খবর ৭১: সুদীর্ঘ সময় ধরে চলমান ফিলিস্তিন সঙ্কটের স্থায়ী সমাধানে জরুরি ও নিষ্পত্তিমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বৃহস্পতিবার মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি ও ফিলিস্তিন প্রশ্নে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি আহুত এক যৌথ আলোচনায় এ আহ্বান জানান।
শিশু ও নারীসহ নিরপরাধ ফিলিস্তিনি অসামরিক নাগরিকদের ওপর দখলদার ইসরাইলের বর্বরোচিত সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে পত্র দিয়েছেন মর্মে সাধারণ পরিষদকে অবহিত করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লিখিত পত্র উদ্ধৃত করে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে ১৯৬৭ সালের সীমানা অনুযায়ী স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার রক্ষার প্রতি বাংলাদেশের অবিসংবাদিত প্রতিশ্রুতির কথা পুনরুল্লেখ করেন।
বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি অবিলম্বে ইসরাইলী আগ্রাসন বন্ধের আহ্বান জানিয়ে ধারাবাহিকভাবে এই অবিবেচনাপ্রসূত সহিংসতার প্রতি ধিক্কার জানান। মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং ফিলিস্তিন সমস্যার ব্যাপকভিত্তিক, ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে কিছু অগ্রাধিকার বিষয় তুলে ধরেন তিনি। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এই সঙ্কটের মূল কারণ খুঁজে বের করে তা সমাধানে আন্তরিক প্রচেষ্টা গ্রহণ করা, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ও সাধারণ পরিষদকে তাদের চার্টার অনুযায়ী পরিপূর্ণভাবে দায়িত্ব পালন করা, ‘কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করার সংস্কৃতি’ থেকে বেরিয়ে আসা এবং সবধরনের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও জাতিসংঘের রেজুলেশন ২৩৩৪ (২০১৬) এবং এতদসংশ্লিষ্ট সকল রেজুলেশন ইসরাইলকে পরিপালন করাতে বাধ্য করা। এছাড়া শান্তি প্রতিষ্ঠার রোডম্যাপ ও মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়ার দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিতে সকল পক্ষের সাথে জাতিসংঘকে আরও নিবিড়ভাবে সংশ্লিষ্ট হওয়ার আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।
জরুরিভাবে ফিলিস্তিনি জনগণের মানবিক প্রয়োজনসমূহ মিটানোর প্রতি জোর দিয়ে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তায় সৃষ্ট জাতিসংঘের রিলিফ ফান্ড (আনরুয়া) এর সক্ষমতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি। আগ্রাসী ইসরাইলী বাহিনীর দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় এটি হবে প্রথম পদক্ষেপ।
জাতিসংঘ সদ্যভুক্ত একশোরও বেশি রাষ্ট্র দিনব্যাপী চলমান এই আলোচনায় অংশগ্রহণ করে। সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধি ছাড়াও এতে আরও বক্তব্য দেন জাতিসংঘ মহাসচিব ও জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি। বক্তারা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে অনতিবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং ফিলিস্তিনি সঙ্কটের আশু সমাধানের আহ্বান জানান।