খবর ৭১ঃ
মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুর প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর সৈয়দপুরে ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়া ও গ্যাসের প্রভাবে বোরো ধান ক্ষেতের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়ে সম্প্রতি ক্ষতিপূরণের টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম লোকমান কৃষকদের হাতে ক্ষতিপূরণের টাকা প্রদান করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা বাসুদেব দাস, উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান আশা, কৃষক প্রতিনিধি মো. শফিকুল আলম, মো. আলমগীর হোসেন, মো. আফছার আলী ও মো.আজিজুল ইসলাম প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ৩০ এপ্রিল কামারপুকুর ইউনিয়নের কিসামত কামারপুকুর এলাকায় অবস্থিত একই মালিকের মেসার্স এম জেড এইচ ব্রিকস্ নামের দুইটি ইটভাটা থেকে নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়া ও গ্যাসের প্রভাবে আশপাশের জমির উঠতি বোরো ধান ক্ষেত সম্পূর্ণভাবে পুঁড়ে যায়। ঋণ করে চাষাবাদ করা ক্ষতিগ্রস্থ উঠতি বোরো ধান ক্ষেত দেখে অনেক কৃষক ক্ষেতেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ইটভাটা মালিকের সাথে কথা বললে ইটভাটা মালিক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সাথে সমাধানের কোন কথা না বলে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেস্টা করে। উপরন্ত ইটভাটা মালিকদের দাবি প্রচন্ড খরতাপে কৃষকদের ওই সব বোরো ধান ক্ষেত পুঁড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পরে কৃষকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়া ও গ্যাসে প্রভাবে বিপুল পরিমাণ জমির বোরো ধানের ক্ষেত পুঁড়ে যাওয়ার বিষয়টি দেখতে গত ১ মে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস. এম. গোলাম কিবরিয়া, উপজেলা কৃষি অফিসার মোছা. হোমায়রা মন্ডল, থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শাহ্জাহান পাশাসহ কৃষি বিভাগের সংশ্লিষ্টরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। এ সময় ঘটনাটি তদন্তের জন্য চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। উপজেলা কৃষি বিভাগের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ বাসুদেব দাসের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটিতে ছিলেন উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আসাদুজ্জামান আশা, কামারপুকুর ইউপি’র চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি ও ইউনিয়ন সহকারি ভূমি কর্মকর্তা। গঠিত তদন্ত কমিটি ঘটনাটি তদন্ত করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও জমির পরিমাণ নিরূপন করে একটি প্রতিবেদন ইউএনও বরাবরে জমা দেয়। এ নিয়ে ১ মে জনপ্রিয় অনলাইন পোর্টাল খবর ৭১’সহ বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক এবং সাপ্তাহিক পত্রিকায় সচিত্র খবর প্রকাশিত হয়। এসবের প্রেক্ষিতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অভিযোগে ইউএনও ইটভাটা মালিক মো. হারুন অর রশিদের সাথে আলোচনা করেন। পরবর্তীতে ইটভাটা মালিক মো. হারুণ-অর-রশিদ তাঁর ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসে ও ধোঁয়ার প্রভাবে বোরো ধান ক্ষেতের ক্ষতিপূরণ বাবদ ১০ লাখ টাকা প্রদান করেন। আর কৃষি বিভাগের তালিকা অনুযায়ী ১৭৮ জন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মধ্যে ক্ষতিপূরণের নগদ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।