সৈয়দপুর পৌরসভার দৃষ্টিনন্দন কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ

0
714
সৈয়দপুর পৌরসভার দৃষ্টিনন্দন কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ

মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুর :
সামাজিক সাংস্কৃতিকসহ যেকোন অনুষ্ঠান সম্পন্নের জন্য সৈয়দপুর পৌরসভার কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। বর্তমানে চলছে সাজসজ্জার কাজ। প্রায় ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধায় গড়ে ওঠা নির্মিত ওই কমিউনিটি সেন্টারটি আগামী এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করা হবে। এমন তথ্যে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির সাথে কথা বলে।

সৈয়দপুর পৌরসভার সূত্র জানায়, কোন ধরণের অনুষ্ঠান সম্পন্নের জন্য সৈয়দপুর পৌরসভার ছিলনা নিজস্ব কমিউনিটি সেন্টার। ফলে ব্যক্তি মালিকানার কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়ে আসছে। দীর্ঘদিন ধরে আয়োজকদের গুণতে হচ্ছে বাড়তি টাকা। এ নিয়ে পৌরবাসীর দাবি ছিল একটি পৌর কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণের। পৌর পরিষদ ও পৌরবাসীর দাবির প্রতি সম্মান দেখিয়ে প্রতিটি বাজেটে কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণে অর্থ বরাদ্দ রাখতো। কিন্তু দাতা সংস্থার তেমন সাড়া মিলছিল না এটি নির্মাণে। তবে আশার আলো দেখায় বিশ্বব্যাংক। এটি নির্মাণে অর্থ সহায়তা দেয় ওই সংস্থাটি। ফলে বিশ্বব্যাংকের সকল নির্দেশনা মেনে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করে কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণে দরপত্র আহ্বান করা হয় ২০১৮ সালে। ওই দরপত্রে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধায় পাঁচতলা বিশিষ্ট কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণে কার্যাদেশ পায় ঢাকার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টেকবে ইন্টারন্যাশনাল। মিউনিসিপ্যাল গভর্নেন্স এন্ড সার্ভিসেস প্রজেক্টের (এমজিএসপি) আওতায় এটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ কোটি ৭১ লাখ ১৮ হাজার ৩২৫ টাকা। বাংলাদেশ সরকার ও দাতা সংস্থা আইডিএ এটির অর্থায়ন করছে।
নতুন বাবুপাড়াস্থ সৈয়দপুর পৌরসভার পাশে সাবেক টাউন হলের স্থানে ২০১৮ সালের শেষ দিকে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। পাঁচতলা বিশিষ্ট এ কমিউনিটি সেন্টারের নিচতলায় রয়েছে সম্মেলন কক্ষ, ২য় ও ৩য় তলায় কমিউনিটি সেন্টার, ৪র্থ তলায় বিভিন্ন সাইজের ৮টি গেস্ট রুম ও ৫ম তলায় পৌর পাঠাগার। এ কমিউনিটি সেন্টারে থাকবে লিফট এর ব্যবস্থা। দৃষ্টিনন্দন বিশাল এ কমিউনিটি সেন্টারে রয়েছে পর্যাপ্ত জায়গার পার্কি জোন।

ইতিমধ্যে ভবনের সকল কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে চলছে সাজসজ্জার কাজ। প্রতিটি তলায় উন্নতমানের টাইলস, ইলেকট্রিক পণ্যসহ অন্যান্য উপকরণ বসানো হয়েছে। কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মো. শাহনেওয়াজ হোসেন শানুর সাথে এ প্রসঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে অত্যাধুনিক মানের কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণে পৌরসভা ও এমজিএসপির সকল শর্ত মানা হয়েছে। কাজের গুণগত মান যাচাই করতে বিশ্বব্যাংক ও এলজিইডি’র প্রতিনিধি দল প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে নির্মাণ কাজের সার্বিক বিষয়ে প্রশংসা করেছেন। নির্মিত কমিউনিটি সেন্টারের সাজসজ্জা শেষে আগামী এপ্রিল মাসে পৌরসভাকে হস্তান্তর করা হবে।
জানতে চাইলে সৈয়দপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আইয়ুব আলী বলেন, দৃষ্টিনন্দন কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণে যাতে কোন অনিয়ম না হয় সেজন্য সর্বদা তদারকি করা হয়েছে। ভবন তৈরীর প্রতিটি উপকরণ পরীক্ষা শেষে কাজের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এক বছর চুক্তির কাজ সম্পন্ন করতে কেন দেরী হয়েছে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন বর্ষা মওসুমের কারণে এবং ভবনের কিছুটা নকশা জটিলতা থাকায় একটু সময় লেগেছে। তাই এটি নির্মাণে সময় বাড়ানো হয়েছে। ওই বাড়তি সময়ের মধ্যেই কাজ সম্পন্ন করা হবে।
সৈয়দপুর পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত প্যানেল মেয়র মো. জিয়াউল হক জিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সৈয়দপুরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল পৌরসভার নিজস্ব কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ। পৌরবাসীর এমন দাবির প্রতি সম্মান দেখিয়ে পৌর মেয়র মো. আমজাদ হোসেন সরকারের সার্বিক চেষ্টায় বিশ্বব্যাংক দৃষ্টিনন্দন কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণে অর্থ সহায়তা দিয়েছে। ফলে পৌরবাসীর স্বপ্নের কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ হয়েছে। যা এখন পৌরসভার সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। তিনি বলেন পৌরসভায় হস্তান্তরের পর আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করা হবে। এর ফলে পৌরবাসী বিভিন্ন অনুষ্ঠান স্বল্প খরচে সম্পন্ন করতে পারবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here