সৈয়দপুরে পচানাল খালের দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু

0
655
সৈয়দপুরে পচানাল খালের দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু

মিজানুর রহমান মিলন,সৈয়দপুর:
সারাদেশে একযোগে নদ-নদী, খাল, জলায়শসহ অন্যান্য সরকারি জলাধার তীরবর্তী অবৈধ স্থাপনা ও দখল উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। গতকাল (সোমবার) ওই উচ্ছেদ অভিযানের অংশ হিসেবে নীলফামারীর সৈয়দপুরে পঁচানালা খালের দুই পাশ দখল করে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা ও দখল উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়।অভিযানের প্রথমদিনে গতকাল পঁচানালা খালের দুই পাশে অবৈধ দখলে রাখা ৭৬টির মধ্যে ১০/১২টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। নীলফামারী জেলা প্রশাসকের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সৈয়দপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) পরিমল কুমার সরকারের নেতৃত্বে ওই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। সৈয়দপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ২০০ বছর আগে জমিদার পঁচা সরকার খালটি খনন করেন। সেই থেকে খালটি পঁচানালা নামে পরিচিত হয়েছে। এলাকার সেচ সংকট ও বর্ষার পানি নিষ্কাশনের জন্য মূলতঃ খালটি খনন করা হয়। এ খালটি নীলফামারীর সদর উপজেলার সংগলশী ইউনিয়ন থেকে সৈয়দপুর শহর ঘেঁষে রংপুরের বদরগঞ্জ পর্যন্ত গিয়ে চিকলী নদীতে মিশেছে। ওই পচানালা খালটির দৈর্ঘ্য প্রায় ২২ কিলোমিটার। কিন্তু দীর্ঘদিন যাবৎ সেটি সংস্কার কিংবা খনন হয়নি। উপরন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঠিক নজরদারি অভাবে পঁচানালা খালের পাড় দখল করে দিনের পর দিন অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। খালের জায়গা দখল করে কাঁচা,আধাপাকা ও পাকা অবকাঠামো তৈরি করেছে একটি মহল।

সৈয়দপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের তালিকায় দেখা গেছে পঁচানালা খাল দখল করে ৮৪টি অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। এরমধ্যে সৈয়দপুর উপজেলার অংশে ৭৬টি এবং রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার অংশে ৮টি অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। এসব অবৈধ স্থাপনা মালিকদের তাদের স্থাপনা সরিয়ে নিতে একাধিকবার নোটিশও প্রদান করা হয়। কিন্তু সে নোটিশের কোন তোয়াক্কা করেনি দখলদারা। গত রবিবার পর্যন্ত অবৈধ দখলদাররা তাদের অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেয়নি। সেই সঙ্গে পঁচানালা খালের ৮৪ জন অবৈধ দখলদারের একটি তালিকা নীলফামারী ও রংপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে দেওয়া হয়। গতকাল সোমবার থেকে গোটা দেশে একযোগে নদ-নদী, খাল, জলায়শসহ অন্যান্য সরকারি জলাধার তীরবর্তী অবৈধ স্থাপনা ও দখল উচ্ছেদ অভিযান শুরু হলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া তালিকার সুত্র ধরে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে সৈয়দপুরে পঁচানালা খালের দুই পাশ দখল করে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা ও দখল উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
সৈয়দপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিমল কুমার সরকারের নেতৃত্বে পঁচানালা খালের দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা ও দখলদার উচ্ছেদ অভিযানে অবৈধ দখলদারদের তালিকা ধরে গতকাল উচ্ছেদ অভিযানের প্রথম দিনে শহরের উপকন্ঠে ‘পাতাকুঁড়ি’ নামের বিনোদন পাকের মালিক ঠিকাদার আলহাজ্ব মো. জয়নাল আবেদীন কর্তৃক পচানালা খালের জায়গায় অবৈধভাবে গড়ে তোলা পাকা সীমানা প্রাচীর বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে আরও বেশ কয়েকটি অবৈধ স্থাপনা ও দখলদার উচ্ছেদ করা হয়েছে।

অভিযান চলাকালে সৈয়দপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কৃষ্ণ কমল চন্দ্র সরকার, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম, উপ-সহকারি প্রকৌশলী,শাখা কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমানসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও সৈয়দপুর থানা পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সৈয়দপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিমল কুমার সরকার বলেন, নীলফামারী জেলা প্রশাসকের নির্দেশে পচানালা খালের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। ওই তালিকায় থাকা সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহতভাবে চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here