আপনার সন্তানের অবসরকে করে তুলুন ইন্টারেস্টিং

0
803
আপনার সন্তানের অবসরকে করে তুলুন ইন্টারেস্টিং
ছবিঃ সংগৃহীত

খবর৭১ঃ

অবসর সময়কেও করে তোলা যায় ক্রিয়েটিভ! বাচ্চার অবসর সময়কে আরও উপভোগ্য করে তুলবেন কী করে? জেনে নিন।

সপ্তাহের বেশিরভাগ সময়টাই নিশ্চয়ই আপনার বাড়ি-অফিস আর অফিস-বাড়ি করতে করতেই কেটে যায়! আর তার ফাঁকে আপনার ছোট্ট সোনা সারাদিন কী করে, স্কুল থেকে ফিরে কীভাবে কাটায় তার অবসর সময়— এসব দিকে খেয়াল রাখার সময়ই আপনার হয় না! দেখুন, আপনার সন্তানের অবসর বা ফ্রি-টাইম কিন্তু খুব দরকারি একটা জিনিস। পড়াশোনা, নাচ, গান কিংবা আঁকার ক্লাসের ফাঁকে ওই অবসরেই সে একমাত্র নিজের পছন্দ-অপছন্দকে গুরুত্ব দিতে পারে। আর তার এই পছন্দ বা অপছন্দ কী হবে, কোন জিনিসটাকে সে ভাল বলবে, এটা তৈরি করার ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের অবদান কিন্তু সাংঘাতিক। মনে করে দেখুন তো, সেই দিনগুলো যখন ছোটবেলায় মা আপনার হাতে গল্পের বই তুলে দিতেন বা আপনার সঙ্গে সময় কাটাতেন…

নাঃ, দীর্ঘশ্বাস ফেলে লাভ নেই। আপনি হাল আমলের কর্মব্যস্ত মা। কাজের চাপে সারাটা দিন সন্তানের সঙ্গে কাটানোর মতো সময় হয়তো আপনার নেই। কিন্তু আপনার অনুপস্থিতিতেও সন্তান যাতে সুন্দর একটা সময় কাটাতে পারে, তার দায়িত্বও কিন্তু আপনারই। তাই প্রচলিত গল্পের বই পড়া আর টিভি দেখার (সারাদিন আপনার সন্তান টিভির সামনে বসে আছে, এটা কিন্তু একদম কাজের কথা নয়) বাইরে আপনার সন্তানের অন্যরকম অবসরযাপনের গল্প নিয়ে হাজির হলাম আমরা।

