খবর৭১ঃ বিএসটিআইয়ের মানের পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ বিভিন্ন কোম্পানির ৫২টি খাদ্যপণ্য বাজার থেকে সরানোর নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করায় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।
সেই সঙ্গে আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন না করায় কেন তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে।
বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার রুলসহ এ তলবের আদেশ দেন।
শিল্প মন্ত্রণালয় বিএসটিআইয়ের মান পরীক্ষার প্রতিবেদন প্রকাশের পর একটি রিট আবেদনে গত ১২ মে হাইকোর্টের এই বেঞ্চ বাজার থেকে ৫২টি খাদ্যপণ্য দ্রুত অপসারণ করে ধ্বংস করার আদেশ দেন।
পাশাপাশি এসব পণ্য মানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত উৎপাদন বন্ধ রাখতে বলা হয় আদালতের আদেশে।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর এসব নির্দেশ বাস্তবায়ন করে ১০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয় সেদিন।
বিএসটিআইয়ের পরীক্ষায় নিম্নমান প্রমাণ হওয়ায় প্রাণের গুঁড়া হলুদ, কারি পাউডার, লাচ্ছা সেমাইসহ বিভিন্ন কোম্পানি ও ব্র্যান্ডের ৫২টি খাদ্যপণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এসব খাদ্যপণ্য বিক্রি ও সরবরাহে জড়িতদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেয়া হয়।
বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রুলসহ এ আদেশ দেন।
ওই দিন আদালত আদেশে বলেন, শুধু রমজানে ভেজালবিরোধী অভিযান কাম্য নয়, সারা বছর চলা উচিত। খাদ্য নিরাপদ করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যেন শুধু কর্মকর্তা হিসেবে কাজ না করেন, তারা যেন দেশপ্রেমিক হিসেবে জনগণের প্রতি ভালোবাসা দেখিয়ে দায়িত্ব পালন করেন।
৫২টি পণ্য হলো- ১. সিটি অয়েলের সরিষার তেল (তীর), ২. গ্রিন ব্লিচিংয়ের সরিষার তেল (জিনি), ৩. শমনমের সরিষার তেল (পুষ্টি), ৪. বাংলাদেশ এডিবল অয়েলের সরিষার তেল (রূপচাঁদা), ৫. কাশেম ফুডের চিপস (সান), ৬. আররা ফুডের ড্রিংকিং ওয়াটার (আরা), ৭. আল সাফির ড্রিংকিং ওয়াটার (আল সাফি), ৮. মিজানের ড্রিংকিং ওয়াটার, ৯. মর্ন ডিউয়ের ড্রিংকিং ওয়াটার, ১০. ডানকানের ন্যাচারাল মিনারেল ওয়াটার, ১১. আরার ডিউ ড্রিংকিং ওয়াটার, ১২. দীঘির ড্রিংকিং ওয়াটার, ১৩. প্রাণের লাচ্ছা সেমাই, ১৪. ডুডলি নুডুলস, ১৫. শান্ত ফুডের সফট ড্রিংক পাউডার (টেস্টি, তানি, তাসকিয়া), ১৬. জাহাঙ্গীর ফুড সফট ড্রিংক পাউডার, ১৭. ড্যানিশের হলুদের গুঁড়া, ১৮. প্রাণ এগ্রো লিমিটেডের হলুদের গুঁড়া (প্রাণ), ১৯. তানভীর ফুড লিমিটেডের হলুদের গুঁড়া ফ্রেশ, ২০. এসিআইয়ের ধনিয়ার গুঁড়া, ২১. কারি পাউডার (প্রাণ), ২২. কারি পাউডার ড্যানিস, ২৩. বনলতার ঘি, পিওর হাটহাজারী মরিচ গুঁড়া, ২৪. মিষ্টিমেলার লাচ্ছা সেমাই, ২৫. মধুবনের লাচ্ছা সেমাই, ২৬. মিঠাইয়ের লাচ্ছা সেমাই, ২৭. ওয়েল ফুডের লাচ্ছা সেমাই, ২৮. এসিআইয়ের আয়োডিনযুক্ত লবণ, ২৯. কিংয়ের ময়দা, ৩০. রূপসার দই, ৩১. মক্কার চানাচুর, ৩২. মেহেদীর বিস্কুট, ৩৩.বাঘাবাড়ীর স্পেশাল ঘি, ৩৪. নিশিতা ফুডসের সুজি, ৩৫. মধুবনের লাচ্ছা সেমাই, ৩৬. মঞ্জিলের হলুদ গুঁড়া, ৩৭. মধুমতির আয়োডিনযুক্ত লবণ, ৩৮. সান ফুডের হলুদ গুঁড়া, ৩৯. গ্রিন লেনের মধু, ৪০. কিরণের লাচ্ছা সেমাই, ৪১. ডলফিনের মরিচের গুঁড়া, ৪২. ডলফিনের হলুদের গুঁড়া, ৪৩. সূর্যের মরিচের গুঁড়া, ৪৪. জেদ্দার লাচ্ছা সেমাই, ৪৫. অমৃতের লাচ্ছা সেমাই, ৪৭. দাদা সুপারের আয়োডিনযুক্ত লবণ, ৪৮. তিন তীরের আয়োডিনযুক্ত লবণ, ৪৯. মদিনা স্টারশিপ আয়োডিনযুক্ত লবণ, ৫০. তাজ আয়োডিনযুক্ত লবণ, ৫১. নুরের আয়োডিনযুক্ত লবণ ও ৫২. মোল্লা সল্ট।