এবারই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেরা সুযোগ: সাকিব

0
401

খবর ৭১ঃ ইংল্যান্ড ও ওয়েলস বিশ্বকাপের ফেভারিট দলের তকমাটা অনায়াসেই ইয়ন মরগ্যানের ইংল্যান্ড এবং বিরাট কোহলির ভারতের দখলে। কিন্তু তার মানে এই না যে, এটা তাদের শিরোপার নিশ্চিয়তা এনে দিচ্ছে। এমনটাই মনে করেন বাংলাদেশের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তার মতে, ফেভারিট তকমাটা শুধুই কাগুজে, মাঠের খেলাই আসল। বরং তিনি এবার শিরোপার দাবিদার হিসেবে বাংলাদেশের সেরা সম্ভাবনাও দেখছেন।

ইন্দো-এশিয়ান নিউজ সার্ভিস বা আইএএনএস’র সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে সাকিব বলেন, ‘ভারত এবং ইংল্যান্ড অবশ্যই ফেভারিট, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু এটা তাদের শিরোপা এনে দেবে না। বিশ্বকাপ জিততে হলে আপনাকে মাঠে প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে। সাম্প্রতিক সময়ে অস্ট্রেলিয়া ভালো করতে শুরু করেছে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজও ঠিক সময় বেছে নিয়েছে। সত্যি বলতে কি, সব দলকে দেখেই লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত বলে মনে হচ্ছে। এটা নির্ভর করছে সেই দিন কারা ভালো করছে।’

ব্যক্তিগতভাবে সাকিবের জন্য সময়টা বেশ ভালো যাচ্ছে। বিশ্বকাপের ঠিক আগে রশিদ খানকে হটিয়ে ওয়ানডে র‍্যাংকিংয়ে শীর্ষ অলরাউন্ডারের খেতাব ফিরে পেয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশের সেরা ক্রিকেট তারকার লক্ষ্য একটাই, আর তা হলো শিরোপা। কারণ, নিজেকে সেরা প্রমাণ করতে হলে শিরোপা জেতাটাই মুখ্য।

সাকিবের মতে বিশ্বকাপ জেতার দারুণ সুযোগ রয়েছে বাংলাদেশের। বললেন, ‘আমি মনে করি এবার বাংলাদেশের সামনে শিরোপা জেতার সত্যিকারের সুযোগ এসেছে, কিন্তু টুর্নামেন্টের ফরম্যাট মাথায় রেখে বলতে হচ্ছে, আমাদের নিয়মিত ভালো করতে হবে। আমরা তা করতে পারলেই আমরা অবশ্যই নকআউটে নজর দিতে পারব এবং সেখান থেকে এটা এগিয়ে নিতে পারব। আমার বিশ্বাস আমরা এবার ভালো করব।’

কীভাবে বিশ্বকাপ জিতবে তারও ব্যাখ্যা দিলেন সাকিব, ‘ব্যক্তিগতভাবে অবশ্যই আমি চাই, এবার বাংলাদেশ শিরোপা জিতুক। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ করতে অনেকগুলো বিষয় একসঙ্গে ক্লিক করতে হবে। আমি যখন আইপিএলে বেশি ম্যাচ খেলতে পারছিলাম না, আমি আমার খেলায় মনোযোগ দিয়েছি এবং বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুতির দিকেই নজর দিয়েছি। আমি অনুশীলনে নিজের সেরাটা দিয়েছি এবং প্রতিটি অনুশীলন সেশনে নিজের সেরাটা বের করে আনার চেষ্টা করেছি।’

সাম্প্রতিক সময়ে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স অনেকটাই ধারাবাহিক হলেও সাকিবকে ভাবাচ্ছে বাংলাদেশের বোলিং। তবে সাকিবের মতে, অভিজ্ঞতা দিয়েই এ সমস্যা থেকে বের হয়ে আসবে দল।

‘আমি মনে করি আমাদের দলটা বেশ ভালো, তবে বোলিং নিয়ে আমি কিছুটা চিন্তিত, সেটা নতুন এবং পুরনো দুই বলেই। কিন্তু আমি ভরসা রাখতে চাই যে আমরা এই সমস্যা পার হয়ে যাব। আমাদের অভিজ্ঞতা আছে, দলে এমন অনেকে আছে যারা ৩ কিংবা ৪টি বিশ্বকাপে খেলেছে। এটা ভালো কারণ আমরা জানি আমাদের কি করতে হবে। শুরুতেই নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতে হবে। আমি আত্মবিশ্বাসী। নিজেদের দিনে যেকোনো দল জিততে পারে। তবে ধারাবাহিকতাই সবচেয়ে জরুরী,’ জানালেন সাকিব।

বিশ্বের বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি লিগে এখন বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মতো। তাছাড়া এখন বাংলাদেশের নিজস্ব টি-টোয়েন্টি লিগ আছে (বিপিএল)। ফলে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হচ্ছে। সাকিবের মতে এটা খেলোয়াড়দের কোয়ালিটি বাড়াতে এবং দল হিসেবে আরও বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতে সাহায্য করছে।

ইংল্যান্ড ও ওয়েলস বিশ্বকাপের আগে দুর্দান্ত সময় কেটেছে মাশরাফিদের। প্রথমবারের মতো তারা কোনো আন্তর্জাতিক বহুজাতিক সিরিজ জেতার স্বাদ পেয়েছে। আয়ারল্যান্ডের মাটিতে ত্রি-দেশীয় সিরিজে একটি ম্যাচও হারেনি। এটা যে আত্মবিশ্বাসে বাড়তি জ্বালানি জুগিয়েছে তাতে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই।

ইংলিশ কন্ডিশনটা অবশ্য নতুন নয় টাইগারদের জন্য। ইংল্যান্ডের মাটিতেই বিশ্বকাপে প্রথম জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। আর এবার প্রথম শিরোপার স্বপ্ন দেখা হয়ত বাড়াবাড়ি, কিন্তু টাইগারভক্তদের মনোবল এবার অনেক শক্ত। কারণ এবার কোনো গ্রুপ পর্ব নেই। খেলা হবে রাউন্ড রবিন লিগের ভিত্তিতে। অন্তত শেষ চারের স্বপ্ন তাই দেখাই যায়।

রবিন রাউন্ডের আসরে বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচ খেলবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে, ৫ জুন, দ্য ওভালে। শেষ ম্যাচ পাকিস্তানের বিপক্ষে। ম্যাচটি হবে ৫ জুলাই, লর্ডসে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here