খবর৭১ঃ কোরবানির ত্যাগের শিক্ষা ব্যক্তিজীবনে প্রতিফলিত হলেই সমাজে শান্তি ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ।
কুরবানির মর্মার্থ অনুধাবন করে সংযম ও ত্যাগের মানসিকতায় উজ্জীবিত হয়ে করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে দেশের সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বুধবার বঙ্গবভবনে পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ শেষে দেশবাসীর উদ্দেশে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য দেন তিনি। একইসঙ্গে তিনি বিশ্বের সকল মুসলিম ভাইবোনদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানান।
পবিত্র ঈদুল আজহা সবার জন্য কল্যাণ বয়ে আনুক এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে মহামারি করোনার হাত থেকে আল্লাহ যেন আমাদের রক্ষা করেন সেই দোয়া করেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, মহান আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্য ও সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর পবিত্র ঈদ-উল-আজহা। এই উৎসবের সঙ্গে মিশে আছে চরম ত্যাগ ও প্রভুপ্রেমের পরাকাষ্ঠা। কুরবানি আমাদের মাঝে আত্মদান ও আত্মত্যাগের মানসিকতা সঞ্চারিত করে, আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর সঙ্গে আনন্দ-বেদনা ভাগাভাগি করে নেয়ার মনোভাব ও সহিষ্ণুতার শিক্ষা দেয়।
রাষ্ট্রপতি বলেন, মুসলিম বিশ্ব এমন একটা সময়ে ঈদুল আজহা উদযাপন করছে, যখন করোনার ভয়াল থাবায় গোটা বিশ্ব বিপর্যস্ত। বাংলাদেশেও করোনার নেতিবাচক প্রভাব ক্রমান্বয়ে প্রকট হচ্ছে। করোনার কারণে দেশের জনগণের জীবন ও জীবিকা আজ কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। জীবন বাঁচানো প্রথম অগ্রাধিকার হলেও জীবন বাঁচিয়ে রাখতে জীবিকার গুরুত্বও অনস্বীকার্য। সরকার করোনা মোকাবিলা ও অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে বিভিন্ন প্যাকেজ প্রণোদনা প্রদানসহ বহুমুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। অসচ্ছ্বল ও নিম্নআয়ের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবেও বিভিন্ন সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত আছে। কৃষি ও শিল্পসহ উৎপাদনশীল প্রতিটি খাতের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতেও সরকার সর্বাত্মক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।
আব্দুল হামিদ বলেন, বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতির ক্রমাবনতির কারণে টিকাদান কর্মসূচি সাময়িকভাবে বাধাগ্রস্ত হলেও বর্তমানে তা পুরোদমে এগিয়ে যাচ্ছে। সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেশের সকল নাগরিকের জন্য টিকাদান নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। তাই, এই কর্মসূচিকে সফল করতে সরকারের পাশাপাশি দলমত নির্বিশেষে সকলকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, করোনা এমন একটি ভাইরাস যা থেকে ইচ্ছে করলেই কোনো ব্যক্তি বা পরিবার বা এককভাবে একটি দেশের পক্ষে নিরাপদ থাকা সম্ভব নয়। বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে আজ আমরা গ্লোবাল ভিলেজের বাসিন্দা। তাই, বিশ্বকে করোনার হাত থেকে বাঁচাতে হলে উন্নত-অনুন্নত ও ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে বহুজাতিক সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানসহ সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে বলেন রাষ্ট্রপতি।
আব্দুল হামিদ আশা প্রকাশ করেন যে, সকলেই সরকার নির্ধারিত স্থানে কুরবানি সম্পন্ন করবেন এবং যথাসময়ে কুরবানির বর্জ্য অপসারণে সচেষ্ট থাকবেন।