খবর৭১ঃ
ফোরাম ফর দি স্টাডি অব দি লিভার বাংলাদেশের উদ্যোগে ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতালে দিনব্যাপি অনুষ্ঠিত হয়ে গেল প্রথম এণ্ডোভাস্কুলোকন ২০১৯। বাংলাদেশ তথা বিশ্বে এই ধরনের বৈজ্ঞানিক সম্মেলন এই প্রথম। এতে ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত লিভার বিশেষজ্ঞ, ক্যান্সার বিশেষজ্ঞসহ প্রায় ১৩০ জন চিকিৎসক অংশগ্রহণ করেন। প্রথমবারের মত এন্ডোস্কপি স্যুইট থেকে ই.আর.সি.পি, আর.এফ.এ, ইভিএল এবং ক্যাথ ল্যাব থেকে অটোলোগাস হেমোপয়েটিক স্টেম সেল ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন ও টেইস প্রসিডিউরগুলো সরাসরি দেখানো হয়। উল্লেখ্য প্রতিটি প্রসিডিউরের সময় প্রশ্ন-উত্তর পর্বও সন্নিবেশিত ছিল।
অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল) এর নেতৃত্বে একদল লিভার বিশেষজ্ঞ এতে অংশগ্রহণ করেন। দিনের প্রথমভাগে এক অনাড়ম্বর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এসোসিয়েশন ফর দি স্টাডি অব লিভার ডিজিজেজ বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. সেলিমুর রহমান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিভিশন অব হার্ট ফেইলিউর, রিহ্যাবিলিটেশন এন্ড প্রিভেন্টিভ কার্ডিওলজি এর প্রধান অধ্যাপক ডা. হারিসুল হক, ভাসটেক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিবেন্দু ভট্টাচার্য, ল্যাবএইড গ্রুপের এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর জনাব সাকিফ শামিম। স্বাগত বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের লিভার বিভাগের চেয়ারম্যান এবং ফোরাম ফর দি স্টাডি অব দি লিভার বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল)। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফোরাম ফর দি স্টাডি অব দি লিভার বাংলাদেশের সম্মানিত চেয়ারম্যান শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী।
স্বাগত বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল) বলেন, বাংলাদেশে প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ লিভার রোগে আক্রান্ত। বাংলাদেশের লিভার বিশেষজ্ঞগণ লিভার রোগীদের চিকিৎসায় প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগ করে সফলতা পাচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত কয়েক বছর যাবৎ তার নেতৃত্বে লিভার বিশেষজ্ঞদের একটি টিম সফলতার সাথে অটোলোগাস হেমোপয়েটিক স্টেম সেল ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন, টেইস, আর.এফ.এ, ইভিএল এর মত আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহার করে লিভার রোগীদের চিকিৎসা করে যাচ্ছেন। এই চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো সম্মন্ধে লিভার বিশেষজ্ঞদের স্যশক ধারণা দেওয়ার জন্যই এণ্ডোভাস্কুলোকন ২০১৯-এর আয়োজন। তিনি আশা প্রকাশ করেন এতে অংশগ্রহণকারী সকলেই উপকৃত হবেন। জনাব সাকিফ শামিম বলেন, ল্যাবএইড সবসময় এই ধরনের সম্মেলনে পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছে এবং ভবিষ্যতে তাদের এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। ল্যাবএইড হাসপাতালকে এই সম্মেলনের অংশ হওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান। দিবেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, ভাসটেক এই ধরনের একটি ইউনিক সম্মেলনে সহযোগিতা করতে পেরে আনন্দিত এবং ভবিষ্যতে তারাও এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবেন। অধ্যাপক ডা. হারিসুল হক বলেন, লিভার বিশেষজ্ঞদের নিত্যনতুন চিকিৎসা পদ্ধতির ব্যবহার লিভার রোগীদের জন্য আরও কল্যানকর হবে।
তিনি এই ধরনের একটি সম্মেলন অনুষ্ঠানের জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। অধ্যাপক ডা. সেলিমুর রহমান বলেন, তিনি আজ খুবই গর্বিত ও আনন্দিত যে প্রথাগত চিকিৎসার পাশাপাশি গবেষণাও মনোনিবেশ করেছে এবং লিভার রোগীদের চিকিৎসায় নতুন নতুন পদ্ধতির সংযোজন করছে। বিশেষ করে লাইভ প্রসিডিউর সম্মেলন এর উদ্যেগ একটি নতুন মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, তিনি খুবই আনন্দিত যে তারই বিশ্ববিদ্যালয়ের লিভার বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক স্বপ্নীলের নেতৃত্বে আজকে লিভার রোগের চিকিৎসায় অনেক অগ্রগতি হয়েছে। তিনি সম্মেলনের আয়োজকসহ সকল বৈজ্ঞানিক পৃষ্ঠপোষক, বিশেষ করে ল্যাবএইড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তাদের সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান। সভাপতির বক্তব্যে শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী বলেন, লিভার এর দুরারোগ্য রোগ অনেক, এর চিকিৎসাও অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তিনি রোগীদের চিকিৎসার পাশাপাশি এই রোগ সম্মন্ধে সকলের মাঝে সচেতনতা তৈরির উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন।