চাঁদা না দেয়ায় বাড়ির মালিককে হত্যা:আতঙ্কে পদ্মা আবাসিক এলাকার বসবাসকারীরা

0
236

খবর৭১ঃ গাজীপুরে ২০ হাজার টাকা চাঁদা না দেয়ায় নির্মাণাধীন পঞ্চমতলা বাড়ির মালিককে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের নাম আমিনুল ইসলাম খন্দকার (৬০)। তিনি গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর থানার দক্ষিণ পানিশাইল পদ্মা আবাসিক এলাকার এ ব্লকের ১ নম্বর রোডের ৩৯ নম্বর বাড়ির মালিক। নির্মাণাধীন ওই বাড়ির তৃতীয় তলার বাথরুম থেকে গত ১৫ জুলাই বিকেলে তার গলাকাটা অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পাশের বাড়ির ভাড়াটিয়া জাহাঙ্গীর আলম সোহাগকে (৩৮) গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি বের করে দেয়। আসামি জাহাঙ্গীর নীলফামারী জেলা সদরের পূর্ব কুখাপাড়ার নজরুল হোসেনের ছেলে। সে পদ্মা আবাসিকেরই সাদেকের বাড়ির ভাড়াটিয়া।
সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলনে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ-জিএমপি কর্মকর্তারা গ্রেফতারকৃত আসামির স্বীকারোক্তির বরাদ দিয়ে জানান, আসামি জাহাঙ্গীর গত ১৩ জুলাই রাত ৮টায় আমিনুল ইসলামের নির্মাণাধীন পঞ্চম তলা ভবনের তৃতীয় তলায় উঠে আমিনুলকে ফোন করে জানায় যে, নির্মাণাধীন ভবনে সন্দেহজনক দুই-তিনজন লোক উঠেছে। জাহাঙ্গীরের এ ফোন পেয়ে ভিকটিম আমিনুল সেখানে গেলে আসামি তার কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করে। ভিকটিম আমিনুল টাকা দিতে অস্বীকার করলে আসামি জাহাঙ্গীর তার গলায় ছুরি ধরে ভয় দেখায় এবং ভিকটিমের গলায় ছুরি দিয়ে আঘাত করে। এতে আমিনুলের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর আসামি ভিকটিমের পাঞ্জাবির পকেট থেকে ৯৯৭ টাকা নিয়ে যায় এবং লাশ বাথরুমের ভেতর ঢুকিয়ে দরজা আটকে রেখে যায়। ঘটনার দিন ভিকটিম আমিনুলের পরিবারের সদস্যরা গ্রামের বাড়িতে ছিলেন। তার সাথে পরিবারের সদস্যদের ফোন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় ভবনের ঠিকাদার ও নির্মাণ শ্রমিকদের বিষয়টি গ্রামের বাড়ি থেকে জানানো হলে তারা বাড়ির মালিক আমিনুলকে খুঁজতে থাকে। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে গত ১৩ জুলাই বিকেল ৫টায় নির্মাণাধীন ৫মতলা ভবনের তৃতীয় তলার বাথরুমে তার গলাকাটা অর্ধলগিত লাশের সন্ধান মিলে।
এ হত্যাকাণ্ডের মামলা হওয়ার পর জিএমপি উত্তর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার জাকির হাসানের তত্ত্বাবধানে তথ্যপ্রযুক্তি ও ম্যানুয়েল ইন্টিলিজেন্সের সহায়তায় জিএমপি অপরাধ (উত্তর) বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রেজওয়ান আহমেদের নেতৃত্বে সহকারী পুলিশ কমিশনার (কোনাবাড়ি জোন) সুভাশীষ ধর কাশিমপুর থানার একাধিক টিম নিয়ে কাশিমপুর ও পাশের আশুলিয়া থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেন। অবশেষে আসামি জাহাঙ্গীরকে তার ভাড়া বাসা থেকে গ্রেফতার করে।
উল্লেখ্য, পদ্মা আবাসিকের বেশির ভাগ বাড়ির মালিকই এখানে বসবাস করেন না। ম্যানেজাররা দেখাশুনা করেন। এখন তারা আতঙ্কের মধ্যে বাসবাস করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ম্যানেজার বলেন, ছাদে বখাটে ছেলেরা উঠে। তারা কারও কথা শুনে না। এমনকি ছাদ থেকে নামতে বললে ভয়ভীতি দেখায় এবং হুমকি দেয়।
নিহত আমিনুল পরিবারের সদস্য এবং ছোট সময়ের বন্ধু হেদায়েত উল্লাহ খন্দকারের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমিই এই পদ্মা আবিসিকে জমি কেনার উৎসাহ দেই। আমরা চাই এই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার সম্পন্ন হোক এবং পদ্মা আবাসিকে যেন এ ধরনের ঘটনা আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here