খবর৭১ঃ
ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে আগামী ৩০ মে-১৪ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে আইসিসি বিশ্বকাপের ১২তম আসর। এবারের বিশ্বকাপ দ্বৈরথে অংশ নিচ্ছে ১০টি দেশ। এই আসরে কোনো দলকেই ছোট করে দেখছেন না ক্রিকেটবোদ্ধারা। বৃহস্পতিবার লন্ডনে অংশগ্রহণকারী দলসমূহের অধিনায়কদের নিয়ে একটি আলোচনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ১০ দেশের প্রতিনিধিত্ব করা অধিনায়কগণ বিশ্বকাপ নিয়ে নিজেদের মত প্রকাশ করেন। পাঠক আসুন দেখে নিই অধিনায়করা বিশ্বকাপ নিয়ে কী ভাবছেন।
মাশরাফি বিন মর্তুজা (বাংলাদেশ)
চারবার বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়া অভিজ্ঞ এই টাইগার অধিনায়ক দলকে নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, ‘খুব সম্ভবত আমাদের এই দলটি এখন পর্যন্ত সেরা দল। আমাদের দলের ভারসাম্য দারুণ। আমাদের কিছু তরুণ ভালো খেলয়োড় রয়েছে। আমরা তাদের নিয়ে অনেক আশাবাদী।’
অ্যারন ফিঞ্চ (অস্ট্রেলিয়া)
সর্বোচ্চ পাঁচবার বিশ্বকাপজয়ী অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়ক অ্যারোন ফিঞ্চ বিশ্বকাপ সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি ভারতের সাথে ইংল্যান্ড গত দুই বছর যাবত ভালো অবস্থানে রয়েছে। তাদের সম্ভাবনাময় অনেক খেলোয়াড় রয়েছে । তাই বলা যায়, এবারের আসরে ইংল্যান্ডই ফেভারিট। আমি মনে করি, স্কোয়াডের কিছু খেলোয়াড়দের বিশ্বকাপ অভিজ্ঞতা থাকাটা আবশ্যক। আমাদের দলে বিশ্বকাপ অভিজ্ঞতা সম্পন্ন খেলোয়াড় থাকায় ম্যাচগুলো আমাদের জন্য সহজ হবে। এই টুর্নামেন্টে একবার গতিহীন হয়ে পড়লে পুনরায় সামাল দেওয়াটা কষ্টসাধ্য ব্যাপার।
ইয়ন মরগ্যান (ইংল্যান্ড)
স্বাগতিক দলের অধিনায়ক ইয়ন মরগ্যান বিশ্বকাপ ফেভারিট সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট মত প্রকাশ করেরনি। তিনি বলেন, ‘এই ব্যাপারে কিছু বলা যাচ্ছে না। কোনো টিমই কারোর চেয়ে কম না। বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী দলসমূহ বিশ্বের সেরা দশটি দল। এটা একটি অসাধারণ প্রতিযোগিতামূলক টুর্নামেন্ট হতে যাচ্ছে। আমি মনে করি বিশ্বকাপে টিকে থাকতে হলে অবশ্যই যোগ্য দল হওয়া লাগে। আমরা সবখেয়াল রেখেই টুর্নোমেন্ট শেষ করতে চেষ্টা করব। ঘরের মাঠে খেলায় আমরা অতিরিক্ত সুবিধা পাব। এখানে আমাদের পরিচিত পরিবেশে স্বাচ্ছন্দ্যে ম্যাচ খেলতে পারব। কিন্তু নিঃসন্দেহে ইংল্যান্ড ক্রিকেটের জন্য সর্বোৎকৃষ্ট জায়গা। প্রত্যেক দেশের খেলোয়াড়ই এখানে ম্যাচ খেলাটাকে বেশি পছন্দ করবে।’
বিরাট কোহলি (ভারত)
মারকুটে অধিনায়ক বিরাট কোহলি এই মেগা ইভেন্ট নিয়ে বলেন, ‘আমি আশাবাদী আমরা বিশ্বের যে প্রান্তেই খেলি না কেন আমোদের সমর্থকের অভাব হবে না। কিন্তু আমি ফিঞ্চের সাথে একমত। আমি মনে করি ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন হওয়ার তাদের সেরা অবস্থানে আছে। আমি মরগ্যানের সাথেও একমত পোষণ করছি। অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকটি দলই ভারসাম্যপূর্ণ এবং শক্তিশালী। আমাদের প্রত্যেকটি দলকেই এমন প্রতিযোগিতামূলক এবং চ্যালিঞ্জিং একটি পরিবেশে খেলতে হবে। আমার চোখে ইতিহাসের সেরা টুর্নামেন্টটি হতে যাচ্ছে।’
