জগন্নাথপুরের ইসহাকপুর গ্রামের বদরুল বাহিনীর বিরুদ্ধে গ্রামবাসীর সাংবাদিক সম্মেলন

0
300

জগন্নাথপুর প্রতিনিধি: জগন্নাথপুর পৌরসভার ইসহাকপুর গ্রামের সাধারন মানুষ বদরুল বাহিনীর অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষায় এবং গ্রামবাসীর জান মালের নিরাপত্তায় গ্রামবাসীর আয়োজনে সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল বুধবার ( ১৩ অক্টোবর) বিকেল ৫টায় জগন্নাথপুর পৌর শহরের ইসহাকপুর গ্রামে গ্রামবাসীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইসহাকপুর গ্রামের মৃত ইদ্রিছ সারেং এর ছেলে লন্ডন প্রবাসী হাজি উস্তার গনী।

লিখত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি একজন লন্ডন প্রবাসী। আমাদের ইসহাকপুর গ্রামের সাধারণ মানুষ বদরুল বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে যখন মূখ খুলতে পারছেননা তখন সামাজিক দায়বদ্ধতার কারনে বাধ্য হয়ে গ্রামবাসীর পক্ষে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ইসহাকপুর গ্রামের সচেতন মহল এবং প্রবাসীদের সার্বিক সহযোগিতায় যখন ইসহাকপুর পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার উন্নয়ন সহ এলাকার বিভিন্ন উন্নয়ন তরান্বিত হচ্ছিল তখন বদরুল বাহিনী এলাকার সাধারণ মানুষের উপর বিভিন্নভাবে অত্যাচার ও ক্ষতিসহ এলাকার মান সম্মান নষ্ঠ করতে বিভিন্ন পায়তারায় লিপ্ত রয়েছে। বদরুল ইসলাম তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে চলছে। সম্প্রতি ইসহাকপুর পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় সংক্রান্ত একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমার উপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় বদরুল বাহিনীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা দেয়ার প্রস্তুতির খবর পেয়ে বদরুল বাহিনী আমাকে প্রানে হত্যার হুমকি দেয়। অবশেষে নিরুপায় হয়ে আমি সুনামগঞ্জ আদালতে মামলা দায়ের করি। আদালতে মামলা দায়েরের পর পরই বদরুল বাহিনী আরও ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৫ অক্টোবর বদরুল বাহিনীর প্রধান বদরুলের বাড়ীতে গরু জবাই করে পার্টি দিয়ে সন্ত্রাসীদের জড়ো করে অবৈধ বন্দুক এবং দেশীয় অস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ফিল্মি কায়দায় আমার বাড়ীতে দিন-দুপুরে হামলা চালায়। যা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীদেরকেও হার মানায়।
সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, বদরুল বাহিনী অবৈধ বন্দুক ও দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গ্রামে প্রত্যেক দিন রাতেই মহড়া দেয় এবং ফাঁকা গুলি করে মানুষদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। বদরুল বাহিনীর অবৈধ বন্দুকের গুলিতে সারা গ্রাম প্রকম্পিত হয়ে যায় এবং গ্রামের মানুষ ভীত সন্তস্ত হয়ে বিভিন্ন দিক-বেদিক ছোটাছুটি শুরু করেন। জগন্নাথপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে বদরুল বাহিনী এলোপাতাড়ি গুলি করে পালিয়ে যায়। তাছাড়া বদরুল ও তার সহযোগীদের বাড়ীতে আসর বসিয়ে প্রতিনিয়ত আড্ডা দিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে বদরুল বাহিনীর আতংকে গ্রামে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। বদরুল এবং তার সন্ত্রাসী বাহিনী কখন কাকে আক্রমন করে সেই ভয়ে সবাই ভীত। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা এবং অস্ত্র মামলা সহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে। এদের মধ্যে ইসহাকপুর গ্রামের মৃত আফিজ উল্লার ছেলে বদরুল ইসলাম, তাজুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে সুমন মিয়া, মোহন মিয়া, লাল মিয়ার ছেলে আমির হোসেন পংকি, রানা মিয়া, মৃত আফছর উদ্দিনের ছেলে জিয়াউর রহমান, আব্দুল হান্নানের ছেলে আব্দুল কাহার আমীরী, মৃত শাহ আব্দুল হান্নানের ছেলে শাহ রফিকুল করিম, আফছর খানের ছেলে তৌরিছ খান, মৃত কনা মিয়ার ছেলে আব্দুল হাফিজ, সাজাদ মিয়া, মুমিত মিয়া, মৃত ছাবলুছ মিয়ার ছেলে রুহুল আলম, মৃত-ছালেহ আহমদের ছেলে নোমান মিয়া, মৃত-তখলিছ মিয়ার ছেলে দিলশাদ মিয়া, দিলতাজ মিয়া, মৃত-আজিম উদ্দিনের ছেলে সমসই উদ্দিন খুবই ভয়ংকর প্রকৃতির লোক এবং এলাকার কেউ তাদের এসব অবৈধ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পাচ্ছেন না। সংবাদ সম্মেলনে আরো উল্লেখ করা হয়, বর্তমানে ইসহাকপুর গ্রামের মানুষ আতংকের মধ্যে দিন যাপন করলেও বদরুল বাহিনীর বিরুদ্ধে মুখ খুলে প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। এমতাবস্থায় আমি সহ গ্রামের প্রতিবাদী ব্যক্তিরা বদরুল বাহিনীর অত্যাচার, নির্যাতন ও হয়রানীর হাত থেকে রক্ষা পেতে এবং গ্রামবাসীর জান মালের নিরাপত্তা বিধানের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ও মাননীয় পরিকল্পনামন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইসহাকপুর গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী শাহ নুরুল করিম, শাহ জিল্লুল করিম, মুরব্বী মোঃ আক্তার হোসেন, ডালিম মিয়া, লিটন মিয়া, মো: আব্দুল মালিক, আব্দুল আজিজ, মনোয়ার হোসেন, সাবেক পৌর কাউন্সিলর মো: খলিলুর রহমান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here