খবর৭১ঃ কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক আলোচিত সংগঠন হেফাজতে ইসলামের নতুন আমির হয়েছেন মাওলানা জুনাইদ বাবুনগরী। তিনি সংগঠনটির সাবেক মহাসচিব। আর নতুন মহাসচিব করা হয়েছে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমীকে।
রবিবার দুপুরে হাটহাজারী মাদ্রাসায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সম্মেলনে এই নতুন কমিটি করা হয়।
১৫১ সদস্যের নতুন কমিটিতে সাবেক আমির আল্লামা শফীর ছেলে আনাস মাদানীসহ তার অনুসারী কারও নাম নেই বলে জানা গেছে।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে হাটহাজারী মাদ্রাসায় হেফাজতে ইসলামের প্রতিনিধি সম্মেলন শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা আহমদ শফীর ইন্তেকালে আলোচিত সংগঠনটির আমির পদ শূন্য হয়। তার মৃত্যুর দুই মাস পর উত্তরসূরি নির্বাচন করা হলেও নতুন কমিটিতে স্থান পাননি আল্লামা শফীপন্থীরা। তারা হেফাজতে ইসলামের নতুন কমিটি ঘোষণা করতে পারেন বলে জানা গেছে।
গতকাল চট্টগ্রাম ও ঢাকায় পৃথক সংবাদ সম্মেলন করেছেন আল্লামা শফীপন্থীরা। বাবুনগরীর ডাকা সম্মেলনকে অবৈধ আখ্যায়িত করে একতরফা কমিটি ঘোষণা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। অন্যথায় তারা যেকোনো পদক্ষেপ নিতে বাধ্য থাকবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন।
হেফাজতে ইসলাম ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করলেও ব্যাপক আলোচনায় আসে ২০১৩ সালে। কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে শাহবাগে গড়ে ওঠা গণজাগরণ মঞ্চ থেকে মহানবী ও ইসলামের বিভিন্ন অবমাননার অভিযোগ তুলে ওই বছরের ৬ এপ্রিল ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ করে হেফাজতে ইসলাম। তবে এর এক মাস পর ৫ মে ঢাকা অবরোধ কর্মসূচিতে শাপলা চত্বরে বিপর্যয়ের পর হেফাজতে ইসলাম অনেকটা কোণঠাসা হয়ে যায়। যদিও পরবর্তী সময়ে সরকারের সঙ্গে তাদের সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। পরবর্তী সময়ে বড় কোনো কর্মসূচি নিয়ে হেফাজতকে মাঠে নামতে দেখা যায়নি।
কয়েক বছর ধরে হেফাজতে ইসলামে অভ্যন্তরীণ বিরোধ চলে আসছে। সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক ও আল্লামা শফীপুত্র আনাস মাদানীকেন্দ্রিক একটি বলয় গড়ে উঠে, যারা বাবুনগরীকে অনেকটা কোণঠাসা করে রাখেন। তবে ইন্তেকালের দুই দিন আগে হাটহাজারী মাদ্রাসায় ছাত্রদের ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে আল্লামা শফী পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। নিজ স্বাক্ষরে বহিষ্কার করেন ছেলে আনাস মাদানীকে। এরপর থেকে হাটহাজারী মাদ্রাসায় বাবুনগরী বলয়ের একচ্ছত্র প্রভাব প্রতিষ্ঠিত হয়। এবার হেফাজতে ইসলামেও বাবুনগরীর একচ্ছত্র প্রভাব প্রতিষ্ঠিত হলো। তবে ধর্মীয় ও অরাজনৈতিক এই সংগঠনটির ভাঙন শেষ পর্যন্ত ঠেকানো যাবে কি না সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েছে সংশ্লিষ্টদের।
নতুন কমিটিতে দায়িত্ব পেলেন যারা
সম্মেলনের সভাপতি হেফাজতের সিনিয়র নায়েবে আমিরের পক্ষে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের (বেফাক) মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক নতুন কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন। কমিটিতে দায়িত্ব পাওয়া অন্যরা হলেন:
যুগ্মমহাসচিব- মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা লোকমান হাকিম, মাওলানা নাসির উদ্দিন মুনির।
সহকারী মহাসচিব- মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী, মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন খুলনা, মাওলানা খুরশিদ আলম কাসেমী, মাওলানা মনঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মাওলানা আব্দুল বাসেত খান, মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী, মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফাতেহপুরী, মাওলানা মুফতি আজহারুল ইসলাম, মুফতি রহিমুল্লাহ কাসেমী, মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজি, মাওলানা মূসা বিন ইজহার, মাওলানা জাফর আহমদ ভাটুয়া, মাওলানা হাবিবুল্লাহ আজাদী, মাওলানা শফিক উদ্দিন, মাওলানা জসিমুদ্দিন লালবাগ, মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমাদ, মাওলানা হাসান জামিল।
