খবর৭১ঃ
দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে নিউজিল্যান্ড। ১৯৭৫ সাল থেকে নিয়মিত বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করা কিউইরা ২০১৫ সালের আগে ৬টি আসরের সেমিফাইনাল থেকেই বাদ পড়েছে। অবশেষে ঘরের মাঠে প্রথমবারের মতো ফাইনালের দেখা পায় তারা।
ফাইনালে সহ-স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে প্রথমবারেই বাজিমাতের স্বপ্ন সাঙ্গ হয় নিউজিল্যান্ডের। কিন্তু আবার সুযোগ এসেছে, যোগ্যতাবলে টানা দ্বিতীয় বিশ্বকাপের ফাইনালে এসেছে তারা। কিন্তু এবার আর পা হড়কাবে না কিউইদের, ট্রফি হাতে নিয়েই ফিরবেন কেন উইলিয়ামসনরা—এমনটাই মনে করেন বর্তমান রাগবি বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ডের কোচ স্টিভ হ্যানসেন।
গত বিশ্বকাপের রানার্সআপ, সে হিসেবে এবার নিউজিল্যান্ডকে নিয়ে কিছুটা মাতামাতি অনুমিত ছিল। কিন্তু অবাক করা হলেও সত্যি, ফেবারিট হিসেবে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড এবং ভারতের নামই সবার মুখে মুখে ফিরছিল। তাদের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার নামও বলছিলেন কেউ কেউ। কিউইদের খুব একটা গোনায় ধরছিলেন না বোদ্ধারা। কিন্তু শুরু থেকেই দারুণ ক্রিকেট উপহার দিয়ে নিউজিল্যান্ড পয়েন্ট টেবিলের চূড়ার দিকে অবস্থান করছিল।
গ্রুপ পর্বের শেষের দিকে দু-একটি ম্যাচের ফলে সেমিফাইনাল নিশ্চিত হওয়া নিয়ে কিছুটা শঙ্কা জেগেছিল। শেষ পর্যন্ত নেট রান রেটের দৌড়ে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে সেমিতে জায়গা করে নেয় টেলর-হেনরিরা। তবে সেমিফাইনালে ফেবারিট ভারতকে যেভাবে ধরাশায়ী করেছে কিউইরা, তা ফাইনালের আগে স্নায়ুচাপের মুহূর্তগুলোকে পাশ কাটাতে টনিক হিসেবে কাজ করবে।
গ্রুপ পর্বের খেলায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বিশাল পরাজয়ের মুখ দেখেছিল নিউজিল্যান্ড। ১১৯ রানে হারের সেই দগদগে স্মৃতি ফাইনালের আগে কিছুটা অতিরিক্ত চাপ তৈরি করতে পারে উইলিয়ামসনদের ওপর, কিন্তু বিষয়টিকে পুরোপুরি ভিন্ন আঙ্গিকে দেখছেন নিউজিল্যান্ডের রাগবি কোচ হ্যানসেন। তাঁর মতে, টুর্নামেন্টে একটি দলের বিপক্ষে দুবার খেললে প্রথমবার জয়ী দল ব্যাকফুটে থাকে, ‘প্রথম ম্যাচে যে দল হারে, তারা সুবিধাজনক অবস্থানে থাকে। কারণ, মনস্তাত্ত্বিকভাবে প্রথম ম্যাচে জয়ী দল কিছুটা “অতি” আত্মবিশ্বাসী থাকে। এতে করে অবচেতন মনেই মাঠে কিঞ্চিৎ ঢিলেমি দেওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়।’
নিজের যুক্তিকে আরও শক্তিশালী করতে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড ম্যাচের উদাহরণকে সামনে আনলেন হ্যানসেন, ‘অস্ট্রেলিয়া গ্রুপ পর্বে ইংল্যান্ডকে বাজেভাবে হারিয়েছিল। কিন্তু সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার সেই “অতি” আত্মবিশ্বাসটাই কাল হয়ে দাঁড়ায়।’
আগামীকাল লর্ডসে এবারের ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের মোকাবিলা করবে স্বাগতিক ইংল্যান্ড। এ ক্ষেত্রে স্বাগতিক হিসেবে ইংল্যান্ডের ওপর অতিরিক্ত চাপ থাকবে বলে মনে করেন হ্যানসেন, ‘যেহেতু ইংল্যান্ডের এই দলটির স্বাগতিক হিসেবে এত বড় ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা নেই, তাই নিউজিল্যান্ড সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে। এ ছাড়া প্রত্যাশার চাপটাও ইংল্যান্ডের ওপর বেশি, তাই নিউজিল্যান্ড পুরোপুরি চাপমুক্ত হয়ে খেলতে পারবে। আমি মনে করি, নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপ জয় করতে তৈরি।’