খবর৭১ঃ
যেখানে অনিয়ম-দুর্নীতি আছে, সেখানেই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতিসংঘ অধিবেশনের ফাঁকে নিউইয়র্কে ভয়েস অব আমেরিকাকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। মঙ্গলবার রাতে সাক্ষাত্কারটি প্রচার করে সংবাদমাধ্যমটি।
দুর্নীতি বিরোধী চলমান অভিযান প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা দিয়ে সন্ত্রাস দমন করেছি। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে জনগণকে সম্পৃক্ত করেছি। জঙ্গিবাদ দমনের সঙ্গে সঙ্গে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করি। সেইসঙ্গে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করি। যতটুকু উন্নয়নমূলক কাজ করছি বা বরাদ্দ দিচ্ছি যথাযথভাবে সেটা যদি কাজে লাগাতে পারি, তাহলে দেশের আরও উন্নতি হবে। সেই উন্নতিটা টেকসই হবে। সমাজের বৈষম্য দূর হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চিন্তা করলাম কোথায় একটি কিন্তু রয়ে গেছে। সেটা আমাকে খুঁজে বের করতে হবে। আমাকে অভিযান চালাতে হবে এবং একটা ব্যবস্থা নিতে হবে। যেখানে আমার দলের কে কি সেটা আমি দেখতে চাই না। পরিবারের কে আছে সেটা আমি দেখতে চাই না। কে কত বেশি উচ্চবিত্ত সেটাও দেখতে চাই না। অনিয়ম যেখানে আছে, দুর্নীতি যেখানে আছে। আমাদের দেশকে ফাঁকি দিয়ে কিছু করতে চাচ্ছে, তার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এ অভিযান খুব ঝুঁকিপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমি জানি এটা খুব রিস্কি (ঝুঁকিপূর্ণ), কোনো সন্দেহ নেই। তারা এত বিত্তশালী, এত সম্পদ, আবার তা দেখানোর অসুস্থ প্রতিযোগিতা।
তিনি যোগ করেন, আমি মনে করি, এটা সম্পূর্ণ একটা অসুস্থ মানসিকতা। এ থেকে আমাদের সমাজকে রক্ষা করতে হবে। এটা মুষ্টিমেয় লোক করে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ তো না। কিন্তু এর প্রভাব পড়ছে সাধারণ মানুষের ওপরে, বিভিন্ন পর্যায়ে। সেখান থেকে দেশটাকে রক্ষা করা, দেশের মানুষকে রক্ষা করা, ভবিষ্যত প্রজন্মকে রক্ষা করা। যারা একটা আদর্শ নিয়ে দেশটাকে, এত কষ্ট করে যে দেশটাকে গড়ে দিয়ে যাচ্ছি, সেটাকে তারা সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো মানসিকতা নিয়ে চলবে।
ভিন্ন প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা তিন বছর ধরে চলছে। মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছিলাম। রোহিঙ্গা সমস্যা মিয়ানমারের, এর সমাধানও তাদের করতে হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে সহায়তা ও সাড়া পাচ্ছি। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন অঙ্গন থেকে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। তারপরও তাদের পক্ষ থেকে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।
এরপর প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার সরকারের কি আত্মসম্মানবোধ নেই যে, তাদের দেশের নাগরিক অন্য দেশে শরণার্থী হিসেবে থাকছে! তাদের উচিত তাদের নাগরিকদের যত দ্রুত সম্ভব ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া।
ভিন্ন প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী বিরোধী দল গড়ে উঠতে পারেনি। কারণ দেশে গণতন্ত্র অব্যাহত থাকেনি। জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে দল গঠন করেছেন। এরশাদও একইভাবে দল গঠন করেন। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতাবিরোধীদের রাজনীতি করার সুযোগ দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, অন্য দলগুলো মানুষের আস্থা-বিশ্বাস হারিয়েছে। সেখানে আওয়ামী লীগ মানুষের আস্থা অর্জন করেছে বলেই আমরা বারবার ক্ষমতায় আসতে পেরেছি। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটছে।