মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুর :
মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনার মধ্যেও ঈদ বাজারে লোকজনের চলাচলের সুবিধার্থে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে যানজট পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ট্রাফিক বিভাগের তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। লকডাউনে শহরের প্রবেশ পথগুলোতে চেকপোষ্ট ডিউটির পাশাপাশি শহরের যানজট নিরসনে বিরামহীন কাজ করে যাচ্ছেন ট্রাফিক বিভাগের সদস্যরা।
চলতি সপ্তাহে ঈদের বাজার জমে ওঠার সাথে সাথে ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা ও ট্রাফিক সদস্যদের কর্মঘন্টা আরও বাড়ানো হবে। নীলফামারী জেলা ট্রাফিক বিভাগের সৈয়দপুর ট্রাফিক অফিসের সূত্র থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, সৈয়দপুর হচ্ছে আশেপাশের জেলা উপজেলার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর। এ শহরের ওপর দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে। সেই সাথে ব্যবসা প্রসিদ্ধ এ শহরে মানুষজনের আসা যাওয়া বৃদ্ধি পায় এ শহরে। ফলে অন্যান্য সময়ের চাইতে রমজান মাসে মাত্রাতিরিক্ত যানবাহন চলাচল ও মানুষজনের চাপ বাড়ে কয়েকগুণ। এসব বিষয়কে সামনে রেখে সৈয়দপুরের যানজট পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে লকডাউনের কারণে চেক পোস্ট ডিউটির পাশাপাশি শহরের যানজট নিয়ন্ত্রণ রাখতে পালাক্রমে ট্রাফিক কর্মকর্তা ও সদস্যরা বাড়তি ডিউটি করছেন।
সূত্র জানায়, গুরুত্বপূর্ণ সৈয়দপুর উপজেলায় ট্রাফিক কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য ২ জন শহর ও যানবাহন পরিদর্শকের নেতৃত্বে ২১ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করে আসছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন ট্রাফিক সার্জেন্ট ২ জন, শহর উপ-পরিদর্শক ১ জন, সহকারী শহর উপ-
-পরিদর্শক ৬ জন ও ট্রাফিক পুলিশ সদস্য ১০ জন। কিন্তু মহামারি করোনার কারণে লকডাউনে চেকপোস্ট ডিউটির পাশাপাশি ঈদ উপলক্ষে ট্রাফিক বিভাগ বর্তমান জনবল দিয়েই যানজট পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করে যাচ্ছে। সূত্র জানায় ট্রাফিক বিভাগের ২ জন শহর ও যানবাহন পরিদর্শকের নেতৃত্বে যানজট নিরসনে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে মানুষজনের চলাচলের সুবিধার্থে অন্যান্য কর্মকর্তাসহ ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে তাদের দায়িত্ব পালন করছেন। এর মধ্যে শহরের বাসটার্মিনাল, পাঁচমাথা মোড় ও শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কে (শহীদ তুলশীরাম সড়ক-দিনাজপুর রোড মদিনা মোড়), পোস্ট অফিস এলাকার রেলগেটে ট্রাফিক পুলিশ সদস্য পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। প্রতিদিন ২ শিফটে ট্রাফিক সদস্যরা রোদ ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ ও সহযোগিতা করে দায়িত্ব পালন করছেন ট্রাফিক বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তারাও। তারপরেও শহরে যানবাহনের চাপে যানজট পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। আর এ চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। ট্রাফিক বিভাগের সদস্যদের সাথে কথা বলে তারা নানা কষ্টের কথা জানা গেছে।
ট্রাফিক সার্জেন্ট মো. আশরাফ কোরায়শী ও মো. বরকত
জানান, লকডাউনের চেক পোস্ট ডিউটির পরেও কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তারা বলেন যানজট পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিরামহীনভাবে ট্রাফিক পুলিশ সদস্য সড়কে দাঁড়িয়ে তাদের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তারপরেও মাঝে মাঝে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয় স্বীকার করে বলেন স্থানীয় যানবাহন চালকরা ট্রাফিক আইন না মানায় এ সমস্যা হচ্ছে। এদিকে ঈদ উপলক্ষে শহরে মানুষের চাপ বাড়তে থাকায় ট্রাফিক বিভাগ ট্রাফিক সদস্যদের কর্মঘন্টা বাড়ানো হয়েছে। শহর ও যানবাহন পরিদর্শক আবু নাহিদ পারভেজ ও জ্যোতির্ময় রায় স্যারের দিক নির্দেশনায় পুলিশ সদস্যরা পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করছেন।
সূত্র জানায়, ট্রাফিক পুলিশের শহর ও যানবাহন পরিদর্শক আবু নাহিদ পারভেজ চৌধুরী ও জ্যোতির্ময় রায় শহর যানজট মুক্ত রাখতে গোটা এলাকায় টহল অব্যাহত রেখেছেন। ফলে তাদের তৎপরতায় শহরে অসহনীয় যানজট কমে এসেছে। সৈয়দপুরের বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। ট্রাফিক বিভাগের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সৈয়দপুরের সচেতন মহল।
জানতে চাইলে ট্রাফিক বিভাগের যানবাহন পরিদর্শক আবু নাহিদ পারভেজ চৌধুরী বলেন, যানজট পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও মানুষজনের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে ট্রাফিক সদস্যদের কর্মঘন্টা বাড়ানো ¬¬হয়েছে। প্রয়োজনে শহরের যানজট নিরসনে আমরা ২৪ ঘন্টাই দায়িত্ব পালন করবো। তবে যানজট পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে যানবাহন চালকদের ট্রাফিক আইন মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে সৈয়দপুরবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।