বাগেরহাট প্রতিনিধি.
বাগেরহাটের রামপাল উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খাজা মঈনুদ্দিন আখতারকে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন, পারিবারিক ও জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষরা বোমা মেরে হত্যা করেছে বলে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে বলে পুলিশ দাবি করেছে। ওই তিনটি কারনকে গুরুত্ব দিয়ে ইতিমধ্যে পুলিশের একাধিক দল মাঠে কাজ শুরু করেছে। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত রামপাল থানায় কোন মামলা বা জড়িত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
এদিকে, আজ শুক্রবার নিহত বিএনপি নেতা খাজা মঈনুদ্দিনের লাশের ময়না তদন্ত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সম্পন্ন হয়েছে। বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনার পর এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গত বৃহষ্পতিবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে রামপাল উপজেলার ভরসাপুর বাজার এলাকায় একদল সন্ত্রাসী তার উপর বোমা হামলা চালালে বিএনপি নেতা খাজা মঈনুদ্দিন আখতার নিহত হন। খাজা মঈনুদ্দিন আখতার রামপাল উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও উজলকুড় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। তার বাড়ি রামপালের বামুনডহর গ্রামে। নিহতের স্ত্রী চম্পামালা বেগম বলেন, তার স্বামী বিএনপি নেতা খাজা মঈনুদ্দিন আখতারের উপর বোমা হামলার কয়েক মিনিট আগেই তার সাথে ভরসাপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কথা হয়। তাকে বাজার করার সাথে কথা বলে আমি ভ্যানযোগে ফয়লা এলাকায় চলে আসি। এর কিছুক্ষণ পরে ফয়লায় বসে শুনি আমার স্বামীর উপরে কারা হামলা চালিয়েছে। আমার সাথে তার আর দেখা হয়নি। সব ধরনের বিরোধ থেকে নিজে দূরে থাকতেন। তিনি উজলকুড় ইউনিয়ন পরিষদের তিনতিনবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। তার বাবা খাজা সোবাহান আলীও এখানকার চেয়ারম্যান ছিলেন। সামনে হজে¦ যাওয়ার জন্য টাকা জামা দিয়েছিলেন বলেও জানালেন তার স্ত্রী। তাকে যারা হত্যা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।
স্থানীয়রা বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ভরসাপুর বাজার এলাকার কমল মার্কেটের সামনে হঠাৎ বিষ্ফোরণের একটি বিকট শব্দ শুনতে পাই। প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম কোন দোকানে এলপিজি গ্যাসের সিলিন্ডার বিষ্ফোরিত হয়েছে। আমরা ওই শব্দ পেয়ে ছুটে এসে দেখি কমলা মার্কেট এলাকা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে গেছে। কিছুক্ষণ পর ধোঁয়া কমলে দেখি সাবেক চেয়ারম্যান মঈনুদ্দিন রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তার উপরে উপুড় হয়ে পড়ে আছেন। সবাই তাকে রাস্তা থেকে তুলে গাড়ীতে করে খুলনায় পাঠিয়ে দেয়া হয়।
তিনি সাধারণ মানুষের বিপদে আপদে সবার পাশে ছুটে যেতেন। তার এই মৃত্যুতে আমরা বিষ্মিত। তার এমন মৃত্যু মেনে নেওয়া যায়না বলেও জানান তারা। তার হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন তারা।
শুক্রবার দুপুরে ঘটনাস্থল থেকে ফিরে বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় এই প্রতিবেদককে বলেন, বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে রামপাল উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও উজলকুড় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান খাজা মঈনুদ্দিন আখতারের উপর সন্ত্রাসীরা বোমা হামলা চালালে তিনি মারা যান। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খাজা মঈনুদ্দিন আখতারকে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন, পারিবারিক ও জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষরা বোমা মেরে হত্যা করেছে বলে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। ওই তিনটি কারনকে গুরুত্ব দিয়ে ইতিমধ্যে পুলিশের একাধিক দল মাঠে কাজ শুরু করছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে আমরা কাজ করছি। আশা করছি এই তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ খুব শিগগির আসামীদের ধরতে পারবে এবং হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচিত হবে বলে দাবি ওই পুলিশ কর্মকর্তার। থানায় এখনো মামলা হয়নি এবং কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
রামপালে বোমা হামলায় বিএনপি নেতা নিহত
দোষিদের অবিলম্বে গ্রেফতারে দাবীতে
বাগেরহাট জেলা বিএনপির বিবৃতি
বাগেরহাটের রামপাল থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও উজলকুড় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান খাজা মঈনুদ্দিন আখতার সন্ত্রাসীদের বোমা হামলায় নিহতের ঘটনায় দোষিদের খুজে বের করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী জানান জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ। পাশাপাশি শোক সন্তাপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে দলীয় নেতারা বিবৃতি দিয়েছেন। এরা হলেন. বাগেরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি এমএ সালাম, সিনিয়র সহ-সভাপতি এ্যাড. অহিদুজ্জামান দিপু, শেখ নজরুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম গোরা, সমশের আলী মোহন, শেখ এসকেন্দার হোসেন, অজিয়ার রহমান, প্রকৌশলী মাসুদ রানা, ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম, এ্যাড আব্দুল হাই, কাজী খাইরুজ্জামান শিপন, এ্যাড: আসাদুজ্জামান, সরদার লিয়াকত আলী, সাধারন সম্পাদক আলীরেজা বাবু, জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক খাদেম নিয়ামুল নাসির আলাপ, মাহাবুবুর রহমান টুটুল, শেখ শাহেদ আলী রবি, এম এ ওয়াদুদ মুক্তা, খান মতিউর রহমান, রুনা গাজী, এম.হেদায়েত হোসাইন লিটন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাফ্ফর রহমান আলম, সহ-সাংগঠনিক অধ্যাপক হাদিউজ্জামান হিরো, সরদার ওয়াহিদুল ইসলাম পল্টু, সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, বিএনপি নেতা এ্যাড. মাহমুদ মোর্শেদ লালন, শরীফ মোস্তফা জামান লিটু, এ্যাড. আব্দল মান্নান হাওলাদার, আসমা আজাদ, সাইদ নিয়াজ হোসেন শৈবাল, সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, এ্যাড. ফারহানা জাহান নিপা, মেহেবুবুর হক কিশোর, মনিরুজ্জামান মনি, আবুল কালাম আজাদ, মেহেবুবুর হক কিশোর, আয়ুব আরী মোল্লা বাবু, এসএম সাজ্জাত হোসাইন, যুবদলের সাধারন সম্পাদক সুজা উদ্দিন মোল্যা সুজন, সাধারন সম্পাদক আলী দ্বীপ, তাঁতীদলের সাধারন সম্পাদক জিল্লুর রহমান, সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জাহিদুল রহমান শাস্ত, সাধারন সম্পাদক তানু ভুইয়া প্রমুখ