খবর৭১ঃ ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠানে চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে নির্বাচন কমিশনে (ইসি)। আগামী বছর জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে দুই সিটির ভোট করবে ইসি। চলতি সপ্তাহের যে কোনোদিন এ নির্বাচনের তফসিল হতে পারে। এক্ষেত্রে ২৬ ও ৩০ জানুয়ারি ভোট গ্রহণের সম্ভাব্য তারিখ ধরে নির্বাচনী প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
এবার দুই সিটিতে ইভিএম-এ ভোট গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বলেছেন, ঢাকার উত্তর-দক্ষিণ সিটিতে জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচন পেছানোর সুযোগ নেই।
ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, গত ১৪ নভেম্বর থেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে নির্বাচন উপযোগী হয়েছে। গত ১৮ নভেম্বর থেকে নির্বাচন উপযোগী হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটিও। ঢাকার সিটি ভোট নিয়ে নির্বাচন কমিশন যেমন পূর্ণপ্রস্তুতি নিচ্ছে, তেমনি বসে নেই রাজনৈতিক দলগুলোও। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে চলছে নির্বাচনী প্রচারণা। পোস্টার বিলবোর্ডে দেওয়া হচ্ছে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি।
আওয়ামী লীগের পাশাপাশি বিএনপিও প্রার্থী চূড়ান্তকরণের কাজ এগিয়ে রাখছে। ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ সিটির বিভিন্ন ওয়ার্ডে জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় পার্টিও প্রার্থী বাছাই করছে। নির্বাচন কমিশন ভোটের তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রার্থী ঘোষণা করবে। জানা গেছে, মেয়র পদে দুই সিটিতেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। এখন অপেক্ষা আনুষ্ঠানিক ঘোষণার জানা গেছে, নির্বাচন কমিশন ভোট কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করেছে। ভোট কেন্দ্রের তালিকাও প্রস্তুত রাখছেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা।
ইসি পরে আনুষ্ঠানিকভাবে কেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ করবে। এ ছাড়া নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেল প্রস্তুত করার নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নির্দেশনায় বলা হয়েছে-আসন্ন ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ সিটি নির্বাচনের লক্ষ্যে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারের প্যানেল প্রস্তুত এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের তালিকা তৈরির জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা এবং সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানকে জরুরি ভিত্তিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীর তালিকা সরবরাহের জন্য চিঠি দিতে বলা হয়ছে। এক্ষেত্রে বিতর্কিত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করার কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, সব কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতেও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দুই সিটিতে প্রায় আড়াই হাজার ভোট কেন্দ্র রয়েছে। ভোটকক্ষ রয়েছে প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার। এ জন্য প্রায় ১৫ হাজার ইভিএম প্রয়োজন হবে। প্রয়োজনীয় মেশিন কমিশনের সংগ্রহে রয়েছে। এবারে সিটির ভোটে ইভিএম ব্যবহারের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন দুই সিটির ২০ জন আইসিটির শিক্ষক।
তাদের ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে বিভিন্ন প্রশিক্ষণও দেবে কমিশন। ঢাকা উত্তর সিটিতে ভোটার সংখ্যা রয়েছেন ৩০ লাখ ৩৫ হাজার ৬২১ জন। সাধারণ ওয়ার্ড ৫৪টি এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড ১৮টি। সম্ভাব্য ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১৩৪৯টি, ভোটকক্ষের সংখ্যা ৭৫১৬টি। আর দক্ষিণ সিটিতে ভোটার রয়েছেন ২৩ লাখ ৬৭ হাজার ৪৮৮ জন। সাধারণ ওয়ার্ড ৭৫টি এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড ২৫টি। সম্ভাব্য ভোট কেন্দ্র ১১২৪ এবং ভোটকক্ষের সংখ্যা ৫৯৯৮টি।