এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া : স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী আজীবন জাতীয় স্বার্থে পক্ষে, জনগনের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও নিপীড়িত গণমানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করেছেন। তার রাজনীতি ছিল দেশ ও জাতির কল্যাণে। আজ থেকে ৪৫ বৎসর পূর্বে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন বাংলার মানুষ ধীরে ধীরে পানির অধিকার খেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আর এই কারণেই ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের শুরুতেই তিনি রুখে দাঁড়িয়েছিলেন।
ফারাক্কায় অবরুদ্ধ বাংলাদেশের জীবন রেখা পদ্মা নদীকে অবমুক্ত করার সুমহান লক্ষ্যকে সামনে রেখেই ১৯৭৬ সালে তার নেতৃত্বে সংগঠিত হয়েছিল “ঐতিহাসিক ফারাক্কা লং মার্চ’’। সে সময় তিনি মানুষের নেতা হিসেবে সাধারণ মানুষকে ডাক দিয়ে বলেছিলেন, ‘শিশুর যেমন মায়ের দুধে অধিকার, পানির উপর তোমাদের তেমনি অধিকার। তোমরা জাগ্রত হও তোমাদের প্রকৃতি প্রদত্ত শাশ্বত অধিকার যে হরণ করেছে তার বিরুদ্ধে উঠে দাঁড়াও।’
মওলানা ভাসানীর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের শেষ ঐতিহাসিক ঘটনাই হচ্ছে “ ঐতিহাসিক ফারাক্কা লং মার্চ”। সেময় ১৯৭৬ সালের ১৮ এপ্রিল মওলানা ভাসানী ভারতের তৎকালিন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে বাংলাদেশের উপর ফারাক্কার বিরূপ প্রতিক্রিয়া বর্ণনা করে তার “ফারাক্কা লং মার্চ” কর্মসূচির বিষয়ে অবহিত করে একটি পত্র প্রেরণ করেছিলেন।
শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী মওলানা ভাসানীর প্রেরিত পত্রের জবাবে লিখেছিলে-“এটি ভাবতে কষ্ট হচ্ছে যে, যিনি আমাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন এবং পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগ ও বেদনাকে একই ভাবে সহমর্মিতা দিয়ে দেখেছেন, তিনি বর্তমানে আমাদেরকে এত বেশী ভুল বুঝেছেন, এমনকি আমাদের আন্তরিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।”
ইন্দিরা গান্ধীর পত্র প্রাপ্তির পর মওলানা ভাসানী আবারো ইন্দিরা গান্ধীকে লিখেছিলেন, “আপনার ৪ মে’র পত্র ফারাক্কার উপর সরকারি ভাষ্যেরই পুনরাবৃত্তি। সুবিখ্যাত পূর্বপূরুষ মতিলাল নেহেরুর দৌহিত্রী ও পন্ডিত জহরলাল নেহেরুর কন্যার কাছ থেকে আমার এরূপ প্রত্যাশা ছিলনা। ফারাক্কা সম্পর্কে আমি আবারও আপনাকে অনুরোধ করছি বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলো সফর করে আমাদের কৃষি ও শিল্প উৎপাদনে যে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে তা নিরুপণ করার জন্য। আমি আপনাকে সরকারি কর্মকর্তাদের রিপোর্টের উপর আস্থা স্থাপন না করার অনুরোধ জানাচ্ছি। কারণ এগুলো প্রায়ই বিদ্যমান অবস্থার প্রকৃত চিত্রের প্রতিফলন নয়। পারস্পারিক সমঝোতা ও সহযোগিতার ভিত্তিতে সমস্যা সমাধানে আপনার পথকে আমি প্রশংসা করি। তবে সমস্যার ব্যাপক ভিত্তিক স্থায়ী সমাধান হওয়া প্রয়োজন। এটি শুধু মৌসুমের দু’মাসের ভেতর সীমাবদ্ধ না রেখে বরং সারা বছরব্যাপী প্রবাহের যথাযথ বণ্টন ভিত্তিক হওয়া উচিৎ।”
