খবর৭১ঃ আপসের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ বলেছেন, ‘বেগম জিয়াকে যতদূর জানি বা চিনি, আমার থেকে তাকে বেশি কেউ ঘনিষ্ঠভাবে জানে না। রাজনৈতিক, পারিবারিক সামাজিক আমি যেভাবে সংশ্লিষ্ট ছিলাম এভাবে বিএনপির আর কেউ ছিল না। তিনি কখনও নিজের সুবিধার জন্য কারও সাথে আপস করবেন না।’
বুধবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে ডিওএইচএসের নিজ বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়ার মুক্তির বিনিময়ে বিএনপির এমপিদের সংসদে যাওয়ার একটা কথাবার্তা হচ্ছে। এ বিষয়ে কর্নেল অলি বলেন, ‘যদি এটা সত্য হয়ে থাকে তাহলে আমি মনে করি কেউ ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার জন্য বেগম জিয়াকে ব্লাকমেইল করছে। আমি মনে করি কেউ লোভে বশীভূত হয়ে বেগম জিয়াকে ব্লাকমেইল করছে এবং বিএনপিকে বিপদগামী করছে।’
তিনি বলেন, ‘লোভ ও জাতির সঙ্গে বেইমানি করা কোনো কাজে এলডিপি কখনও সমর্থন করবে না। ১৮ কোটি ভোটারের সঙ্গে বেইমানি করে যদি সংসদে যায় সেটা আমি সমর্থন করবো না। যদি তারা সংসদে যায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে বিএনপি কি ব্যবস্থা নেবে সেটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার।’
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি যেখানে ১৬ কোটি নির্যাতিত হয়েছে জাতি ধর্ম দল নির্বিশেষ, তাদের সেই নির্যাতন তাদের প্রতি যে অত্যাচার অবিচার করা হয়েছে, তাদেরকে অসম্মান করে সংসদে যাওয়াটা মানবিক, সামাজিক, রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে গ্রহণযোগ্য নয়। যে বা যারা যাবে তারা জাতীয় বেইমান হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।’
অলি আহমেদ বলেন, ‘আমরা সবাই আল্লাকে বিশ্বাস করি। আল্লাহকে যারা বিশ্বাস করে না তারা কাফের ও বেঈমান। খালেদা জিয়ার ভাগ্যে যা লেখা আছে তা কেউ খণ্ডাতে পারবে না।’
অলি বলেন, ‘বেগম জিয়া আমার জানা মতে শাস্তিযোগ্য কোনো অপরাধ করেনি। তিনি সরাসরি যে বিষয়গুলোতে তাকে শাস্তি দেয়া হয়েছে তিনি সেগুলোর সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলকভাবে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করার জন্য এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। খালেদা জিয়াকে শাস্তি দেয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন জনকে বাধ্য করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যারা ২০ দলে আছি, আমাদের চেয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের দায়িত্ব শতগুণে বেশি। বিএনপি দেশের সর্ব বৃহত্তম রাজনৈতিক দল। তাদের সমর্থন দেশে ৬০ ভাগের ওপরে। এ অবস্থায় তারা এত অসহায় কেন আমার বোধগম্য নয়। আমি মিটিংয়ে বলেছি ১৬০/৭০ জন সিনিয়র নেতা যদি আন্দোলনের জন্য রাস্তায় নেমে আসে, তাদের পেছনে লাখ লাখ কর্মী থাকবে। আমরা যদি মনে করি- কর্মীরা মাঠে থাকবে, আর আমরা ঘরে থাকবো, তাহলে বেগম জিয়াকে মুক্ত করা সম্ভব হবে না।’
সারা দেশে বিভিন্ন সময় ধর্ষণের ঘটনা উল্লেখ্য করে অলি বলেন, ‘সোনাগাজীতে রেপ হওয়ার কারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ওই মেয়ের মা-বাবাকে ডেকে আর্থিক অনুদান দিয়েছে। আগামীতেও তাদের আর্থিক অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বরে আমি শুনেছি। তাকে এজন্য আমি এলডিপির পক্ষ থেকে দলের সভাপতি ও একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।’
তিনি বলেন, ‘আমার মনের প্রশ্ন তিনি একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অন্যান্য যেসব রেপ হয়েছে, তাদেরকে সুযোগ-সুবিধাগুলি কেন দিল না। এবার যেভাবে রেপিস্টগুলোকে ধরে নিয়ে আসলো, অন্যান্য জায়গায় যে রেপগুলো হয়েছে তারা এখনও কেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। এগুলির বিচার হচ্ছে না। রেপ এর বিচার এদেশে নেই বললেই চলে। এই প্রথমবার দেখলাম সোনাগাজীর ঘটনায় দ্রুত ধরা পড়েছে।’