বিদ্যুৎ জ্বালানির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ৯ কৌশল

0
504
বিদ্যুৎ জ্বালানির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ৯ কৌশল

খবর৭১ঃ ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হওয়ার স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। সে সময়ে ব্যাপক হারে বাড়বে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির চাহিদা। এ খাতে প্রয়োজন হবে টেকসই ব্যবস্থাপনার। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় ৯ কৌশল নিচ্ছে সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি)। তা যুক্ত হবে ‘প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১’-এ।

খসড়া পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, যে সময় আসছে, বাংলাদেশকে দ্রুত ও রূপান্তরধর্মী পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। এর সঙ্গে মানিয়ে চলতে টেকসই জ্বালানির বিকল্প থাকবে না। এজন্য বেশকিছু কৌশল ও নীতি গ্রহণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে- ন্যূনতম ব্যয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন। স্বল্পমূল্যে প্রাথমিক জ্বালানি সরবরাহ। প্রাথমিক জ্বালানির জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ। উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণের মধ্যে বিনিয়োগ ভারসাম্য নিশ্চিতকরণ। প্রতিষ্ঠিত সক্ষমতার দক্ষ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ। জ্বালানিতে বেসরকারি বিনিয়োগ উৎসাহিত করা। বিদ্যুৎ বাণিজ্যের অধিকতর বিস্তার। জ্বালানির উপযুক্ত মূল্য নির্ধারণ-নীতি নিশ্চিতকরণ এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করা।

জানতে চাইলে জিইডির সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম শনিবার যুগান্তরকে বলেন, বাংলাদেশের আজকের যে উন্নতি তার অন্যতম কারণ হচ্ছে পরিকল্পনা। অর্থাৎ পরিকল্পিতভাবে অর্থনীতিকে পরিচালনার ফল হচ্ছে এ উন্নয়ন। ২০০৯ সালের পর থেকে শুধু পরিকল্পনা তৈরিই নয়, সে অনুযায়ী জাতীয় বাজেট তৈরি এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নও করা হয়েছে। সে ধারাবাহিকতায় ২০৪১ সালে উন্নত দেশে যাওয়ার যে লক্ষ্য রয়েছে তা বাস্তবায়নে তৈরি করা হচ্ছে ‘দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১’। এ পরিকল্পনার মাধ্যমে উচ্চ আয়ের অর্থনীতিতে যাওয়া হবে। তাই সেই সময়ে জিডিপি প্রবৃদ্ধির মূল নিয়ামক বিদ্যুৎ ও জ্বালানির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নতুন নতুন কৌশলের বিকল্প নেই। সে বিষয়টি মাথায় রেখেই পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

এক প্রশ্নের উত্তরে শামসুল আলম বলেন, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দীর্ঘমেয়াদি এ পরিকল্পনাটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকের মধ্য দিয়ে তা অনুমোদন দেবেন প্রধানমন্ত্রী ও এনইসি চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।

খসড়ায় বলা হয়েছে, ২০২১ থেকে ২০৪১ সালে নির্ধারিত বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজন হবে ৯২ হাজার মেগাওয়াটের বিশাল স্থাপনা। যার বার্ষিক গড় প্রবৃদ্ধি হবে ৪ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট। তাই পরিকল্পনায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি কৌশলের মূল লক্ষ্য হবে নতুন চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিদ্যমান চাহিদা-ব্যবধানের অবসান ঘটানো। অভিজ্ঞতার আলোকে বিদ্যুৎ বিস্তার কৌশল গ্রহণ করা হবে। ৫ বছর অন্তর তা হালনাগাদ করা হবে।

দেশের সব অংশ যাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণের সুফল ভোগ করতে পারে এবং শতভাগ বিদ্যুতায়নের লক্ষ্য অর্জন হয়- তা নিশ্চিত করতে সঞ্চালন ও বিতরণে উপযুক্ত বিনিয়োগ করা হবে। এমন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে যাতে কোনোভাবেই উৎপাদিত বিদ্যুৎ অব্যবহৃত না থাকে বা সামর্থ্যরে অপচয় না হয়। বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণে বেসরকারি খাতের সম্পৃক্তি আরও নিবিড় ও বিস্তৃত করা হবে।

প্রতিবেশী তিন দেশ থেকে প্রতিযোগিতামূলক দামে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিদ্যুৎ বাণিজ্যের সুবিধা নেয়া হবে। কোনো দুর্ঘটনায় ব্যাহত বিদ্যুৎ সরবরাহের ঝুঁকি হ্রাসে ভুটান ও নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি সহায়ক হবে। এ ছাড়া পুনর্বায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের বিষয়েও বিশেষ নজর দেয়া হচ্ছে।

পরিকল্পনায় বিদ্যুৎ পরিস্থিতি সম্পর্কে বলা হয়েছে, ২০১০ থেকে ২০১৮ সালে বছরে ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ হারে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে উৎপাদনের সামর্থ্য চারগুণ বৃদ্ধি পেয়ে ২০ হাজার মেগাওয়াটের বেশি হয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগের চলমান গতি অব্যাহত থাকলে ২০২১ সালের মধ্যে সংযোগ শতভাগে দাঁড়াবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here