এ পত্রেই মওলানা ভাসানী উল্লেখ করেন, যদি তার অনুরোধ গ্রহণ করা না হয়; তবে তিনি নিপীড়িত জনগণের নেতা ইন্দিরা গান্ধীর পূর্ব পুরুষগণ এবং মহাত্মা গান্ধীর প্রদর্শিত পথেই সংগ্রাম পরিচালনা করবেন। সেই পথ ধরেই মওলানা ভাসানী ১৯৭৬ সালের ১৬ মে রাজশাহী থেকে ফারাক্কা অভিমুখে লং মার্চ করেছিলেন। এই লং মার্চের প্রস্তুতির সময় তিনি জাতিসংঘের তৎকালিন মহাসচিব ড. কুট ওয়ার্ল্ডহেইম, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ফোর্ড, গণচীনের নেতা মাও সেতুং, সোভিয়েত প্রধানমন্ত্রী আলেক্সি কুসিগীন প্রমুখ নেতৃবন্দের কাছে বার্তা প্রেরণ করে ভারতের উপর তাদের প্রভাব প্রয়োগ করে গঙ্গার পানির সুষম বণ্টনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যা প্রাপ্তির সহযোগিতা কামনা করেছিলেন।
লংমার্চের শেষ দিন রাজশাহির কানসাট ঐতিহাসিক জনসভায় মওলানা ভাসানী বলেছিলেন, “গঙ্গার পানিতে আমাদের ন্যায্য অধিকার, এটা আমাদের প্রাকৃতিক অধিকার, এ অধিকার পশু, পাখি, গাছপালা, কীটপতঙ্গ প্রাণবান সব কিছুর জন্মগত অধিকার। এ অধিকার হরণ করার ক্ষমতা কারো নেই। যে হরণ করেছে সে, প্রাণের বিরুদ্ধে জুলুম করেছে। বাংলাদেশের প্রাণবান মানুষ কোন দিন তা মেনে নেবে না। তিনি আকাশের দিকে হাত তুলে বললেন আল্লাহ নিশ্চয় আমাদের বাঁচার পথ করে দেবেন।”
মওলানা ভাসানীর পূর্বে কোন রাজনৈতিক নেতা বা কোন পরিবেশ বিজ্ঞানী আমাদের জাতীয় জীবনে ফারাক্কা বাঁধের ফলে সৃষ্ট দুর্যোগ সম্পর্কে আলোকপাত করেননি।
মজলুম জননেতার ফারাক্কাং লংমার্চের ৪৫ বছর পরও আমাদের শাসকগোষ্টি ফারাক্কা সমস্যা সমাধান ও পানির অধিকার তা আদায় করতে পারিনি। আমাদের জাতীয় জীবনে এমন একটা সংকট, এত বড় অন্যায় আমাদের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ-শাসকগোষ্টি চোখ বুঝে সহ্য করে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশের পানির অধিকার নিয়ে বিগত পাঁচ দশকে ফারাক্কা নিয়ে ভারতের অনড় অবস্থানে বিশেষ পরিবর্তন হয়নি। তবে, ফারাক্কার কারণে বাংলাদেশ যেমন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং হচ্ছে ভারতও এখন ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। ফলে খুব সম্প্রতি ভারতেও ফারাক্কার বিরুদ্ধে জনমত জোরালো হচ্ছে, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার তো ফারাক্কা ব্যারাজ ভেঙে ফেলারও প্রস্তাব দিয়েছেন। মেধা পাটকরের মতো অ্যাক্টিভিস্ট সহ বিশেষজ্ঞও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসিকে বলছেন, “ভারতেও ফারাক্কা এখন সুবিধার চেয়ে অসুবিধাই বেশি ঘটাচ্ছে – কাজেই এটি অবিলম্বে ‘ডিকমিশন’ করা দরকার।”