আপনার সন্তানের অবসরকে করে তুলুন ইন্টারেস্টিং
ছবিঃ সংগৃহীত
  •  নানা রকম রং নিয়ে খেলা কিন্তু বাচ্চাদের কাছে দারুণ মজার একটা ব্যাপার। তা আঁকার ক্লাসে ওকে ভর্তি তো করবেনই। কিন্তু তার আগে জানুন ও আদৌ আঁকতে কতটা ভালবাসে। ড্রয়িং খাতা আর প্যাস্টেল কালার কিনে দিন। হাত দিয়ে ওয়াটার কালার বা অ্যাক্রিলিক কালার পেন্ট করতে কিন্তু ওদের দারুণ লাগে। তাই ফাঁকা পাতার উপর আপনার সন্তানকে ইচ্ছেমতো হ্যান্ড পেন্ট করতে দিন। দেখুন ওর কল্পনা কোন দিকে ডানা মেলে।
  • যতই খাতা আর রং কিনে দিন, বাচ্চারা কিন্তু দেওয়ালে হিজিবিজি আঁকবেই। ওটা যখন আপনি হাজার বকেও বন্ধ করতে পারবেন না, তখন এক কাজ কিন্তু অনায়াসে করতে পারেন। গোটা বাড়িটা তো নাহয় সাজিয়েই রাখেন, এবার একটা দেওয়াল ওর জন্য একটু ছেড়ে দিন। না বকে ওয়াল পেন্ট করার জন্য ওকে উৎসাহ দিন।
  • রান্না করার সময় কি আপনার সন্তান সবসময় আপনার কাছে ঘুরঘুর করে? হতেই পারে, আপনার রান্না করা  দেখতে ওর ভাল লাগে। হয়তো রান্নাতেও ওর আগ্রহ আছে। তবে ছোট বয়সে ও যাতে আগুনের ধারে না চলে যায়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। সবজি-মশলা সেটা ওকে চেনাতে পারেন। ধরুন আপনি স্যালাড বানানো জন্য সবজি কাটলেন, তারপর সেগুলোকে দিয়ে ওকেই স্যালাড প্লেট সাজাতে বলুন। আর ডিমের খোলা দিয়ে পেঙ্গুইন বা নানা রকম মজাদার জিনিস বানাতেও কিন্তু ওকে উৎসাহ দিতে পারেন।
  • আপনার সন্তানের অবসর যাপনে কিন্তু ইন্টারেস্টিং জিনিসের পাশাপাশি এমন জিনিসও রাখতে হবে, যাতে সে কিছু অন্তত শেখে। সেক্ষেত্রে আপনি কিন্তু ওর সঙ্গে ট্রেজার হান্টে কোমর বেঁধে লেগে পড়তে পারেন। নানা রকম সংকেত বা ক্লু দিয়ে একটা ধাঁধা মতো তৈরি করুন, সারা বাড়িতে ওই ক্লু-গুলো ছড়িয়ে রাখুন। আর ট্রেজার হান্টের শেষে ওর জন্য রাখুন কোনও মজাদার গিফ্টের বন্দোবস্ত। কোনও এক উইকএন্ডে স্বামীর সঙ্গে প্ল্যান করে এটা কিন্তু করে ফেলতেই পারেন। এতে আপনার সন্তানের সঙ্গে মজাদার আর সুন্দর একটা সময় কাটানোও হবে, আর ওকে দিয়ে খানিক বুদ্ধির খেলাও খেলানো যাবে।
আপনার সন্তানের অবসরকে করে তুলুন ইন্টারেস্টিং
ছবিঃ সংগৃহীত
  • সারা সপ্তাহ কাজের চাপে সময় পান না জানি। কিন্তু বাচ্চার সঙ্গে তার অবসর সময় কাটানো, ওর সঙ্গে মন খুলে গল্প করার কিন্তু কোনও বিকল্প হতে পারে না। উইকএন্ডে তাই চুটিয়ে ওর সঙ্গে সময় কাটান। বাড়ির বাগানে বা টবে ও সঙ্গে গার্ডেনিং করতে পারেন। বাগান করায় একবার যদি উৎসাহ পেয়ে যায়, তাহলে ওর থেকে ভাল অবসর বিনোদন কিন্তু আর কিছু হয় না। আর সবাই মিলে কোনও মজার খেলা তো খেলতেই পারেন।
  • কাগজ দিয়ে নৌকো বা এরোপ্লেন তো আমরা ছোটবেলায় সব্বাই বানিয়েছি। আপনার সোনাকেও ওগুলো বানানো শেখাতেই পারেন। আর তার সঙ্গে ইউটিউবে কিন্তু কাগজ নিয়ে খেলা বা নানা রকম অরিগ্যামি শেখা যায়। তাই নৌকোর পাশাপাশি বাচ্চাকে প্রজাপতি বা ফুল ইত্যাদি মজাদার অরিগ্যামি শেখান।
  • কালারড ক্লে দিয়ে নানারকম মডেল বানানোর কথা মনে আছে নিশ্চয়ই? আপনার সন্তানকেও কিন্তু ওগুলো কিনে দিতে পারেন। ইচ্ছেমতো বানাতে-বানাতে ওর কল্পনা শক্তিও বেশ বাড়বে।
  • গল্প শুনতে তো সব ছোট ছেলেমেয়েরাই ভালবাসে। এবার কিন্তু এই গল্প নিয়েই ওর সঙ্গে একটা মজাদার খেলা খেলতে পারেন। গল্পের শুরুর খানিকটা ওকে বলে দিন, তারপর বলুন বাকি গল্পটা ওকেই বানিয়ে আপনাকে বলতে। দেখবেন এতে কিন্তু ওর চিন্তা করার ক্ষমতাই বাড়বে। আর যাই বলুন, সন্তানের সঙ্গে সময় কাটানোর কিন্তু কোনও বিকল্প নেই। তাই ব্যস্ততার মধ্যেও খানিকটা সময় ওকে কিন্তু রোজই নিয়ম করে দিন। ওর অবসরে পাশে থাকুন।
আপনার সন্তানের অবসরকে করে তুলুন ইন্টারেস্টিং
ছবিঃ সংগৃহীত

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here