সরফরাজ আহমেদ (পাকিস্তান)
মরগ্যান এবং কোহলির সাথে একমত হয়ে পাকিস্তানি অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ বলেন, ‘অংশগ্রহণকারী সকল দলই যথেষ্ট পরিমাণ ভারসাম্যপূর্ণ এবং শক্তিশালী দল। সকল টিমের জন্যই আসার শুভকামনা রইল। আর আমি মনে করি, ক্রিকেটপ্রেমীরা একটা দারুণ টুর্নামেন্ট উপভোগ করতে যাচ্ছে। আমরা যদি অতীত ইতিহাস ঘাটি তাহলে অবশ্যই ১৯৯২ সালের টেস্ট সিরিজ, ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপ কিংবা ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আমাদের সামনে ভেসে উঠবে। ইংল্যান্ডে পাকিস্তান টিমের অবস্থান বরাবরই ভালো। তাই আমরা আত্মবিশ্বাসী। ইনশায়াল্লাহ আমরা ভালো কিছু উপহার দেওয়ার চেষ্টা করব।’
দিমুথ করুণারত্নে (শ্রীলঙ্কা)
বরাবরই আমরা ইংল্যান্ডের মাটিতে ভালো খেলি এবং ইংল্যান্ডে আসাদের ভালো অভিজ্ঞতা রয়েছে। আমরা আমাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে ভালো খেলা চেষ্টা করব। আমরা অবস্থার সাথে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে অন্যদের থেকে আগে ইংল্যান্ড এসেছি। এখন আমাদের দল ভালা একটা অবস্থানে আছে। আমরা আমাদের ভালোটা দেওয়ার চেষ্টা করব।
কেন উইলিয়ামসন (নিউজিল্যান্ড)
গত বিশ্বকাপ খেলা ক’জন ভালো অভিজ্ঞতা সম্পন্ন খেলোয়াড় আমাদের দলে রয়েছে। সেটি আমাদের জন্য আনন্দের সংবাদ। কিন্ত গত চার বছরে আমাদের দলে অনেক নতুন খেলোয়াড়ও যোগ দিয়েছেন। তাদের জন্য খেলাটা চ্যালেঞ্জিং হবে। তাদের মধ্যে বিশ্বকাপ নিয়ে অনেক ধোঁয়াশা রয়েছে। কিন্তু আমার মতে, একটি ভারসাম্যপূর্ণ দল নিয়ে এত বড় একটা আাসরে যেকোনো কিছুই করা সম্ভব। প্রতিটি ম্যাচের ফলাফল নিয়ে ভবিষ্যতবাণী করার কিছু নেই, যেকোনো কিছু ঘটতে পারে।
ফাফ ডু প্লেসিস (দক্ষিণ আফ্রিকা)
দক্ষিণ আফ্রিকার অভিজ্ঞ এই অধিনায়ক বলেন, যদি আন্তর্জাতিক কানো সিরিজ ম্যাচ দেখেন, তাহলে দেখা যাবে স্বাগতিক ও সফরকারী উভয় দলই ভালো করছে। এখানে স্বাগতিক হওয়ার তেমন কোনো অতিরিক্ত সুবিধা নেই বললেই চলে। অংশগ্রহণকারী দল সমূহ শক্তির দিক দিয়ে প্রায় সমান। তাই এটি একটি কঠিন টুর্নামেন্ট হতে যাচ্ছে।
জ্যাসন হোল্ডার (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
এখানে আমরা প্রতিটি দলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারব। এটা দারুণ ব্যাপার। বাছাইপর্বে আমরা কঠিন লড়াইয়ের মাধ্যমে বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছি। তার মানে বিশ্বকাপে সেরা দশটি দল অংশ নিচ্ছে। মাঠে আমরা সেরাটা দিতে চাই। এখানে সহজে কোনো ম্যাচ জেতা যাবে না। যারা জিতবে মনে করতে হবে, তারাই জেতার যোগ্যতা রাখে।
গুলবদিন নাইব (আফগানিস্তান)
আফগানিস্তানে এখন শান্তি আছে। তাতে ক্রিকেটের বিশাল অবদান আছে। আমরা খুবই খুশি। আশা করি, এটা আমাদের ভালো পারফরম্যান্স করতে ভূমিকা রাখবে। এখানে আসতে পেরে আমরা রোমাঞ্চিত। এই দশটি দল বিশ্বের সেরা। আফগানিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে আমরা গর্বিত।