খবর৭১ঃ আট দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান। ৮ জুলাই রংপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন ত্ব-হা। সঙ্গে ছিলেন দুই সহযোগী আব্দুল মুহিত ও মোহাম্মদ ফিরোজ এবং প্রাইভেটকার চালক আমির হোসেন ফয়েজ। এরপর থেকেই নিখোঁজ রয়েছেন তারা।
৩১ বছর বয়সী এই ইসলামি বক্তার নাম মো. আফছানুল আদনান ত্ব-হা। তবে আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ আদনান নামেই পরিচিত। বাড়ি রংপুরে। রংপুর মহানগরীর সেন্ট্রাল রোডের আহলে হাদিস মসজিদ-সংলগ্ন গলিতে তার পৈতৃক বাসা। বিয়ের পর স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে শালবন এলাকার চেয়ারম্যানের গলিতে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।
আদনানের দুই স্ত্রী। প্রথম স্ত্রীর নাম আবিদা নুর, দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিকুন নাহার। প্রথম স্ত্রীর ঘরে তিন বছরের একটি মেয়ে ও দেড় বছর বয়সী একটি ছেলেসন্তান আছে। দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিকুন নাহার সারা মিরপুর আল ইদফান ইসলামী গার্লস মাদ্রাসার পরিচালক ও শিক্ষক। তিন মাস আগে তাদের বিয়ে হয়েছিল।
একসময় দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলতেন ত্ব-হা আদনান। রংপুরের ক্রিকেট অঙ্গনে তুখোড় ক্রিকেটার হিসেবে পরিচিতি পান। ক্রিকেটই ছিল তার ধ্যান-জ্ঞান। কিন্তু অনার্সে পড়াকালে ধর্মের দিকে ধীরে ধীরে ঝুঁকে পড়েন। ধর্মের প্রচার প্রচারণায় এগিয়ে যেতে ক্রিকেটকে বিসর্জন দেন তিনি। অবশ্য ছেলেবেলা থেকেই ধর্মীয় বিষয়ে আগ্রহ ছিল আদনানের। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কোনো আরবি প্রতিষ্ঠানে না পড়লেও ইসলাম ধর্মের প্রচুর বই পড়তেন এবং গবেষণা করতেন সময় পেলেই।
আদনানের মা আজেদা বেগম জানিয়েছেন, ত্ব-হার হাতেখড়ি রংপুর লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ। সেখান থেকে এইচএসসি পাশের পর ভর্তি হন রংপুর কারমাইকেল কলেজে। অনার্সে দর্শনে বিষয় নিয়ে পড়েছেন। মাস্টার্সে দর্শনে ফার্স্ট ক্লাস পান তিনি। এরপর বাড়ির পাশে আল জামেয়া আসসালাফিয়া মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেছেন। সেই শিক্ষা নিয়ে করোনার শুরু থেকে অনলাইনে আরবি পড়াতেন তিনি। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন মসজিদে গিয়ে জুমার খুতবা দিতেন। তার ফেইসবুকে পেজের অনুসারীর সংখ্যা ৫২ হাজার। তার কয়েকটি বক্তব্য ইউটিউব প্ল্যাটফর্মে ব্যাপক ভাইরাল। এসব ভিডিওতে ধর্মীয় উগ্রবাদ বা সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক কোনো বক্তব্য নেই।
এদিকে তার সন্ধান পেতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আকুতি জানিয়েছেন দ্বিতীয় স্ত্রী মাদ্রাসাশিক্ষক সাবিকুন নাহার সারা। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহায়তাও চেয়েছেন তিনি। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বুধবার সংবাদ সম্মেলনে স্বামীর জন্য কান্নায় ভেঙে পড়ে তিনি এ আরজি জানান।