১৯৭৪ সালের মাঝামাঝি ভারত গঙ্গার বুকে ফারাক্কা ব্যারাজ চালুর পর থেকে বিতর্ক কখনওই এই প্রকল্পটির পিছু ছাড়েনি। ফারাক্কা থেকে মাত্র বিশ কিলোমিটার দূরে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে যেমন এই ব্যারাজের মারাত্মক রকমের বিরূপ প্রভাব পড়ছে-তেমনি ভারতেও কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে ফারাক্কা নানা ধরনের বিপদ ডেকে এনেছে। বিহারের গাঙ্গেয় অববাহিকায় প্রতি বছরের ভয়াবহ বন্যার জন্য ফারাক্কাকেই দায়ী করা হচ্ছে। ভারতীয় বিশেজ্ঞরা মনে করছে ফারাক্কা বাঁধের প্রভাব খুবই ধ্বংসাত্মক ফলে এই বাঁধ ভেঙ্গে ফেলা উচিত। ক্ষতিকর এই ধরনের বাঁধ ডিকমিশন করার অসংখ্য নজির পৃথিবীতে রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও শতাধিক ড্যাম ভেঙে দিয়ে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।
সাউথ এশিয়া নেটওয়ার্ক অন ড্যামস ও নদী-বিশেষজ্ঞ হিমাংশু ঠক্করও মন্তব্য করেছেন, “’একটা বাঁধ ডিকমিশন করার আগে কয়েকটা বিষয় খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিতে হয় লাভ-ক্ষতির পাল্লাটা কোন দিকে ভারী।” একটি বিষয় স্পষ্ট যে ফারাক্কার মূল উদ্দেশ্য যেটা ছিল সেই কলকাতা বন্দরকে বাচানো, কিন্তু বাঁচানো যায়নি। বরং কলকাতা বন্দর টিঁকিয়ে রাখতে এখন যে পরিমাণ ড্রেজিং করতে হয়, ফারাক্কা চালু হবার পূর্বে এতটা করতে হত না। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুমনা ব্যানার্জিও মনে করেন, “ফারাক্কার জন্য গঙ্গায় এত বেশি পলি জমছে যে তাতে দুপারের জমি ভাঙছে, জনপদ প্লঅবিত হচ্ছে।”
ভারতের বিশেষজ্ঞরাও এখন খোলাখুলিভাবেই বলছেন, “শুধু বাংলাদেশের স্বার্থে নয়, ভারতের জন্যও ফারাক্কা এখন যত না উপযোগী বরং অনেক বেশি ধ্বংস ডেকে আনছে। প্রায় অর্ধশতাব্দীর পুরনো ফারাক্কা ব্যারাজ যে ভারতের আর বিশেষ কোনও কাজে আসছে না, বরং নানা ধরনের পরিবেশগত বিপদ ডেকে আনছে।”
দুঃখের বিষয় হলো, এতো বছর সমাধান হয়নি ফারাক্কা বাঁধের কারণে সৃষ্ট সমস্যা। এখনও ফারাক্কার বিরূপ প্রভাবে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় পানির আধার কমে যাচ্ছে। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু স্পর্শকাতর ভূমিকা রেখেছে এই বাঁধ। ফারাক্কার পানির সুষম বণ্টন নিয়ে হয়েছে চুক্তিও। তারপরেও এখনো, বিশেষ করে খরা মৌসুমে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় দেখা দেয় পানি সংকট। সময় যত গড়াচ্ছে এ সংকট আরো প্রকট হয়ে উঠছে। পানির নায্য হিস্যার জন্য দীর্ঘ ৪দশক এ অঞ্চলের মানুষ বিভিন্ন ভাবে দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু তাতেও সমাধান হয়নি কিছুই।
ফারাক্কা বাঁধ ভারত তৈরি করে কলকাতা বন্দরকে পলি জমা থেকে রক্ষা করার জন্য। সেময়ও বিভিন্ন সমীক্ষায় বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছিলেন যে, “গঙ্গা/পদ্মার মত বিশাল নদীর গতি বাঁধ দিয়ে বিঘ্নিত করলে নদীর উজান এবং ভাটি উভয় অঞ্চলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য মারাত্মকভাবে নষ্ট হতে পারে।” এ ধরণের নেতিবাচক অভিমত দেয়ার পরও শুধুমাত্র পানি নিয়ে রাজনীতিক করার লক্ষেই ভারত সরকার ফারাক্কায় গঙ্গার উপর বাঁধ নির্মাণ ও হুগলী-ভাগরথীতে সংযোগ দেয়ার জন্য ফিডার খাল খননের কাজ শুরু করে। পরবর্তীতে যা মূলত বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার রাজ্যে ব্যাপক পরিবেশ বিপর্যয় ডেকে আনে।
