খবর৭১ঃ সংসদে যোগ দেয়া না দেয়া নিয়ে নিজেদের মধ্যে মতবিরোধ ঘোচাতে বেশ কিছুদিন পর বৈঠক করলেন জাতীয় ঐক্যন্টের শীর্ষ নেতারা। তবে প্রায় দুই ঘণ্টার বৈঠকেও কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি তারা। অনেকটা নিষ্ফল হলো সোমবারের বৈঠক। এদিন বিকালে উত্তরায় জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রবের বাসায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে আ স ম আবদুর রব সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকের বৈঠকে ড. কামাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন না। তার অবর্তমানে আমরা কোনো সিদ্ধান্তে নিতে পারিনি। তাই বৈঠকটি আজকের মতো স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে আবার বৈঠকে বসা হবে।’
কামাল হোসেন ছাড়াও বৈঠকে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাও ছিলেন না। তবে তার দলের প্রতিনিধি হিসেবে নাগরিক ঐক্যের যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. জাহিদুর রহমান, নাগরিক ঐক্যের নেতা মমিনুল ইসলাম বৈঠকে ছিলেন।
জানা গেছে, নিজেদের মধ্যে ঐক্য অটুট রাখা, আগামী দিনে আন্দোলনের কৌশল নির্ধারণের পাশাপাশি কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর আল্টিমেটামের বিষয়টির সুরাহা হওয়ার কথা ছিল বৈঠকে। সংসদ সদস্য হিসেবে ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত সাতজন শপথ নেওয়ায় ঐক্যফ্রন্ট ছাড়ার আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন কাদের সিদ্দিকী। ৮ জুন এই আল্টিমেটামের সময়সীমা শেষ হওয়ার পরও আরও দুই দিন সময় দেন কাদের সিদ্দিকী।
বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বৈঠক হলেও নিজেদের মধ্যে আলোচনা ছাড়া কোনো ধরনের সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি ঐক্যফ্রন্ট।
আ স ম রব বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্ত না করা পর্যন্ত ঐক্যফ্রন্টের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের প্রত্যাশা নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু এখনো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছি। ভবিষ্যতে বৃহৎ ঐক্য গড়ে তোলা হবে।’
এদিকে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম। এরই মধ্যে ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে আমার। আশা করি খুব শিগগিরই আবারও বৈঠকে বসব। ড. কামালের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার পরই আমি আমার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাব। আমি যে আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম সে বিষয়ে অটল আছি।’
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলটির স্থায়ীর কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, দলটির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক বীর হাবিবুর রহমান তালুকদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সাঈদ, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া প্রমুখ।
সুব্রত চৌধুরী বৈঠক নিয়ে বলেন, ‘আজকে আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। তবে সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বর্তমান দুঃশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে একমত। আমরা খুব শিগগিরই আবার বসে নতুন সিদ্ধান্ত নিতে পারবো।’
কাদের সিদ্দিকীর আলটিমেটামের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এই বিষয়েও কথা হয়েছে। সামনে আরও কথা হবে। তবে আজকে যা বলা হয়েছে তার সম্মতিই বলা হয়েছে।’