দুবাইয়ের শাসকের স্ত্রী রাজকন্যা হায়া সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে লন্ডনে পালিয়ে গেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
টেলিগ্রাফের খবরে বলা হয়েছে, পালাতে চেষ্টা করার পর রহস্যজনকভাবে ফিরে আসা কন্যাদের ওপর ঘটে যাওয়া হতাশাজনক ঘটনাবলী জানতে পারার পরেই তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তবে গার্ডিয়ানের খবর বলছে, এ ঘটনায় লন্ডনে আইনি লড়াই শুরু হয়েছে। ব্রিটিশ সরকার এতে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জর্ডানের প্রয়াত বাদশাহ হুসেইনের কন্যা হায়া বিনতে আল হুসেইন ব্রিটেনে পড়াশোনা করেছেন। তিনি শেখ মোহাম্মদ বিন রাশিদ আল মাখতুমের ষষ্ঠ স্ত্রী। হায়া প্রথমে জার্মানিতে গিয়ে আশ্রয় চেয়েছিলেন।
কিন্তু পরে বুঝতে পারেন, কেনসিংটন প্যালেস গার্ডেনসের সাড়ে আট কোটি ডলারের বাড়িতেই থাকতে হবে তাকে। বিশ্বের সবচেয়ে দামি বাড়িগুলো এই কেনসিংটন সড়কে অবস্থিত।
এগারো বছর বয়সী রাজকন্যা জলিলা, সাত বছরের জায়েদকে নিয়ে তিনি পালিয়েছেন।
ইতিমধ্যে ৬৯ বছর বয়সী ধনকুবের শেখ মোহাম্মদ ইনস্টাগ্রামে একটি কবিতা পোস্ট করেছেন। এতে অজ্ঞাত এক নারীর প্রতারণা ও বিশ্বাসঘাতকতার যোগসূত্রের কথা বলেছেন।
বিবিসির খবর বলছে, সৎ কন্যা শেখ লতিফার ভাগ্যে যে হতাশাজনক ঘটনা ঘটেছে, তাতে উদ্বেগজনকভাবে সতর্ক ছিলেন শেখ হায়া।
শেখ মোহাম্মদের বিভিন্ন স্ত্রীর গর্ভে জন্ম নেয়া ২৩ সন্তানের একজন হচ্ছেন এই লতিফা। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে আরব আমিরাত থেকে তিনি পালাতে চেষ্টা করেছিলেন।
তাকে সহায়তা করেছিলেন ফ্রান্সের সাবেক এক গোয়েন্দা। একটি ইয়ট ভাড়া করে তিনি পালাচ্ছিলেন।
তার বাবা তাকে নির্যাতন করতেন এবং কারাগারে আটকে রাখতেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।
কিন্তু ভারত মহাসাগরে ইয়ট থেকে আরব আমিরাতের বিশেষ বাহিনী তাকে টেনেহিঁচরে নিয়ে গেছে। পরবর্তী ১০ মাসে তার কোনো হদিস ছিল না। এরপর আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার একটি ছবি প্রকাশ করেছিল।
পাশাপাশি জানানো হয়, তিনি বাড়িতে নিরাপদ ও সুখে আছেন।
এ ঘটনায় নিজের স্বামীকে সমর্থন করে গেছেন ৪৫ বছর বয়সী রাজকুমারী হায়া। কিন্তু নতুন কিছু ঘটনা জানার পর তিনি সন্দেহজনক হয়ে ওঠেন। এছাড়া তার স্বামীর বড় পরিবারের কাছ থেকে ব্যাপক চাপ ও বৈরিতার মুখোমুখি হন শেখ হায়া।
তবে ব্রিটেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটাকে পারিবারিক বিষয় হিসেবেই বিবেচনা করে আসছে।
২০০৪ সালে ধনকুবের শেখ মোহাম্মদকে বিয়ে করেন তিনি। ব্রিটেনের প্রাইভেট স্কুল এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেছেন।
এছাড়াও আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটিতে ছিলেন হায়া। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির শুভেচ্ছা দূত হিসেবেও কাজ করেন এই রাজকন্যা।
বর্তমানে ব্রিটেনের উচ্চ আদালতে তারা আইনি লড়াইয়ে যুক্ত হয়েছেন।