সাংগঠনিক সম্পাদক- মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক- মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজী, মাওলানা মাসউদুল করীম টঙ্গী, মাওলানা মীর মুহাম্মদ ইদ্রিস, মাওলানা শামসুল ইসলাম জিলানী, মুফতি ওমর ফারুক, মাওলানা আতাউল্লাহ আমেনী ঢাকা, মাওলানা আফিমুল হক হবিগঞ্জ, মাহমুদুল আলম রংপুর।
অর্থ সম্পাদক- মুফতি মুনির হোসাইন কাসেমী, সহকারী অর্থ সম্পাদক- মাওলানা হাফেজ মুহাম্মদ ফয়সাল, মাওলানা লোকমান মাজহারী, মাওলানা মুহাম্মদ আহসান উল্লাহ, মাওলানা মুহাম্মদ ইলিয়াস হামেদী।
প্রচার সম্পাদক- মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়জী, সহকারী প্রচার সম্পাদক- মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াকুম ওসমানী, মাওলানা ফয়সাল আহমদ মোহাম্মদপুর ঢাকা, মুফতি শরীফুল্লাহ, মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান নারায়ণগঞ্জ, হাফেজ সায়েম উল্লাহ।
শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক- মুফতি হারুন ইজহার। সহকারী শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক- মাওলানা জুনায়েদ বিন জালাল। সাহিত্য ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক- মাওলানা হারুন আজিজী নদভী, মাওলানা মাহবুবুর রহমান হামিদ। সমাজ কল্যাণ সম্পাদক- মুফতি কুতুবুদ্দিন নানুপুরী, সহকারী সমাজ কল্যাণ সম্পাদক, মাওলানা হাফেজ সালামত উল্লাহ।
আইন বিষয়ক সম্পাদক- অ্যাডভোকেট মাওলানা শাহিনুর পাশা চৌধুরী (সাবেক এমপি), সহকারী আইন বিষয়ক সম্পাদক- অ্যাডভোকেট নিজামুদ্দিন।
দাওয়াহ সম্পাদক- মাওলানা নাজমুল হাসান, সহকারী দাওয়াহ সম্পাদক- মাওলানা মুশতাকুন্নবী, আহমদ আলী কাসেমী। তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক- মাওলানা উবায়দুর রহামান খান নদভী।
ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক- মুফতি মুহাম্মদ আলী। সহকারী ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক- মাওলানা জাকারিয়া মাদানী, মাওলানা গাজী ইয়াকুব। ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক- মাওলানা হাফেজ মুহাম্মদ খুবায়েব। সহকারী ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক- মাওলানা জিয়াউল হুসাইন।
আন্তর্জাতিক সম্পাদক- হেলাল উদ্দিন নানুপুরী, সহকারী আন্তর্জাতিক সম্পাদক- আনোয়া শাহ আজহারী, আব্দুল কাদের সালেহ লন্ডন, মাওলানা আব্দুস সালাম পাটওয়ারী, মাওলানা শুয়াইব আহমদ, মাওলানা রফিক আহমদ নিউয়ার্ক, মাওলানা গোলাম কিবরিয়া লন্ডন।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক- মাওলানা ড. নুরুল আবছার আজহারী, সহকারী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক- মুফতি হুমায়ুন কবির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। দপ্তর সম্পাদক- মাওলানা হাফেজ মুহাম্মদ তৈয়ব, সহকারী, দপ্তর সম্পাদক- আবু তাহের ওসমানী, মাওলানা সিদ্দিকুল ইসলাম তোফায়েল।
সদস্য- মাওলানা আবু তাহের নদভী পটিয়া, মুফতি কেফায়েত উল্লাহ হাটহাজারী, মাওলানা আজিজুল হক আল মাদানী, মাওলানা আলী ওসমান, মুফতি বশিরুল্লাহ, মুহাম্মদ শফি বভুয়া, আবুল হোসাইন সাতকানিয়া, হাফেজ ইলিয়াস হামেদী, আনওয়ারুল আলম চিরিঙ্গা, শেখ মুজিবুর রহমান, আব্দুর রহমান কাসেমী বিবাড়িয়া, কারী জহিরুল ইসলাম, জামিল আহমদ চৌধুরী মৌলভীবাজার, বশির আহমদ মুন্সীগঞ্জ, তাফাজ্জুল হক আজিজ সুনামগঞ্জ, আলী আকবর সাভার, আবু আব্দুর রহিম নরসিংদী, আব্দুল কুদ্দুস মানিকনগর, মুফতি আবু সাঈদ ফরিদাবাদ মাদরাসা, এনামুল হক আলমাদানী, আব্দুল মুবিন, মুহাম্মদ উল্লাহ জামি, রফিকুল ইসলাম মাদানী, হাফেজ শুয়াইব মাক্কি, নূর হুসাইন নুরানী, মাওলানা আব্দুল মান্নান আম্বরশাহ, মাওলানা হাবিবুল্লাহ মাহমুদ কাসেমী, মাওলানা রাশেদ বিন নূর, মাওলানা সাঈদ নূর।