খবর৭১ঃ একদিকে করোনা মহামারির প্রকোপ, অন্যদিকে চোখ রাঙাচ্ছে এডিস মশাবাহী ডেঙ্গু। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাস ডেঙ্গুর প্রকোপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও জুলাই ও আগস্টে তা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। চলতি আগস্ট মাসে তা উদ্বেগজনক আকার ধারণ করেছে। আগের সাত মাসে যে পরিমাণ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়, আগস্টে এর প্রায় তিন গুণ বেশি রোগী শনাক্ত হয়।
বছরের শুরুর ছয় মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল মাত্র ৩৭২। জুলাই মাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ায় দুই হাজার ২৮৬ জনে। প্রথম সাত মাসে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা যেখানে দুই হাজার ৬৫৮ জন, সেখানে শুধু আগস্টের ৩০ দিনে আক্রান্ত হয়েছে সাত হাজার ৪৩২ জন। যা সংখ্যার হিসাবে আগের সাত মাসের প্রায় তিন গুণ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের প্রকাশিত পরিসংখ্যান সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (৩০ আগস্ট) পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে সর্বমোট হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১০ হাজার ৯০ জন। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ৩২ জন, ফেব্রুয়ারিতে নয়জন, মার্চে ১৩ জন, এপ্রিলে তিনজন, মেতে ৪৩ জন, জুনে ২৭২ জন, জুলাইয়ে দুই হাজার ২৮৬ জন। আর আগস্টের ৩০ দিনে সাত হাজার ৪৩২ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন আট হাজার ৮৯৫ জন।
মোট ভর্তি রোগীর মধ্যে ৪২ জনের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে ১২ জন জুলাইয়ে এবং ২৭ আগস্ট পর্যন্ত ৩০ জন মারা যান।
সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৩৩ জন। ঢাকার সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত হাসপাতালে ৫২ জন এবং বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ১৬১ জন রয়েছেন। এছাড়া ঢাকার বাইরে বিভিন্ন বিভাগে ২০ জন ভর্তি হন।
দেশের ইতিহাসে ২০১৯ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ ছিল সবচেয়ে বেশি। ওই বছর প্রথমবারের মতো ডেঙ্গু বিস্তৃত হয় ৬৪ জেলায়। সেসময় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা লাখ ছাড়ায় এবং এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ১৪৮ জনের মৃত্যুর খবর জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। যদিও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের কাছ থেকে আড়াইশ’র বেশি মানুষের এই রোগে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
মাঝে ২০২০ সালে মশাবাহিত রোগটির প্রকোপ কিছুটা কম ছিল। সে বার এক হাজার ৪০৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হন। তাদের মধ্যে মারা যান সাতজন।