খবর৭১ঃ বাংলাদেশে নতুন করে আরও একজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। এছাড়া এক চিকিৎসক ও নার্সসহ নতুন করে চারজন সুস্থ হয়েছেন।
সোমবার সংস্থাটির পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা অনলাইনে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান। সংবাদ সম্মেলনে গত ২৪ ঘণ্টার করোনার সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়।
মীরজাদী সেব্রিনা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৫৩ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১ হাজার ৩৩৮ জনের। যাদের নতুন করে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে, তাদের মধ্যে একজন করোনায় আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছেন। তার বয়স ২০ বছর। তিনি একজন নারী। তাকে নিয়ে দেশে ৪৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
আইইডিসিআর এর পরিচালক জানান, আগে থেকে যারা আক্রান্ত ছিলেন তাদের মধ্যে আরও চারজন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। ফলে মোট সুস্থ হয়েছেন ১৯ জন। নতুন যারা সুস্থ হয়েছেন তাদের মধ্যে ৮০ বছরের একজন বৃদ্ধও রয়েছেন। এছাড়া সুস্থদের মধ্যে একজন চিকিৎসক ও একজন নার্সও রয়েছেন।
সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, গত দুই দিন রোগী না পাওয়ার খবরে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘরের বাইরে মানুষ বের হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। একদিন রোগী শনাক্ত না হলে বাংলাদেশ করোনামুক্ত মনে করার কোনো কারণ নেই। তাই সবাইকে আমাদের পরামর্শ মেনে ঘরে থাকতে হবে।
ব্রিফিংয়ের শুরুতে বিশ্ব পরিস্থিতি তুলে ধরেন ডা. ফ্লোরা। তুলে ধরেন করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে ঘরে থাকাসহ প্রয়োজনীয় করণীয়ও।
আইইডিসিআরের পরিচালক জানান, ১০ দিনের জন্য আমরা সামাজিক বিচ্ছিন্নকরণের যে কার্যক্রম শুরু করেছি তা সবাইকে মেনে চলতে হবে। সবাইকে ঘরে থাকতে হবে। অত্যাবশ্যক কাজ থাকলে মাস্ক পড়ে ঘর থেকে বের হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
কারও মধ্যে করোনার উপসর্গ দেখা দিয়ে তাকে হাসপাতালে না গিয়ে হটলাইনে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন সেব্রিনা।
দেশে ২৬ হাজারের বেশি মানুষ কোয়ারেন্টাইনে আছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
গত ডিসেম্বরের শেষ দিন চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। সেখানে ভয়াবহ তাণ্ডব চালানোর পর বিশ্বের ২০০টির মতো দেশে ছড়ায় প্রাণঘাতী ভাইরাসটি। ইতোমধ্যে সারা বিশ্বে ৩৪ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। আক্রান্ত হয়েছেন সাত লাখ।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে তিনজনকে শনাক্ত করা হয়। তখন বলা হয়, এই তিনজনের মধ্যে দুজন ইতালি থেকে সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন। তাদের কাছ থেকে একজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এরপর দেশে আরও ৪৫ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত করা হয়।
গত ১৮ মার্চ দেশে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। এরপর আরও চারজন অচেনা ভাইরাসটিতে মারা যান।