়। আমি হলে থাকি না। পরদিন আমাকে ডেকে চড় মারা হলেও আমি কিছু বলিনি। আমি অন্য পাশে সরে গেলে আমার বন্ধুরা হল থেকে কয়েকজন কে ডেকে আনে ও উক্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘ঘটনা শুনিনি। ক্যাম্পাসে এসে খোঁজখবর নিবো।’