বিয়ের ২৬ দিনেই বিধবা হলেন স্মৃতি

0
301

খবর৭১ঃগত ২৮ জানুয়ারি ধুমধাম করে মাহবুর রহমান রাজুকে বিয়ে করে আফরুজা সুলতানা স্মৃতি। এরপর একমাসও পেরোয়নি। গত রাতের ভয়াবহ আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয় রাজু ও তার ছোট ভাই মাসুদ রানা।

চকবাজারেই কাপড়ের ব্যবসা করতো রাজু। দেখে শুনেই মেয়েকে রাজুর সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলেন স্মৃতির বাবার আবুল খায়ের। তিনি বলেন, আগুনের খবর মোবাইলে পেয়ে ছুটে আসি। কিন্তু দোকানের কাছেই যেতে পারিনি। পরে শুনেছি ওরা আগুনের ভয়ে দোকানেরর সাটার বন্ধ করে দিয়েছিল। আর বের হতে পারেনি। ওখানেই ওরা…!

পরিবার সুত্রে জানা যায়, রাজুরা তিন ভাই। রানা টেলিকম নামে তাদের দোকান ছিল। সেখানে ফোন-ফ্যাক্সসহ মোবাইল সরঞ্জাম বিক্রি করতেন তারা। ছোট্ট ভাই, বাবা-মাকে নিয়ে পাশের একটা ভবনে থাকতেন তারা।

রাজুর শ্বশুর আবুল খায়ের কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছিলেন, ‘এই ছিল কপালে! কত আয়োজন করে বন্ধু সাহেব উল্লাহর ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস মাস না যেতেই মা (মেয়ে) আমার বিধবা হলো। ওর সামনে আমি কী করে দাঁড়াব।’ আবুল খায়ের বলেন, আগুন লাগার আধাঘণ্টা আগেও রাজুর মা দেখা করে গেছে। বেহাই (রাজুর বাবা) টাকা নিয়ে গেছে।

তিনি বলেন, ‘সরকারের উচিত এসব বিষয় খেয়াল রাখা। যেখানে সেখানে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটবে আর মারা যাবে সাধারণ মানুষ, ক্ষতিগ্রস্ত হব আমরা। সিলিন্ডার ব্যবসা বন্ধ করা উচিত, কড়া নজরদারিতে রাখা উচিত আগুন বোমা।

রানা রাজুর বাবা সাহেব উল্লাহর বন্ধু নিজাম উদ্দিন ঢামেক হাসপাতালের মর্গের সামনে কান্নাকাটি করে বলছিলেন, নিজের ছেলের মতো ওদের ভালোবাসি। কত স্মৃতি ওদের সঙ্গে। পরিশ্রমী ছেলে দুটা এভাবে মারা যাবে ভাবতে পারছি না। বন্ধু আমার ব্যবসা করতো এখন বয়স হয়েছে। রানা রাজুই ছিল উপার্জনক্ষম। ছেলে দুটা মরে যাওয়ায় বন্ধুর বেঁচে থাকার মেরুদণ্ডই ভেঙে গেল।

রাজুর মরদেহের সিরিয়াল ৪০, রানার ১২। মরদেহ নিয়ে গ্রামেরবাড়ি যাব। সেখানেই দাফন হবে।

রাজুদের দোকানের পাশেই একটি ফ্ল্যাটে থাকেন তাহমিনা বেগম। তিনিও খোঁজ নিতে এসে বলেন, নিয়মিত ওদের দোকানে ফ্লেক্সি দিতাম, কেনাকাটা করতাম। আগুনে নিজের বোন তানজিলাও দগ্ধ হন। তবে এখন সুস্থ। বোনকে বাসায় রেখে তাদের দুইভাইকে শেষবারের মতো দেখতে এসেছি।
খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here