জগন্নাথপুর প্রতিনিধিঃ-
জগন্নাথপুর উপজেলার মীরপুর ইউনিয়নের শ্রীরামসী গ্রামে বেধনা বিধুর স্মৃতি নিয়ে শহীদদের স্মরনে শহীদ স্মৃতি সংসদ শ্রীরামসী-এর উদ্যোগে আঞ্চলিক শোক দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার শ্রীরামসী স্কুল এন্ড কলেজ ক্যাম্পাসে স্থাপিত শহীদ মিনারে স্মৃতি সংসদ ছাড়াও সরকারিভাবে শহীদদের প্রতি বিন¤্র শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পন, কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারন, শোক র্যালী, আলোচনাসভা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল সাড়ে ১০টায় শ্রীরামসী স্কুল এন্ড কলেজ মিলনায়তনে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আলহাজ¦ আকমল হোসেন ১৯৭১সালের ৩১শে আগস্ট স্বাধীনতা যুদ্ধে পাক-হানাদার বাহিনীর নির্মম হত্যাযজ্ঞে শহীদদের প্রতি বিন¤œ শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন শ্রীরামসী গণহত্যা হচ্ছে ইতিহাসের নির্মম হত্যাযজ্ঞ।
তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মত্যাগ দানকারী সকল শহীদদের আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন। প্রতি বছর এ ধরনের আয়োজন করায় তিনি শহীদ স্মৃতি সংসদের প্রতি অভিনন্দন জানান। আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন শ্রীরামসী স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো: হাজের আলী।
শহীদ স্মৃতি সংসদের সভাপতি মুহিবুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক আমজাদ হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন মিরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক বাবুল মিয়া, শ্রীরামসী হাই স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক জামাল উদ্দিন, শ্রীরামসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালেক, শহীদ স্মৃতি সংসদের সাবেক সাধারন সম্পাদক আবুল মনসুর খান মাসুম, শহীদ স্মৃতি সংসদের সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম,
বাংলাদেশ আঞ্জুমানে তালামীযে ইসলামীয়া শ্রীরামসী আঞ্চলিক শাখার সভাপতি আব্দুল মনাফ, শহীদ স্মৃতি সংসদের সহ-সাধারন সম্পাদক মামুন মিয়া, শহীদ স্মৃতি সংসদের সাবেক অর্থ সম্পাদক সৈয়দ জয়নুল কবরী, সাবেক অর্থ সম্পাদক আব্দুল মুকিত ফারদিন, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক জুয়েল মিয়া, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক কামরান মিয়া প্রমূখ। শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন স্মৃতি সংসদের ধর্ম সম্পাদক হাফিজ ক্বারী আব্দুর রাজ্জাক। পরে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
প্রসঙ্গত:- ১৯৭১ সালের ৩১শে আগষ্ট পাক হানাদার বাহিনী শান্তি কমিটি গঠনের লক্ষ্যে এলাকার বিভিন্ন শ্রেনী পেশার লোকজনদের শ্রীরামসী বাজারে জড়ো করে। নি:সীম নিরবতায় দীর্ঘক্ষন যাবৎ চলতে থাকে মেশিন গানের গুলি। পাক-হানাদাররা জনমানবহীন শ্রীরামসী বাজার ও গ্রামের অধিকাংশ ঘর-বাড়ি পেট্রোল ঢেলে জ্বালিয়ে দেয়। মুক্তিযুদ্ধের কাল পরে শ্রীরামসীর মানুষেরা শহীদদের স্মৃতিকে গনমানুষের হৃদয়ে চির অনির্বান রাখার দৃপ্ত শপথে শ্রীরামসীতে প্রতিষ্ঠিত করা হয় শহীদ মিনার ও স্মৃতি সৌধ। যার বুক চিরে উৎকীর্ন আছে পরিচয় জানা শহীদদের নাম।