পৌষের শীতে সৈয়দপুরের জনজীবন বিপর্যস্ত

0
900
পৌষের শীতে সৈয়দপুরের জনজীবন বিপর্যস্ত

মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুরঃ হাঁড় কাঁপানো ঠান্ডা, ঘন কুয়াশা আর কনকনে হিমেল বাতাসে হাজার হাজার দুস্থ, অসহায় মানুষ নিদারুন কষ্টে পড়েছেন। শীতবস্ত্রের অভাবে চরম বেকায় পড়েছে মানুষজন। এদিকে, ঘন কুয়াশার কারণে সৈয়দপুর- ঢাকা- সৈয়দপুর রুটের সবকটি বিমানের ফ্লাইট সিডিউলে মেনে চলাচলে ব্যাহত হচ্ছে।

সৈয়দপুর বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, এই রুটে প্রতিদিন বাংলাদেশ বিমানের দুইটি ছাড়াও বেসরকারি বিমান সংস্থাসহ ১০টি ফ্লাইট চলাচল করে আসছে । পৌষের শুরু থেকে প্রচন্ড শীত অনুভূত হওয়ায় সৈয়দপুরসহ আশপাশের এলাকায় জনজীবন বিপর্যস্তয়ে পড়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সৈয়দপুরে সর্বনিম্ন ১০ ডিগ্রী এবং সর্বোচ্চ ১৮ দশমিক ২ ডিগ্রী তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এটিই এবারে শীত মৌসুমে এখানকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এ তাপমাত্রা আজ থেকে আরও কমতে পারে বলে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস সুত্রে জানা গেছে। এবারে তীব্র শীতের প্রকোপে মানুষ প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। শরীরে হুঁল ফোটানো শীতে শিশু, বয়স্ক মানুষগুলো একেবারে কাহিল হয়ে পড়েছে। শীত প্রকোপে বিশেষ করে শ্বাষকষ্ট, এ্যাজমা আক্রান্তরা কষ্ট পাচ্ছেন। আর এসব আক্রান্ত রোগীরা হাসপাতালে বেশি ভর্তি হচ্ছে। এছাড়াও সর্দি জ্বর, কাশি ও ডায়রিয়ায় আক্রান্তরা হাসপাতালে ছুটে আসছে। তবে গতকাল পর্যন্ত এ সব রোগে কতজন মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তা সঠিক সংখ্যা পাওয়া যায়নি।

তীব্র শীতে বেশি কষ্ট পোহাচ্ছেন দুস্থ, অসহায় ও শহরের ছিন্নমুল মানুষগুলো। প্রতি বছর শীত মৌসুমে সরকারি ছাড়াও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দুস্থ, গরীব ও ছিন্নমুল মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন। কিন্তু এ বছর শীতবস্ত্র বিতরণ একেবারে কম।

সৈয়দপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আবু হাসনাত সরকার জানান, গতকাল পর্যন্ত সরকারিভাবে দুই দফায় তিন হাজার ৪৬০ পিস কম্বল বরাদ্দ মিলেছে। যা ইতোমধ্যে ইউপি ও পৌরসভার জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে শীতার্তদের মাঝে বন্টন করা হয়েছে। তিনি জানান, দুস্থ ও অসহায় মানুষের জন্য আরো ছয় হাজার পিস কম্বলের জন্য দুর্যোগ, ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। চাহিদা থেকে কত পিস শীতবস্ত্র কিংবা কবে নাগাদ চাহিদাকৃত শীতবস্ত্র মিলবে তাও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
এদিকে, উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় পুরাতন কাপড়ের মার্কেট সৈয়দপুরে। গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে ওই সৈয়দপুর শহরের শহীদ সামসুল হক সড়কের শীতবস্ত্র মার্কেটে ও রেলওয়ে লাইনের পুরাতন কাপড়ের দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে একটি শীতবস্ত্র সংগ্রহে মানুষ ভীড় করছেন। কিন্তু এ সবের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। তীব্র শীত পড়ায় এবং মানুষের উপস্থিতি বেশি দেখে গরম কাপড়ের ব্যবসায়ী দাম অপেক্ষাকৃত বেশি হাঁকছে। ফলে দুস্থ ও অসহায় গরীব মানুষ এ সব গরম কাপড় সংগ্রহে ব্যর্থ হচ্ছে।
গতকাল পুরাতন কাপড় মার্কেটে মেয়ের জন্য সোয়েটার সংগ্রহে এসেছেন উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউপির চওড়া এলাকা থেকে সালমা নামে এক গৃহবধু। তিনি বলেন, গরম কাপড়ের যে মূল্য চাচ্ছেন দোকানিরা তাতে সামর্থ্যে কুলাচ্ছেনা। অন্যান্য বছর যে পুরাতন সোয়েটার ৮০/৯০ টাকা কিনেছি। এবারে তাঁর দাম দ্বিগুনের বেশি হাঁকছেন ব্যবসায়ী। পুরাতন কাপড়ের ব্যবসায়ী ইয়াছিন জানান, গরম কাপড়ের বেল্ট প্রতি দাম অনেক বেড়ে গেছে। তাই খুচরা বাজারেও পুরাতন কাপড় বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here