খবর৭১ঃ টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীদের শিবির থেকে বেরিয়ে যাওয়া আটকাতে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের কাজ চলার তথ্য জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি দুর্বল হয়নি। তাদের ওপর আরও নজরদারি বাড়াতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চারপাশে ওয়াচ টাওয়ার ও সিসি ক্যামেরা বসানো হবে।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে কোস্টগার্ড সদর দফতরে বাহিনীটির রজতজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
কোস্টগার্ডের রজতজয়ন্তীতে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নৌ বাহিনী প্রধান এডমিরাল আওরঙ্গজেব চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন, পুলিশের আইজি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, কোস্টগার্ড মহাপরিচালক রিয়ার এডমিরাল এম আশরাফুল হক, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম, র্যা বের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, এনটিএমসি পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জিয়াউল আহসানসহ শীর্ষ কর্মকর্তাবৃন্দ।
রোহিঙ্গাদের ওপর নজরদারি দুর্বল হয়ে পড়েছে কিনা, যার কারণে সমুদ্রপথে রোহিঙ্গারা নৌকায় মালয়েশিয়া যাচ্ছিল জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘মোটেও রোহিঙ্গাদের ওপর নজরদারি দুর্বল হয়নি। সেখানে ১১ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে, যা টেকনাফের জনগণের ৩ গুণ। তাদের নজরদারিতে পুলিশ, র্যা ব, বিজিবি, আনসারসহ সব বাহিনী কাজ করছে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রোহিঙ্গা শিবিরে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সেই কাজ এখন চলছে। রোহিঙ্গাদের ওপর নজরদারি আরও শক্তিশালী করতে ওয়াচ টাওয়ার এবং ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে। তারা যেন বের হতে না পারে সে জন্য আমাদের সকল বাহিনী তৈরি রয়েছে।’
কোস্টগার্ড প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোস্টগার্ড এখন আর ঠুঁটো জগন্নাথ নেই। এটি একটি শক্তিশালী বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। জাহাজ-স্পিডবোট নিয়ে সমুদ্রসীমায় চোরাচালন রোধ, অবৈধ মৎস্য আহরণ প্রতিরোধসহ বিভিন্ন অপরাধ নিয়ন্ত্রণে বাহিনীটি কাজ করে যাচ্ছে। পরিবেশ সুরক্ষার জন্যও কোস্টগার্ড কাজ করে যাচ্ছে।
এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কোস্টগার্ডের উন্নয়ন ও অপারেশনে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ৪০ জনকে বর্তমান সরকার প্রবর্তিত বাংলাদেশ কোস্টগার্ড পদক, প্রেসিডেন্ট কোস্টগার্ড পদক, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড (সেবা) পদক ও প্রেসিডেন্ট কোস্টগার্ড (সেবা) পদক বিতরণ করেন।
অনুষ্ঠানে কোস্টগার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার এডমিরাল এম আশরাফুল হক বলেন, এ বাহিনীর নিরলস প্রচেষ্টায় চট্টগ্রাম বন্দরে চুরি ডাকাতি শূন্যের কোঠায় নেমেছে যা আন্তর্জাতিক সংস্থা ReCAAP এর রির্পোটে স্বীকার করেছে। ২০১৯ সালে ১৯শ কোটি টাকার অবৈধ দ্রব্যাদি আটক করেছে কোস্টগার্ড। বনজ সম্পদ রক্ষায় ২ কোটি টাকা সমমূল্যের বিভিন্ন প্রকার চোরাকারবারি মালামাল জব্দ করেছে। উপকূলীয় এলাকায় জীববৈচিত্র রক্ষা, ইলিশ রক্ষায় কাজ করেছে কোস্টগার্ড। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় ও বাহিনীর সকল সদস্য দেশপ্রেমের চেতনা সমুন্নত রেখে তাদের অটুট মনোবল, নিরলস কর্মস্পৃহা ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ভিশন ‘ব্লু ইকোনমি’ এবং রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যেতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।