খবর৭১ঃ মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে দিন দিন দেশে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকায় বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। অনেককে হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে। আইসিইউতেও নিতে হচ্ছে কোনো কোনো রোগীকে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু ও ডেঙ্গুর উপসর্গ নিয়ে রোগীর সংখ্যা ছয় হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে আগস্ট মাসেই এই সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন হাজার।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে এক হাজার ৪৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন। ঢাকার ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি থাকা ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা আজ পর্যন্ত ৯৬০। দেশের অন্যান্য বিভাগের হাসপাতালগুলোয় ভর্তি আছেন আরও ৮৯ জন রোগী।
এদিকে রবিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, গতকাল শনিবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু ও ডেঙ্গুর উপসর্গ নিয়ে ১৯৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকায় ১৮৯ জন ও ঢাকার বাইরে নয়জন।
তথ্য অনুযায়ী,চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ছয় হাজার ১০০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে আগস্ট মাসে এখন পর্যন্ত ভর্তি হয়েছেন তিন হাজার ৪৪২ জন। এই সময়ে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন পাঁচ হাজার ২৬ জন।
দেশে ডেঙ্গুর উপসর্গ নিয়ে এখন পর্যন্ত ২৫টি মৃত্যুর তথ্য রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) কাছে এসেছে। তারা এখন পর্যন্ত কোনো পর্যালোচনা শেষ করে ডেঙ্গুতেই মৃত্যু কি না, তা নিশ্চিত করতে পারেনি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন তাদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন পাঁচ হাজার ২৬ জন রোগী।
দেশের ইতিহাসে ২০১৯ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ ছিল সবচেয়ে বেশি। ওই বছর প্রথমবারের মতো ডেঙ্গু বিস্তৃত হয় ৬৪ জেলায়। সেসময় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা লাখ ছাড়ায় এবং এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ১৪৮ জনের মৃত্যুর খবর জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। যদিও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের কাছ থেকে আড়াইশ’র বেশি মানুষের এই রোগে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
মাঝে ২০২০ সালে মশাবাহিত রোগটির প্রকোপ কিছুটা কম ছিল। সে বার এক হাজার ৪০৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হন। তাদের মধ্যে মারা যান সাতজন। করোনার প্রকোপের সঙ্গে এবার ডেঙ্গু পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করলে তা সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।