এখন শুধু ফারাক্কাই নয়, উজানে গঙ্গার বহু পয়েন্টে বাঁধ দিয়ে হাজার হাজার কিউসেক পানি প্রত্যাহার করা হচ্ছে। পরিণতিতে ফারাক্কা পয়েন্টে পানির প্রবাহ দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। ভারত তার বহুসংখ্যক সেচ ও পানিবিদ্যুত প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য মূল গঙ্গা এবং এর উপনদীগুলোর ৯০ ভাগ পানি সরিয়ে নিচ্ছে। ফলে নদীতে পানি প্রবাহিত হতে পারছে মাত্র ১০ ভাগ। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক এই নদীতে বাঁধের পর বাঁধ দিয়ে প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করার ফলে মূল গঙ্গা তার উৎস হারিয়ে যেতে বসেছে। অর্ধশতাব্দীর মধ্যে গঙ্গা নদীর প্রবাহ ২০ ভাগ হ্রাস পেয়েছে। সব মিলিয়ে ভারতের নানা উচ্চাভিলাষি কর্মপরিকল্পনার শিকার হয়ে ভাটির দেশ বাংলাদেশ এক ভয়াবহ প্রাকৃতিক ও পরিবেশগত বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে চলেছে। শুধু ফারাক্কা নয়-গঙ্গা-পদ্মাকেন্দ্রিক বাঁধ, জলাধার, ক্রসড্যাম, রেগুলেটরসহ কমপক্ষে ৩৩টি মূল অবকাঠামো নির্মাণ করছে ভারত। এরসঙ্গে রয়েছে আনুষঙ্গিক আরো অসংখ্য ছোট-বড় কাঠামো। ফলে বাংলাদেশের হাজারো প্রতিবাদের পরও ফারাক্কা পয়েন্টে পানি না থাকার ফলে বাংলাদেশ তার ন্যায্য হিস্যা তো দূরে থাক সাধারণ চাহিদাটুকুও পূরণ করতে পারছে না।
দীর্ঘ সময়ব্যাপী বাংলাদেশ সরকার পানি ব্যবস্থাপনার বিষয়ে উদাসীন বলে মনে হচ্ছে। ভারত বাংলাদেশকে কখনও তার ন্যায্য হিস্যা দেবে না এ কথা মনে রেখেই এখন বাংলাদেশকে তার পানি ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা করতে হবে। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ ও দেশীয় বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটা কমিশন গঠন সময়েরও দাবী। তাদের পরামর্শ অনুসারে পরবর্তী সময়ে দীর্ঘ ও স্বল্পমেয়াদি কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে। পানি ব্যবস্থাপনার বিষয়ে উদাসীন থাকলে শেষ পর্যন্ত দেশ বিপদের সম্মুখীন হবে।
তবে পরিস্থিতি বদলাতে পারে যদি সরকার নদী ড্রেজিং করে মাছের উৎপাদন, সেচ-সুবিধাসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের যুগান্তকারী পরিবর্তনে সচেষ্ট হয়। সর্বোপরি প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে পানিচুক্তির সঠিক বাস্তবায়নে সরকার অগ্রণী ভূমিকা নেবে বলে আশা করছেন ভুক্তভোগীরা।
মওলানা ছিলেন চিরপ্রতিবাদী মানুষ। ফারাক্কা লংমার্চ করে তিনি পানি নিয়ে ভারত যে বাংলাদেশের সঙ্গে খেলছে সে বিষয়ে বিশ্ব বিবেককে সজাগ করেছিলেন। অনুরূপ মানবপ্রেমী মানুষ আজ বিরল। তিনি হলেন বাংলার মুকটহীন সম্রাট।
[লেখক : রাজনীতিক ও কলাম লেখক ; মহাসচিব, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ ও আহ্বায়ক, জাতীয় কৃষক-শ্রমিক মুক্তি আন্দোলন]