প্রকল্পের টাকা নিয়ে ছাত্রলীগ মিথ্যা গল্প বানাচ্ছে : জাবি উপাচার্য

0
634
প্রকল্পের টাকা নিয়ে ছাত্রলীগ মিথ্যা গল্প বানাচ্ছে : জাবি উপাচার্য

খবর৭১ঃ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ মিথ্যা গল্প বানাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও আচার্যকে ঘটনার তদন্ত করবার জন্য অনুরোধও করবেন বলে জানান উপাচার্য। তবে উপাচার্য ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকের দ্বিমুখী মন্তব্যের ফলে উন্নয়ন প্রকল্পের দুর্নীতির বিষয়টি নিয়ে উৎকণ্ঠা দিন দিন বাড়ছে।

শনিবার দুপুরে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন উপাচার্য। এসময় তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ প্রধানমন্ত্রীর কাছে যে খোলা চিঠি লিখেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। টাকা-পয়সা নিয়ে তাদের (ছাত্রলীগের) সঙ্গে আমার কোনো কথা হয়নি। তারা তাদের মতো করে কাজ করে। তারা কার কাছে কমিশন পায় বা পায় না, তা আমি জানি না। এ বিষয়ে তারা আমাকে ইঙ্গিত দিয়েছিলো। তখন টাকা-পয়সা নিয়ে আমার সঙ্গে কোন কথা বলতে নিষেধ করি তাদের।’

তিনি আরো বলেন, ‘ছাত্রলীগের মূল উদ্দেশ্য ছিল যে তারা ঠিকাদারের কাছ থেকে কিছু কমিশন নেবে। তারা এ বিষয়ে আমাকে ইঙ্গিত দিয়েছে। কিন্তু আমার কাছে এসে তারা হতাশ হয়েছে।’প্রধানমন্ত্রী বরাবর ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানীর দেওয়া খোলা চিঠির ব্যাপারে উপাচার্য বলেন, ‘তারা মিথ্যা গল্প ফেঁদেছে। আমি তাদের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলাম। এ বিষয়ে আমি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও মাননীয় আচার্যকে তদন্ত করতে বলব।’

এর আগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের দুই কোটি টাকা ছাত্রলীগের মাঝে ভাগবাটোয়ারার সংবাদটি গণমাধ্যমে আসলে তা দেশ জুড়ে আলোচনার সৃষ্টি হয়। এই আলোচনার প্রেক্ষিতে ও আগের বিভিন্ন অভিযোগ টেনে ছাত্রলীগের কমিটি ভেঙ্গে দিতে বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর নিজেদের ভুল স্বীকার করে প্রধানমন্ত্রী বরাবর খোলা চিঠি দেন ছাত্রলীগে সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী। চিঠিতে রব্বানী উল্লেখ করেন, জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম ঈদুল আযহার আগে শাখা ছাত্রলীগকে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা দিয়েছেন। এছাড়া উপাচার্যের ছেলে তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেকেছিলেন।’

সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতার ফার্মকে কাজ পাইয়ে দেয়ার জন্য সুপারিশ করলেও উপাচার্য কথা রাখেননি বলে দাবি গোলাম রাব্বানীর।

এদিকে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান আন্দোলন নিয়ে কথা বলতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে যান উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। সেখান থেকে ফিরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘সেদিন তারা (শোভন ও রাব্বানী) আমাকে বলে- এত বড় প্রকল্প, আপনি আমাদের সহযোগিতা করেন, আমরাও আপনাকে সহযোগিতা করব।

আপনি কোম্পানিগুলোকে বলে দেন তারা যেন আমাদের কিছু (পার্সেন্ট) টাকা দেয়। আমাদের টাকা দিলে আমরা স্থানীয় (জাবি) ছাত্রলীগকে তা থেকে কিছু দিয়ে দেব। কিন্তু আমি তাদের কথায় রাজি হইনি এবং মুখের ওপরে বলে দিয়েছি আমি কোনো টাকা-পয়সার মধ্যে নেই। তখন তারা আমাকে বলল, আপা (প্রধানমন্ত্রী) আমাদের সব বিশ্ববিদ্যালয় দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়েছেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘তখন তাদের কথায় সাড়া না দেয়ায় তারা আমার সঙ্গে বেশ উচ্চঃস্বরে কথা বলা শুরু করে। এর কিছু সময় পর তারা চলে যায়। তারা প্রকল্পের টাকার দু-এক পার্সেন্ট না, চার কিংবা ছয় পার্সেন্ট দাবি করছে।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here