খবর৭১ঃ রাজধানী ঢাকা থেকে কালিয়াকৈর হাইটেক পার্কের মধ্যে চলাচলকারী ছয় সেট (৬ ইউনিটে ১ সেট) শাটল ট্রেন কেনার প্রকল্পটি বাদ দেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ছিল ৪৫১ কোটি ৭১ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। এ রুটে নতুন করে ডেমু না কিনে অন্য ট্রেন কেনার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার একনেক বৈঠক শেষে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মো. নূরুল আমিন সাংবাদিকদের জানান, এর আগে কেনা ডেমু ট্রেনগুলো যেহেতেু যাত্রীদের উপকারে আসেনি এবং অনেকগুলো নষ্ট হয়ে আছে। তাই নতুন করে এই ট্রেন কেনা হবে না। ডেমুর পরিবর্তে অন্য ট্রেন সংগ্রহের জন্য প্রকল্প সংশোধন করে উপস্থাপন করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। হাইটেক পার্কে যাতায়াতের জন্য ঢাকা থেকে কালিয়াকৈর পর্যন্ত বিরতিহীন ট্রেন চালুরও নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাছাড়া হাইটেক পার্কটিতে খেলাধুলা, বিনোদন এবং শপিংমল তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংরানগরস্থ এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় ৫ হাজার ১৪২ কোটি টাকা ব্যয়ের ৮টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে দুইটি প্রকল্প সংশোধিত। প্রকল্পগুলোর মোট ব্যয়ের মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল (জিওবি) হতে ৪ হাজার ১২৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ হতে ১ হাজার ১২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। পরিকল্পামন্ত্রী এম এ মান্নান দেশের বাইরে থাকায় পরিকল্পনা বিভাগের সচিব বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রকল্পগুলোর বিষয়ে সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
সভায় ২৫৮ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয়ে কক্সবাজার নগরীর হলিডেমোড়-বাজারঘাটা-লালপাড়া (বাসস্ট্যন্ড) প্রধান সড়ক প্রশস্তকরণ শীর্ষক প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদনের সময় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কক্সবাজারে প্রচুর পরিমাণে ঝাউ গাছ লাগাতে হবে। এসব গাছ জলোচ্ছাস থেকে রক্ষা পাবে। কক্সবাজারে বিদেশি পর্যটকদের জন্য আলাদা জোন করতে হবে। এই সৈকত নিয়ে একটি মাস্টারপ্ল্যান করে উন্নয়ন করতে হবে। সভায় অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হল, ৬১ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রামের মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপন প্রকল্প, ৩৪৪ কোটি ৯৩ লাখ টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি-২ এর সহায়ক অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প, ২ হাজার ৬০৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ প্রকল্প, ৫৬০ কোটি ৫৩ লাখ টাকা ব্যয়ে পাবনা-নাটোর-সিরাজগঞ্জ জেলায় ভূ-উপরিস্থ পানির মাধ্যমে সেচ উন্নয়ন প্রকল্প, ২২৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প ২য় পর্যায় (৩য় সংশোধিত) প্রকল্প, ৭৩ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভেটেরিনারি পাবলিক হেলথ সার্ভিস জোরদারকরণ প্রকল্প এবং ১ হাজার ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবস (১ম সংশোধিত) প্রকল্প।
সভায় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে নির্বাচিত ছয়টি উপজেলায় স্টেডিয়াম নির্মাণ প্রকল্প উপস্থাপন করা হলেও সেটি অনুমোদন দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে পরিকল্পনা সচিব জানান, প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে মিনি স্টেডিয়াম তৈরি করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেসব স্টেডিয়াম কোন স্কুল, কলেজ বা মাদ্রাসার মাঠে নয়, আলাদা স্থানে করতে বলেছেন। প্রয়োজনে উপজেলার বাইরে কোন স্থানে স্টেডিয়ামগুলো নির্মাণ করতে হবে। এসব স্টেয়িামের একদিকে গ্যালারি তৈরি করতে হবে। বাকি তিন দিক খোলা রাখতে হবে। আসছে কোরবানি ঈদে গরুসহ অন্যান্য পশুর চামড়া সংগ্রহ যাতে সঠিকভাবে করা হয় সেজন্য কসাইদের প্রশিক্ষণ দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।